June Malia

সাংসদ দিলীপ ঘোষের গড় মেদিনীপুর, এই কেন্দ্র আমার কাছে খুব সহজ আসন নয়: জুন মালিয়া

ফলাফল তাঁর পক্ষে যাবে, না বিপক্ষে? কতটা শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ? পালাবদল ঘটাবে কি '২১-এর নির্বাচন? সবিস্তারে জানালেন আনন্দবাজার ডিজিটালকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২১ ১৯:৩১
Share:

জুন মালিয়া।

প্রথম নির্ঘণ্টে তাঁর ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন শেষ। আপাতত ২ মে-র প্রতীক্ষায় তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া। ফলাফল তাঁর পক্ষে যাবে, না বিপক্ষে? কতটা শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ? পালাবদল ঘটাবে কি '২১-এর নির্বাচন? সবিস্তারে জানালেন আনন্দবাজার ডিজিটালকে।

প্রশ্ন: কেমন আছেন?

জুন:
(হেসে ফেলে) ভাল আছি। কোনও সমস্যা নেই। সৌরভ আর আমি টিকা নিলাম।

প্রশ্ন: কেমন হল নির্বাচন? ভোটের দিনের পরিস্থিতি কেমন ছিল?

জুন:
মোটের উপর অবাধ, শান্তিপূর্ণ। পুরোটাই ভীষণ ইতিবাচক ছিল। আমার কেন্দ্রে ৯টি অঞ্চল। সব মিলিয়ে ৮২ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে। ছোটখাটো ২-১টি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। সেটা বলার মতো কিছু নয়।

প্রশ্ন: জিতছেন?

জুন:
সেটা মেদিনীপুর অঞ্চলের মানুষ আর ব্যালট বাক্স বলতে পারবে। প্রচারের জন্য খুব অল্প সময় পেয়েছি। মাত্র ১৫ দিন হাতে ছিল। তার মধ্যেই ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

প্রশ্ন: মেদিনীপুরের মানুষ কী বলছেন?

জুন:
ওখানকার শাসকদলের সদস্য, সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সারাক্ষণ আমার পাশে থেকেছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। শহর, শহরতলি সবার থেকে অফুরন্ত ভালবাসা পেয়েছি। এ বার ওঁরা যদি মুখ্যমন্ত্রীর মতোই আমার উপর ভরসা করতে পারেন, ভোট দেবেন। দেখা যাক, কী হয়।

প্রশ্ন: বিরোধী পক্ষ কতটা শক্তিশালী?

জুন:
আমার পক্ষে ওই নির্বাচনী কেন্দ্রে লড়া খুব সহজ ছিল না। বিরোধী সাংসদ দিলীপ ঘোষের গড় মেদিনীপুর। নিজেকে প্রমাণ করতে যথেষ্ট খাটতে হয়েছে। আমিও আমার সাধ্যমতো করার চেষ্টা করেছি।

প্রশ্ন: ‘মেদিনীপুরের মেয়ে’ কি বিরোধী শিবিরের উপর একটুও দাঁত ফোঁটাতে পারলেন?

জুন:
মেদিনীপুরে জুন মালিয়া একেবারে অপরিচিত নন। আমার ধারাবাহিক ওঁরা দেখেন। অনেকেই ‘আর্যর মা’ বা ‘চারুর শাশুড়ি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ওখানকার মহিলারা আমার দুটো পেশাকেই ভালবাসেন। তাঁদের অনুরোধ, একই সঙ্গে অভিনয় এবং রাজনীতিতে ওঁরা আমায় দেখতে চান। কোনও একটিতে নয়। ওঁদের এই ইতিবাচক মনোভাব আমায় ছুঁয়ে গিয়েছে। আমার বল-ভরসাও বাড়িয়েছে।

প্রশ্ন: ‘তারকা’ জুন ‘প্রার্থী’ জুনের থেকে তা হলে এগিয়ে?

জুন:
একেবারেই নয়। আজ পর্যন্ত প্রতি পদক্ষেপে ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছি। অভিনয় দুনিয়ায় কখনও কোনও বাড়তি সুযোগ নিইনি। রাজনীতিতেও সেই ধারা মেনে চলব। এমনিতেই বহু বছর নানা সেবামূলক কাজ, প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। বৃহত্তর ক্ষেত্রে আরও বেশি করে কাজ করতে চাইলে কোনও না কোনও দলের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতেই হত। তা ছাড়া, আমার প্রচুর অর্থবলও নেই। সেই জায়গা থেকেই রাজনীতিতে এসেছি। ২০১১-তেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে বলেছিলেন। প্রস্তুতি নেব বলে রাজি হইনি। ইদানীং হঠাৎ করে যাঁরা রাজনীতির খেলা খেলতে এসেছেন আমি তাঁদের দলে নই। যদিও আমাদের ট্যাগলাইন ‘খেলা হবে’। আমিও খেলব। তবে সিরিয়াস ভাবে।

প্রশ্ন: জিতে ফিরলে আপনার থেকে কী কাজ পাবেন মেদিনীপুরবাসী?

জুন:
‘দিদি’ নিজেই আমার মেদিনীপুর জনসভায় এসে কথা দিয়েছেন, জিতে ফিরলে মেদিনীপুরের দিকে আলাদা নজর থাকবে তাঁর। শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্য, কৃষি-- সব দিক থেকেই আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এলাকা। জিন্দলদের ৪০০ একর জমি পড়ে রয়েছে। তার বন্দোবস্ত হবে। আমার নিজের ইচ্ছে, এখানকার পর্যটন শিল্পের উন্নতি ঘটানো। এখানকার জঙ্গলমহলের প্রকৃতি ভীষণ সুন্দর। আশা, পর্যটকেরা আসার সুযোগ পেলে খুশিই হবেন। ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার বাড়াতে চাই। মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছেন, মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতালের সংখ্যা বাড়বে এখানে। জনসাধারণকে পাশে পেলে ‘দিদি’র স্বপ্নই সত্যি করব।

প্রশ্ন: বাংলা কি সত্যিই তার মেয়েকে ফিরে পেতে চাইছে?

জুন:
শহর থেকে শহরতলির সমস্ত খেটে খাওয়া মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আবার দেখতে চাইছেন। নির্বাচনী প্রচার থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ঘুরে এটাই বুঝলাম। কারণ, ওঁরা দিদির সমস্ত প্রকল্পের সুবিধে পেয়েছেন। ‘যুবশ্রী’, ‘রূপশ্রী’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘সবুজ সাথী’-- কোনও কিছু থেকে বাদ পড়েননি। আমি নিজে দেখেছি, বাড়ির ছেলের ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল চেপে দরকারে বেরিয়ে পড়ছেন বড়রাও। প্লাস ‘দিদি’ সমাজের সব স্তরের মানুষকে আরও অনেক ভাতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সবাই বুঝেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাউকে মিথ্যে আশ্বাস দেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন