Ananya Chatterjee

Swastika Mukherjee Birthday: স্বস্তিকাকে কখনও ঈর্ষা করিনি, তবে ওর আত্মবিশ্বাস ঈর্ষণীয়: জন্মদিনে ‘বন্ধু’ অনন্যা

পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে কে বা কারা নাকি আগেভাগেই সাবধান করে দিয়েছিলেন এই বলে যে আমাদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে, আমাদের সামলাতে সামলাতেই ওঁর নাকি দিন কেটে যাবে।

Advertisement

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২৮
Share:

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এবং অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়?...ওরে বাবা!

Advertisement

ঠিক এই ধরনের মন্তব্য প্রায়ই নাকি শোনা যায় টলিউডের অন্দরে কান পাতলে। কেন কে জানে! আমি যদিও অবাক হই না। কারণ, এই এক কথা আমার সম্বন্ধেও নাকি লোকে বলে, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়...ওরে বাবা!

ঘটনাচক্রে দুই ‘ওরে বাবা’, এক ছাদের নীচে এসভিএফের প্রযোজনায় ‘মোহমায়া’ সিরিজে কাজ করেছে। এবং কাজ করতে গিয়ে আমি অন্তত স্বস্তিকার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পাইনি! যদিও পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে কে বা কারা নাকি আগেভাগেই সাবধান করে দিয়েছিলেন এই বলে যে আমাদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে, আমাদের সামলাতে সামলাতেই ওঁর নাকি দিন কেটে যাবে। জানি না, কমলদা এই কথায় সহমত হবেন কিনা। আমি কিন্তু স্বস্তিকার বন্ধুত্বপূর্ণ রূপটাই শ্যুটের প্রথম দিন থেকে দেখেছি। সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করা। শ্যুটের অবসরে ছোট্ট ছোট্ট আড্ডা। আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আসা বয়সে অনেকটাই ছোট বিপুল পাত্রকে আপন করে নেওয়া। অভিনয় নিয়ে বিপুলকে পরামর্শ দেওয়া, এক জন ভাল অভিনেত্রী যা যা করেন সবটাই তো করেছে স্বস্তিকা! শুধু কী আড্ডা? মনে পড়ে শ্যুটের সময় দুপুরে তারিয়ে তারিয়ে বিরিয়ানি খেতে। জন্মদিনে ও বিরিয়ানি খাবে? জানি না। এই পদ ওর যে কী প্রিয়! তার পরেও এত আকর্ষণীয় চেহারা! সেই সৌন্দর্য আরও খোলে যখন ও শাড়িতে সেজে ওঠে।

Advertisement

মোহমায়া ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেন স্বস্তিকা এবং অনন্যা। ছবি সংগৃহীত।

ভাল অভিনয়সূত্রে মনে পড়ল, এই সিরিজে প্রথম আমি আর স্বস্তিকা এক সঙ্গে কাজ করলাম। এর আগে অনেক অনুষ্ঠানে আমরা এক সঙ্গে সঞ্চালনা করেছি। কিন্তু ক্যামেরার মুখোমুখি হইনি। সিরিজেও যে আমরা ফ্রেম ভাগ করেছি এমনটাও নয়। বড় জোর গোটা এক দিনের কাজ ছিল, যেটা আমরা এক সঙ্গে করেছি। কিন্তু ওর পরিশ্রম দেখার মতো। এখনও কী প্রচণ্ড অধ্যবসায়! তার উপরে কাহিনি-চিত্রনাট্যকার সাহানা দত্ত আমাদের দু’জনকে তেমনই শক্ত দুটো চরিত্র দিয়েছিলেন। ‘মোহ’ আর ‘মায়া’ আমাদের যেন নিংড়ে নিয়েছিল! এবং আমাদের অভিনয় দেখার পরে অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন, আমরা কে মোহ, কে-ই বা মায়া? কার মধ্যে কোনটা বেশি? খুব অদ্ভুত প্রশ্ন, না! মোহ আর মায়া দিয়েই তো জগৎ গড়া। মানুষের দু’টি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। এক জন মানুষের মধ্যে তাই দুটোরই প্রায় সমান সহাবস্থান। হয়তো কারওর মধ্যে কোনও একটু কম, কোনওটা একটু বেশি।

এ বার আমাদের কার মধ্যে কোনটা বেশি, এই প্রশ্নের কোনও মানে নেই। যেমন, এক সিরিজে কাজের সুবাদে এবং পূর্ব পরিচিতি থাকায় অনেকের কৌতূহল, স্বস্তিকা কি খুব মেজাজি? উনি কি ভয় পাওয়ার মতোই? এত বিতর্ক একা সামলান কী করে? কিংবা ওঁর জীবনে কেনই বা এত বিতর্ক? প্রথমেই বলি, কারওর ব্যক্তি জীবন নিয়ে আলোচনার বিন্দুমাত্র রুচি আমার নেই। তাই স্বস্তিকার জীবনে কেন এত বিতর্ক, তাই নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। স্বস্তিকা মেজাজি কি? না! জানি না। তবে যদি হয়ও সেটাও একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। কারণ, শিল্পীরা একটু আধটু মেজাজি হন। তাঁরা তো তাঁদের মনের দাস! অর্থাৎ, মন যে ভাবে বলে আমরা সে ভাবেই একটি চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলি। একেক সময় একেক রকমের চরিত্র আমাদের মনে ভর করে। আমাদের মন তাই বাকিদের মনের মতো হয় না! ফলে, আমাদের মেজাজও বাকিদের মেজাজের সঙ্গে মেলে না। আমি এটাকে প্রশংসার চোখেই দেখি।

স্বস্তিকা কি ভয়ানক? আমার চোখে তো নয়। প্রায়ই ফোনে আমাদের কথা হয়। তবে একজন নারী যদি পুরুষশাসিত সমাজের থেকে ‘ভয়’ অনুভূতিটাকে আদায় করে নিতে পারে, সেটা তার কৃতিত্ব। তার সঙ্গে সঙ্গে যদি শ্রদ্ধা আর সমীহের মিশেল ঘটে তা হলে বলতে হয় কেয়াবাত!

এই প্রসঙ্গে বলি, স্বস্তিকার মস্ত গুণ ওর আত্মবিশ্বাস। যেটা ও অর্জন করেছে। যার জোরে, ‘একা মা’ হয়ে এক মাত্র মেয়ে অন্বেষাকে কী সুন্দর বড় করল। আমি কোনও দিন কাউকে ঈর্ষা করি না। ফলে, স্বস্তিকার এই গুণটা আমার মধ্যে থাকলে ভাল হত, এই জাতীয় ভাবনাও মনে আসে না। তার পরেও বলব, ওর আত্মবিশ্বাস সত্যিই ঈর্ষণীয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন