Entertainment News

কখনও কখনও অমিতাভের থেকেও বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছেন

সে সময় কাপড় ও কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন পেশোয়ারের কিষাণচাঁদ খন্না। ঘরদোর সামলাতেই সময় কেটে যেত স্ত্রী কমলার। তিন মেয়ের সংসারে ১৯৪৬-এর ৬ অক্টোবর ছেলে বিনোদের জন্ম হয়। তার কয়েক মাসের মধ্যেই রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। দেশভাগ, ভারত স্বাধীন হল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ১৬:০৭
Share:

সে সময় কাপড় ও কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন পেশোয়ারের কিষাণচাঁদ খন্না। ঘরদোর সামলাতেই সময় কেটে যেত স্ত্রী কমলার। তিন মেয়ের সংসারে ১৯৪৬-এর ৬ অক্টোবর ছেলে বিনোদের জন্ম হয়। তার কয়েক মাসের মধ্যেই রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। দেশভাগ, ভারত স্বাধীন হল। পেশোয়ার থেকে কিষাণচাঁদ সপরিবার মুম্বই এলেন। দিনভর ব্যস্ত এই শহরের সঙ্গে যে তাঁর কয়েক মাসের ছেলে একসময় ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে যাবে তা কল্পনাও করেননি সাধারণ ব্যবসায়ী কিষাণ।

Advertisement

আরও পড়ুন, প্রয়াত অভিনেতা বিনোদ খন্না

দেখতে দেখতে বিনোদের স্কুলের পড়া শেষ। মুম্বইয়ের সিডেনহাম কলেজে কর্মাস নিয়ে ভর্তি হলেন। কিন্তু তত দিনে সিনেমার পোকাটা মাথায় ঢুকে গিয়েছে বিলক্ষণ। কারণ বোর্ডিংয়ে থাকতেই লুকিয়ে দেখেছেন ‘মুঘল এ আজম।’ সেই তখন থেকেই সিলভার স্ক্রিনের প্রেমে পড়েন সুদর্শন যুবকটি।

Advertisement

১৯৬৮। ‘মন কা মিত’ দিয়ে বলিউডে যাত্রা শুরু বিনোদের। শুরুর দিকে হয় সহ-অভিনেতা নতুবা ভিলেনের চরিত্র দেওয়া হত তাঁকে। ১৯৭১। লিড হিরো হিসেবে প্রথম ব্রেক। ‘হাম তুম অর উও।’ আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কখনও যোগিতা বালি, কখনও রেখা, কখনও শাবানা আজমি, কখনও ডিম্পল কপাডিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক বক্স অফিস হিট দিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিকে। সুদর্শন অভিনেতা, ম্যাটিনি আইডল বিনোদ অ্যাকশন রোলেও ছিলেন দুর্দান্ত। আশির দশকের বহু মহিলার ফ্যান্টাসি ছিলেন তিনি। ১৯৭৪ থেকে ’৮২-র মধ্যে কখনও জিতেন্দ্র, কখনও বা অমিতাভ বচ্চনের থেকেও বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছেন তিনি। কিন্তু ১৯৮২ থেকে ’৮৬ আধ্যাত্মিকতায় আকৃষ্ট হয়ে পড়ায় অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন, বিনোদ খন্নার প্রয়াণে টুইটারে শোকবার্তা জানাল বলিউড

অভিনয়ের বাইরে অন্য ইনিংসেও রান করেছেন বিনোদ। ১৯৯৭-এ তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। পঞ্জাবের গুরুদাসপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ ছিলেন তিনি। তবে রাজনৈতিক কেরিয়ারের সাফল্য কখনওই তাঁর ফিল্মি কেরিয়ারকে ছুঁতে পারেনি। দীর্ঘ কেরিয়ারে প্রায় ১৪১টি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘মুকাদ্দর কা সিকান্দর’, ‘হেরা ফেরি’, ‘দাবাং’, ‘দিলওয়ালে’র মতো ছবি সমৃদ্ধ হয়েছিল তাঁর অভিনয়ে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই ছবি।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটি ছবি। দাবি করা হয়, সেটি নাকি অসুস্থ বিনোদের ছবি। যদিও তাঁর পরিবার সূত্রে এ নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। বলি মহলের একটা সূত্রের খবর, ইউরিনারি ব্লাডার ক্যানসারে ভুগছিলেন বিনোদ। মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন গত ৩১ মার্চ থেকে। সেখান থেকেই কোনও ভাবে নিরাপত্তার ফাঁক গলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল অসুস্থ অভিনেতার ছবি। যদিও সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে আগে বিনোদের ছেলে রাহুল খন্না জানিয়েছিলেন, বিনোদ খন্না গত ৩১ মার্চ থেকে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ দিন সকালে আসে বিনোদের মৃত্যুর খবর।

আরও পড়ুন, ইনি কি বিনোদ খন্না? সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই ছবি

হাসপাতাল সূত্রে এক লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা ২০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বিনোদ খন্না। ইউরিনারি ব্লাডারে অত্যধিক সংক্রমণের জন্য তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’ তিন ছেলে রাহুল, অক্ষয়, সাক্ষী ও এক মেয়ে শ্রদ্ধা এবং স্ত্রী কবিতা খন্নাকে রেখে গেলেন বিনোদ। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বলিউডে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement