স্কুলে পড়ার সময় থেকেই একে অপরের সঙ্গে রয়েছেন আয়ুষ্মান খুরানা ও তাহিরা কাশ্যপ। ছবি: সংগৃহীত।
বাল্যপ্রেমে নাকি অভিশাপ থাকে! বঙ্কিমচন্দ্রের সেই সতর্কবাণী বোধ হয় খুব একটা সাফল্য পায়নি আয়ুষ্মান খুরানা আর তাহিরা কাশ্যপের জীবন কাহিনিতে। স্কুলে পড়ার সময় থেকে একে অপরের সঙ্গে রয়েছেন তাঁরা। বিয়েও করে ফেলেছিলেন খুব অল্প বয়সে।তার পর ১৭ বছর ভাল-মন্দে কাটিয়ে ফেলেছেন। জীবন অবশ্য বার বার পরীক্ষা নিয়েছে তাঁদের। বলিউডে অন্য ধারার ছবি করেও সফল নায়কের তকমা পেয়েছেন আয়ুষ্মান। একবার স্তন ক্যানসারকে হার মানিয়ে জীবনে ফিরেছেন তাহিরা। যদিও ফের তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ। চলতি বছরই জানিয়েছেন সে কথা। তবু একে অপরের হাত ছাড়েননি। হারেননি কোনও লড়াইয়ে।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চলচ্চিত্র নির্মাতা তাহিরা জানান, আর পাঁচটি সাধারণ দম্পতির মতো তাঁর জীবনের শুরুতেও ছিল অনেক লড়াই। বিয়ের পর কী ভাবে দিন গুজরান হবে, তা নিয়ে ভাবতে হত প্রতি নিয়ত। তাহিরা বলেন, “আমার হাতে টাকা ছিল। কিছু টাকা আমি বিয়েতে খরচ করেছিলাম। কিছুটা সঞ্চিত ছিল। তখন মুম্বইয়ে আমার কাজ নেই। কিন্তু আয়ুষ্মান কোনও দিন বুঝতেই পারেনি কোথা থেকে খাবার আসছে।” প্রতি দিনের চাল-ডাল, আনাজ, ফল কিনতেই ফুরিয়ে আসছিল তাহিরার সঞ্চয়। তবু, তিনি কারও কাছে হাত পাতেননি। এমনকি নিজের বাবা-মাকেও জানতে দেননি লড়াইয়ের কথা। তাহিরার কথায়, “আমি আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর ছিলাম সব সময়। কিন্তু একটা বছর এ ভাবে মুম্বইয়ে থাকতে গিয়ে আমার জমানো পুঁজি শেষ হয়ে আসছিল।” আর ঠিক তখনই ঘটে গিয়েছিল একটি ঘটনা।
তাহিরা জানিয়েছেন, এক দিন বাজার সেরে ফেরার পর আয়ুষ্মান তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন আম কিনে আনেননি! এ কথা শুনে মাথায় রক্ত চড়ে যায় তাহিরার। তিনি বলেন, “সে দিন আর নিজেকে সংযত রাখতে পারিনি। আয়ুষ্মান খেয়ালই করেনি, গত দু’তিন দিন আমি নিজের ভাগের আমটা না খেয়ে ওকে খাইয়েছি। সে দিন ও আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘সমস্যাটা কী?’ আমার আর কিছু বলার ছিল না। আমি কাঁদতে শুরু করি।”
স্ত্রীর কথা শুনে আরও অবাক আয়ুষ্মান, তিনি নাকি ফের জিজ্ঞাসা করেন, এত দিন কেন এ সব কথা তাঁকে জানননি তাহিরা! এর পর অবশ্য সব কিছু বদলাতে শুরু করে। ভিডিয়ো জকি হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন আয়ুষ্মান এবং শুরু হয় তাঁর অভিনয় সফর।