সিরিজ, সিক্যুয়েলের ধাঁধাঁয় জনতা

বলিউড এ সব ক্ষেত্রে হলিউ়ডের অনুসরণেই চলে। সিরিজ বা ফ্র্যাঞ্চাইজি হল সেই সব ছবিগুলো, যাদের নামে মিল আছে তো বটেই, কেন্দ্রীয় চরিত্র এবং গল্পের ধাঁচ এক। বলিউডে ‘গোলমাল’ সিরিজ যেমন সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ পর্যন্ত চারটে ছবি তৈরি হয়েছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:০৭
Share:

‘বাহুবলী’র একটি দৃশ্য

নামের সঙ্গে এক...দুই...তিন লাগিয়ে পরপর ছবি রিলিজ করে চলেছে। ‘রেস’, ‘মার্ডার’, ‘ধুম’...ছবিগুলোর মধ্যে কি আদৌ কোনও যোগসূত্র আছে? না কি সবটাই প্রচারের চমক? বিভ্রান্ত না হয়ে বুঝে নিন নির্মাতাদের কৌশলগুলো।

Advertisement

বলিউড এ সব ক্ষেত্রে হলিউ়ডের অনুসরণেই চলে। সিরিজ বা ফ্র্যাঞ্চাইজি হল সেই সব ছবিগুলো, যাদের নামে মিল আছে তো বটেই, কেন্দ্রীয় চরিত্র এবং গল্পের ধাঁচ এক। বলিউডে ‘গোলমাল’ সিরিজ যেমন সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ পর্যন্ত চারটে ছবি তৈরি হয়েছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির। খেয়াল করুন, এখানেও একটি ধাপ্পা আছে। রোহিত শেট্টি তাঁর ছবির নাম ধার করেছিলেন হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় ছবি ‘গোলমাল’ থেকে। স্রেফ বিপণনের জন্য। আর একটি হিট ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘ধুম’। এই কন-ফিল্ম সিরিজেও গল্পের জঁর একই। পুলিশের চরিত্রে অভিষেক বচ্চন আর উদয় চোপড়া। বাকি সব কিছুই কিন্তু আলাদা। ‘কৃষ’ সিরিজও সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি। প্রথম ছবি ‘কোই মিল গয়া’ জনপ্রিয় হওয়ার পরেই রাকেশ রোশন বুঝে নেন এই ঘরানায় পরপর ছবি তৈরি করে আখেরে লাভ আছে।

কৃষ

Advertisement

‘দবং’ বা ‘রেস’ এই ধরনেরই ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবে এখানে প্রথমটার সঙ্গে পরবর্তী ছবির গল্পের সামান্য মিল আছে। তবে ‘দবং টু’ আর ‘রেস টু’-কে কিন্তু পুরোদস্তুর সিক্যুয়েল বলা যাবে না। সিক্যুয়েলের আদর্শ উদাহরণ ‘বাহুবলী’। প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগের মধ্যে একটা গোটা গল্পকে বলা হয়েছে। ‘বাহুবলী টু’ কিন্তু প্রথম ছবিটির প্রিক্যুয়েল। অর্থাৎ ফ্ল্যাশব্যাকে গল্প দেখানো হচ্ছে। ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ হিট করার পর যেমন নির্মাতারা ‘হবিট’ তৈরি করলেন।

আরও পড়ুন: রাজেশ খন্নার জন্যই কি ক্ষতি হয়েছিল?

হলিউডের থেকে বলিউড স্পিন-অফও শিখে নিয়েছে। কোনও গল্পের একটি বিশেষ চরিত্রকে দিয়ে সম্পূর্ণ আর একটি ছবি তৈরি করা হলে তাকে স্পিন-অফ বলে। এ ক্ষেত্রে প্রথম গল্পের সঙ্গে পরেরটার যোগসূত্র থাকতেও পারে, আবার না-ও পারে। ‘বেবি’ ছবিতে তাপসী পান্নু যেমন ছোট্ট একটা চরিত্র করেছিলেন। সেই চরিত্র দিয়েই পরে তৈরি হল ‘নাম শাবানা’। দুটো ছবিই স্পাই-থ্রিলার।

এমন অনেক ছবি আছে যেগুলোর নাম ছাড়া আর কোনও মিল নেই। ‘হেট স্টোরি’, ‘মার্ডার’ এই ধরনের। এখানে শুধু গল্পের ধাঁচ এক রকমের। এগুলোকেও ফ্র্যাঞ্চাইজি বলা হয় তবে ‘গোলমাল’ বা ‘কৃষ’-এর চেয়ে তফাতটা স্পষ্ট। ‘হেট স্টোরি’ যেমন ইরোটিক থ্রিলার। এই সিরিজেরও চার নম্বর ছবিটি আসতে চলেছে। ‘রাজ’ যেমন হরর থ্রিলার। কিছু দিন আগে সুজয় ঘোষ ‘কহানি টু’ তৈরি করেন। নাম ছাড়া আর কোনও মিলই নেই। বিদ্যা বালন দুটো ছবিতে থাকলেও, দুটো চরিত্র একেবারেই আলাদা। এর মধ্যে আবার রিবুটও আছে। ‘জুড়ুয়া টু’ নাম দিয়ে যেমন সলমন খানের পুরনো ছবিটিই হুবহু নামিয়ে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া রিমেক তো আছেই!

আসলে কোনও ফমুর্লা হিট করে গেলে নির্মাতারা যেনতেন প্রকারে তা দিয়ে সিরিজ বানিয়ে ফেলেন। কোনও সিরিজ যেমন মাঝপথেও বদলে যেতে পারে। যেমনটা ‘রেস থ্রি’র ক্ষেত্রে হতে চলেছে বলে শোনা যাচ্ছে। সেখানে সেফ আলি খানের বদলে এ বার সলমন খান। অর্থাৎ সব কিছুই বদলে যাচ্ছে। পুরোটাই যে ব্যবসায়িক কৌশল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন