‘উর্দু শব্দ দিলেই সুফি গান হয় না’

অনেক দিন পরে রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারক হিসেবে ছোট পর্দায় ফিরেছেন আদনান সামি। আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি তিনি অনেক দিন পরে রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারক হিসেবে ছোট পর্দায় ফিরেছেন আদনান সামি। আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি তিনি

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৯
Share:

প্র: আক্ষরিক অর্থে আপনিই #টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। কতটা বদলেছে জীবন?

Advertisement

উ: শেষ দশ বছরে আমার জীবন যতটা নাটকীয়, ততটাই ঘটনাবহুল। মেদ ঝরিয়ে আমি অনেকটাই রোগা এখন। বিয়ে করেছি, ফুটফুটে সুন্দর মেয়ে (মদিনা) হয়েছে। ভারতীয় নাগরিক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সব মিলিয়ে এই চ্যালেঞ্জ আমার কাছে খুবই পজ়িটিভ।

প্র: ইদানীং আপনার গান এত কম শোনা যায় কেন?

Advertisement

উ: আগেও কিন্তু বেশি গাইতাম না। আমি বরাবরই সিলেক্টিভ। আমার সিঙ্গলগুলোর মধ্যেও কম করে দু’-তিন বছরের ব্যবধান থাকত। আর শেষ কয়েক বছরে ব্যক্তিজীবন নিয়ে খুব ব্যস্ত ছিলাম। নাগরিকত্ব বদলানোর প্রক্রিয়াও সময়সাপেক্ষ। বলিউডেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। সিনেমায় গানের সংখ্যা কমেছে। গান থাকলেও সব সময়ে লিপ সিঙ্ক থাকে না। ‘দ্য ভয়েস’ দিয়ে নতুন ভাবে শুরু করছি।

প্র:পঞ্জাবি র‌্যাপের দাপটে ইন্ডিপেন্ডেট মিউজ়িকের জনপ্রিয়তাও কি নিম্নমুখী?

উ: প্রতি দশ-বারো বছরেই ইন্ডাস্ট্রিতে বড়সড় পরিবর্তন আসে। শুধু ভারতে নয়, পশ্চিমেও। পঞ্জাবি র‌্যাপের দাপট অনেকের মতে সাময়িক। আমার মতে, এটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। তবে দেশ-কাল ভেদে মেলোডির আবেদন চিরন্তন।

প্র: ভারতীয় হওয়ার জন্য এখনও তো পাকিস্তানের মিডিয়া আপনাকে ট্রোল করে...

উ: আমি ওদের ক্ষমা করে দিই (হাসি)। ট্রোল করার জন্য একটা অজুহাত চাই। আগে আমি মোটা ছিলাম। সেটা নিয়ে ট্রোল হতো।

প্র: তবে আপনার কি মনে হয় আপনার শিকড় পাকিস্তানে?

উ: ভৌগোলিক পরিভাষায় বললে আমার শিকড় আফগানিস্তানে। আমার পূর্বপুরুষরা হেরাতের। তবে সব কিছুই তো ভারত উপমহাদেশকে ঘিরে। ১৯৪৭-এর আগে পাকিস্তানও তো ছিল না! আমার প্রকৃত ভক্তরা কোনও দেশের গণ্ডিতে আমাকে বেঁধে রাখবেন না। মিউজ়িকের কোনও দেশ হয় না।

প্র: আপনার পরে পাকিস্তানের অনেক শিল্পীই বলিউডে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে আতিফ আসলামের গায়কি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে...

উ: আমার বাবা বলতেন, ‘কাউকে পছন্দ হলে পছন্দের একশোটা কারণ খুঁজে পাবে। একই ব্যক্তি অপছন্দের হলে, তারও একশোটা কারণ পাওয়া যাবে।’ যাঁরা রফিসাবের গান পছন্দ করেন, তাঁরা কিশোরসাবের গান ভালবাসেন না। আতিফের গান কারও ভাল না-ই লাগতে পারে। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়া কেউ এত জনপ্রিয় হয় না! এই বিষয়গুলোকে এত গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়।

প্র: বাংলা গানের সঙ্গে আপনার পরিচয় কতটা?

উ: বাবাই প্রথম আমাকে বাংলা গানের সঙ্গে পরিচয় করান। আমি আর ডি বর্মণ ও এস ডি বর্মণের বিরাট ভক্ত। যখন ছোট ছিলাম, তখন আর ডি ও এস ডির মধ্যে ফারাক বুঝতাম না। তবে ছবির ক্রেডিটে ‘বর্মণ’ পদবিটা খুঁজতাম। ওঁদের বাংলা গানও আমি শুনতাম। ‘মেরি ভিগি ভিগি সি’র বাংলা ভার্সন আমার বেশি ভাল লাগে।

প্র: বলিউড কি সুফি সঙ্গীতকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পেরেছে?

উ: বলিউডে একটা ফর্মুলা হিট হলেই বাকিরাও সেটা চালাতে চায়। মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রিও তার বাইরে নয়। ‘সুভানআল্লাহ’, ‘মাশাআল্লাহ’র মতো উর্দু শব্দ ঢুকিয়ে দিলেই সুফি গান হয় না। লোকে বোঝে না, সুফি এক ধরনের জীবনদর্শন। সুফি গান লিখতে বা গাইতে গেলে আত্মার সার্বিক উত্তরণ প্রয়োজন। তবে ভাল কাজও কিছু হচ্ছে।

প্র: নতুন শিল্পীদের মধ্যে আপনার পছন্দের কারা?

উ: অরিজিৎ সিংহ ভাল কাজ করছে। আরমান মালিককেও ভাল লাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন