‘আমি খেটে তৈরি হওয়া অভিনেতা’

কেরিয়ারের তিন দশক পেরিয়ে নিজের সম্পর্কে এটাই বললেন প্রসেনজিৎকেরিয়ারের তিন দশক পেরিয়ে নিজের সম্পর্কে এটাই বললেন প্রসেনজিৎ

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
Share:

প্রসেনজিৎ

প্র: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরপর তিনটে ছবি! কী ভাবে এই বন্ডিং গড়ে উঠল?

Advertisement

উ: একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যেখানে আমি আর কৌশিক দু’টি আলাদা ছবির জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলাম, সেখানে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কৌশিকের সামনেই বলেছিলাম, ‘এই ভদ্রলোক তো মনে করেন, আমাকে নিয়ে ছবি করা যায় না!’ এর আগেও বেড়াতে গিয়ে বা কোনও ফেস্টিভ্যালে... যেখানেই ওর সঙ্গে দেখা হয়েছে, আমি এটা বলে মজা করতাম। কৌশিক বলত, ‘ঋতুদা, সৃজিত তোমাকে নিয়ে দারুণ সব ছবি করেছে। সেই ধারা বজায় রেখে এমন ছবি করতে হবে, যেখানে ছবি ও তোমার চরিত্রের মাত্রা বজায় থাকে।’ কৌশিকের সঙ্গে প্রথম ছবি ‘দৃষ্টিকোণ’। এমনকি ‘দৃষ্টিকোণ’-এর আগেই ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’-এর গল্প শুনিয়েছিল ও। খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ কৌশিক। নিজেও ভাল অভিনেতা। এক জন অভিজ্ঞ অভিনেতা হিসেবে আমি চেষ্টা করি, যার যেটা ভাল গুণ সেটা আত্তীকরণ করতে।

প্র: আপনাকে কাস্ট করতে গিয়ে গ্ল্যামারের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন কৌশিক?

Advertisement

উ: যখন ‘রাম লক্ষ্মণ’-এর মতো ছবি করেছি, তখন ‘চোখের বালি’ও করেছি। আমি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের তিনটে ছবি করেছি। গৌতম ঘোষ যখন ‘মনের মানুষ’ করলেন, তার আগে কেউ ভাবতে পারেনি আমি লালন ফকিরের চরিত্র করতে পারব! এই প্রজন্মের পরিচালকেরা একটা কথা বুঝে গিয়েছেন, প্রসেনজিৎ পূর্ণ অভিনেতা। যাকে যে কোনও ভাবে ভাঙাচোরা করা যেতে পারে। শুধু গ্ল্যামার কোশেন্ট দিয়ে চরিত্র করা যায় না। ছবি বিশেষে গল্প বলার মোড়কটা পাল্টায়। ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’-এ আমার চরিত্রের ব্যাকগ্রাউন্ডে গ্ল্যামার রয়েছে। তবে সেটা গল্পের খাতিরে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্র: ঋত্বিক চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রথম বার স্ক্রিন শেয়ার করা অভিনেতা প্রসেনজিৎকে কোথাও ভাবিয়েছে?

উ: ঋত্বিকের মতো অভিনেতা বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে আছে বলে আমরা গর্বিত। আমার মতে, দেশের প্রথম ২০-২৫ জন বড় অভিনেতার মধ্যে ও একজন। এটা যেমন ঠিক, তেমন এটাও ঠিক একটা সময়ের পর থেকে দর্শক পর্দায় প্রসেনজিৎ-ঋত্বিককে দেখবেন না। দেখবেন দাদা-ভাইকে। আমাদের একসঙ্গে আনার জন্য হয়তো এই ছবিরই অপেক্ষা ছিল। দুটোই অসামান্য চরিত্র। আর অভিনেতা হিসেবে প্রসেনজিতের চেয়ে অনেক অনেক উপরে ঋত্বিক-সুদীপ্তা। ওরা জাত অভিনেতা। আর আমি খেটে তৈরি হওয়া। কিন্তু খেলার মাঠে যখন নেমেছি, তখন প্রত্যেকটা বলে যেন ওরা আমার মাথা না ভাঙতে পারে, সে ভাবে ব্যাট চালাতে হয়েছে (হাসি)। এমনিতে ঋত্বিকও আমাকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে না। আমিও না। তবে এই ছবির জন্য আমাদের লড়াইটা স্ট্রং। কারণ পরিচালক এই দায়িত্ব দিয়েছে আমাদের। কিছু ভেবে নিশ্চয়ই দিয়েছে।

প্র: এই ছবিতে কনিষ্ঠ পুত্রের চরিত্রটা করার কথা কখনও ভেবেছিলেন?

উ: আজ থেকে দশ বছর আগে ভাবলেও (কিছুক্ষণ সময় নিয়ে) ওই চরিত্রে বোধহয় প্রসেনজিৎ ফিট করে না। সেটা আমার বয়সের জন্য নয়। আর আমি যদি ছোট ভাই হই, তবে বড় ভাইটা কে? সেই বড় ভাই খোঁজাও খুব কঠিন কাজ হতো। যার সামনে আমাকে খুব সাধারণ দেখতে লাগবে। তাই আমার চরিত্রে যে ম্যাজিক এলিমেন্ট রয়েছে, সেটারও প্রয়োজন ছিল।

প্র: আপনার হাউস থেকে মিমি চক্রবর্তীর কেরিয়ার শুরু। ওঁর নতুন সফরে কিছু উপদেশ দিয়েছেন?

উ: মাসে ৩০ দিনের মধ্যে ২০ দিন মিমির সঙ্গে দেখা হয়। আমরা একসঙ্গে জিম করি। মিমি ও নুসরত দু’জনকেই বলেছি, বেশি করে জল খেতে। এখন ওদের এনার্জি খুব দরকার। বলেছি, ট্রেনারের কথা না শুনে ভাল করে খাওয়াদাওয়া করতে। এই পর্ব মিটলে যেন ওরা ডায়েট শুরু করে (হাসি)!

প্র: আপনার সাম্প্রতিক ছবি দেখে মিশুক মতামত দেয়?

উ: ওর বয়স এখন ১৪ বছর। পাঁচ-ছ’বছর আগেও যখন ‘মনের মানুষ’ হলে চলছিল, মিশুক এসে ওর মাকে বলেছিল, ‘বাবার ছবির জন্য হলে লাইনে পড়েছে।’ ওর মা বলেছিল, ‘তোমার বাবার এমন আরও অনেক ছবির জন্য লাইন পড়েছে বলেই তুমি এত বড় বাড়িতে থাকো।’ কাকাবাবু ওর খুব ফেভারিট। কারণ ও নিজেকে সন্তুর সঙ্গে খুব রিলেট করে। আমার সিরিয়াস ছবি ও এখন দেখে। আর ভ্যালুটাও বুঝতে পারে।

ছবি: দেবর্ষি সরকার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন