এই প্রথম ছবি প্রযোজনায় সোহম চক্রবর্তী। ‘আমার আপনজন’। রাজনৈতিক জীবন থেকে বেরিয়ে এটা তাঁর দ্বিতীয় ইনিংস?
প্র: প্রত্যাবর্তনের তোড়জো়ড় করছেন...
উ: ঠিক প্রত্যাবর্তন বলব না। মাঝের একটা বছর সিনেমা থেকে একেবারে দূরে সরে গিয়েছিলাম। এখন আবার কাজ শুরু করেছি।
প্র: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আপনাকে নিজের ডায়েট চার্ট দিয়েছেন। সেটা নাকি মানছেন না?
উ: এটা নিশ্চয়ই বুম্বামামু বলেছে! চার্ট মেনেছি। তাতে উপকারও পেয়েছি। অনেকটা ওজন কমিয়ে ফেলেছি।
প্র: হাতে বেশ কয়েকটা ছবি। এবার কি রাজনীতিতে কম সময় দেবেন?
উ: পুরোদস্তুর রাজনীতি এই মুহূর্তে করব না। তবে কিছু দায়িত্ব তো আছে। সেটা করে যাব। ছবির কাজে আরও বেশি করে মন দেব।
প্র: রাজনীতি করতে গিয়ে কি কেরিয়ারের ক্ষতি হল?
উ: সেটা হয়তো হয়েছে। ছ’টা ছবি ছেড়েছিলাম। যাঁরা প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাঁদের বলেছিলাম অপেক্ষা করতে। অনেকে রাজি হয়েছিলেন। অনেকে পারেননি। আমি তাতে খারাপ কিছু দেখি না। কত দিনই বা কেউ আমার জন্য বসে থাকবেন? আসলে, তখন অন্য একটা দিক খুলে গিয়েছিল। রাজনীতির জগৎটা চিনছিলাম। বুঝছিলাম। দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন। আমাকে সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে হত। তবে রাজনীতিটাও উপভোগ করেছি।
প্র: এখন প্রায়োরিটি কোনটা?
উ: আমার সব পরিচিতি সিনেমার জন্য। রাজনীতিতেও পরিচিতি হয়েছে অভিনেতা হিসেবেই। তাই এই দিকটা কোনও দিন ছাড়তে পারব না। রাজনীতিতে আসার আগেও আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছি।
প্র: ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়ররা বলছেন, আপনি আরও পরে রাজনীতিতে আসতে পারতেন...
উ: আমি আসলে এই দিকটাও পরখ করতে চাইছিলাম। দায়িত্বগুলো ভাল লাগছে। তবে বেশি কিছু করতে হয় না, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই আসল দায়িত্বটা সামলে দেন।
প্র: আপনার পরে এসেও অনেকে এগিয়ে গেল। দেব, অঙ্কুশরা বছরে তিন-চারটে করে ছবি করেন।
উ: আমি রাজনীতিতে না এলে হয়তো আমারও বছরে অনেকগুলো করে ছবি থাকত। কিন্তু রাজনীতির দিকটাও তো বড় অ্যাচিভমেন্ট। এখন অবশ্য হাতে অনেক ছবি। বুম্বাদার সঙ্গে তিনটে ছবি। তারপর এস কে মুভিজের সঙ্গে কাজ করছি। ‘আমার আপনজন’ তো রয়েছেই।
প্র: আগেও যে খুব বেশি ছবি করছিলেন এমন নয়। আপনারই এক সিনিয়র মন্তব্য করেছেন, ‘সোহমকে কেউ কাজ দিচ্ছিল না’। এটা কীভাবে দেখেন?
উ: বছরে একটা ভাল ছবি কিন্তু আমি করেছি। হয়তো অন্যদের মতো তিন-চারটে করে করিনি। কেউ কাজ না দিলে তো আমার কিছু করার নেই। নিজে থেকে কাজ চাইতে পারব না। তবে দর্শকের আশীর্বাদে হাতে অনেকগুলো ছবি আছে।
প্র: প্রযোজনায় এলেন কেন?
উ: নতুন কিছু করতে চাইছিলাম। পরপর ছবি করে গেলে মাংস-ভাত হয়তো জুটে যেত, ভবিষ্যৎ সিকিওর করার জন্য বড় কিছু করার প্রয়োজন ছিল। তাই প্রযোজনায় এলাম। অন্য কোনও ব্যবসার খুঁটিনাটি তো জানি না।
প্র: বাংলা ছবির প্রযোজনা মানেই তো ঝুঁকি...
উ: সেটা হয়তো ঠিক। কিন্তু আমরাই যদি রিস্ক না নিই, তা হলে কী করে হবে! ৩-৪ কোটি টাকার ছবি করব না। দেড় কোটির মধ্যে বাজেট রাখার চেষ্টা করব। যেটা অন্তত বক্স অফিস থেকে উঠে আসতে পারে।
প্র: বলা হচ্ছে, পছন্দমতো ছবির প্রস্তাব না পাওয়ার জন্য নিজেই প্রযোজনা করে অভিনয় করছেন।
উ: সে তো লোকে কত কিছু বলে। শাহরুখ খান, আমির খান কি কাজ পাচ্ছেন না বলে নিজেরা ছবি প্রযোজনা করে অভিনয় করছেন? তা তো নয়। এগুলো গায়ে মাখি না। তবে এই সমালোচনাগুলো বরং আমাকে উদ্ধুদ্ধ করে। যখন সোহম নইনি, তখন এগুলোই আমাকে ভাল কাজ করার জন্য মোটিভেট করতো।
প্র: ‘আমার আপনজন’ দক্ষিণী রিমেক। প্রথম প্রযোজনায় মৌলিক গল্প বাছতে পারতেন তো।
উ: আমি কিন্তু ই়়ডলি-দোসা বানাচ্ছি না। গল্পটা ওদের হতে পারে, সেটাকে বাঙালির ডাল-ভাতের মতো করে রান্না করে নিয়েছি।
প্র: ছবির রিলিজ পিছিয়ে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার ‘পোস্ত’-র সঙ্গে করার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
উ: প্রথমে পয়লা বৈশাখ ঠিক ছিল। কিন্তু নানা চাপে প্রচারের কাজটা ঠিক মতো শুরু করতে পারলাম না। তাই পিছোতে হল। ‘পোস্ত’ আর আমাদের কনটেন্ট একেবারেই আলাদা। মনে হয় না সমস্যা হবে।