র‌্যাম্পে বলিউড ম্যাজিক

শহরের পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত ফ্যাশন শোয়ে মণীশ মলহোত্র আর রাজ মেহতানির দ্বৈত-দ্যুতিশহরের পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত ফ্যাশন শোয়ে মণীশ মলহোত্র আর রাজ মেহতানির দ্বৈত-দ্যুতি

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:১০
Share:

মণীশের সঙ্গে রাইমা ও পূজা। ছবি: শৌভিক দে

গ্লিটজ, গ্ল্যামার, অ্যাকশন... না, কোনও ছবির শ্যুটিং নয়। মণীশ মলহোত্রের ডিজাইন করা ব্রাইডাল লেহঙ্গা আর রাজ মেহতানির গয়নায় দ্যুতিময়ী রাইমা সেন, পূজা হেগড়ে আর কিয়ারা আডবাণীর আলোয় তখন ভাসছে গোটা মঞ্চ। সেখানেই খুনসুটিতে মেতে উঠলেন দুই তারকা ডিজাইনার। মঞ্চে মণীশকে পরিচয় করিয়ে দিলেন রাজ মেহতানি। জানতে চাইলেন তাঁর যৌবন ধরে রাখার রহস্য। মণীশের কথায়, ‘‘আমার পঞ্জাবি জিন আর ফুড হ্যাবিট।’’ রাজের দুষ্টুমি এখানেই শেষ নয়। বলিউডের লিডিং লেডিরা মণীশের কানে কানে কী বলেন? কোনও হট গসিপ কি মণীশ শেয়ার করবেন মঞ্চে? মণীশের স্মার্ট সুইপ, ‘‘সকলে জানতে চায়,তাদের কী করে আরও গ্ল্যামারাস দেখাবে?’’

Advertisement

২৭ বছর ধরে মণীশের ডিজাইনে সেজেছেন জুহি চাওলা থেকে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ। জুয়েলারি ডিজাইনার হিসেবে অভিনেত্রীদের পছন্দের শীর্ষে রাজ মেহতানি। পাঁচ প্রজন্মের পারিবারিক ব্যবসাকে তাঁর সৃজনী ও উদ্ভাবনী শৈলীর নৈপুণ্যে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন রাজ।

রাজ

Advertisement

রাজ-ভূষণ

হতে চেয়েছিলেন অভিনেতা। আর তা না হলে ফ্যাশন ডিজাইনার। পারিবারিক ব্যবসায় বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না রাজের। তবে অল্প বয়সে বাবাকে হারানোয় পড়াশোনা বন্ধ করে নামতেই হয় ব্যবসায়। সেই দায়িত্বকেই শৈল্পিক রূপরেখা দিয়েছেন রাজ। তাঁর কথায়, ‘‘আমার অভিনেতা আর ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার সুপ্ত ইচ্ছেকে জুয়েলারি ডিজাইনিংয়ে ঢেলে দিয়েছি।’’ পূর্বসূরিদের সিম্পল আর ট্র্যাডিশনাল গয়না রাজের ছোঁয়ায় হয়ে উঠেছে কনটেম্পোরারি আর এজি। রাজের জুয়েলারি মানেই লার্জার দ্যান লাইফ, চাঙ্কি, জাঁকজমকপূর্ণ। তাঁর অনুপ্রেরণা অটোমান আর মুঘল সাম্রাজ্য। তবে ট্র্যাডিশনকে পাথেয় করেই রাজ খোঁজেন নতুনের পরশমণি। তাঁর কথায়, ‘‘ডিজাইনের পাশাপাশি আমি টেকনিক্যালি সাউন্ড। ইউরোপ-ইতালিতে ঘুরে ঘুরে কাজ শিখেছি। প্রথমে আমার জুয়েলারির পিছন দিকটা ডিজাইন হয়। তার পর সামনের দিকটা। আর এই দুটোকে জোড়া হয় বিভিন্ন মূল্যবান রত্ন দিয়ে। দেশ-বিদেশ ঘুরে এই রত্নরাজি সংগ্রহ করি। দক্ষিণ আফ্রিকার ডায়মন্ড, মায়ানমারের রুবি, কলম্বিয়ার এমারেল্ড। আর এই গয়না শুধু বিয়ে নয়, ককটেল পার্টিতেও পরা যায়।’’

মণীশ-জমক

মণীশ মলহোত্রের কেরিয়ারে প্রথম টার্নিং পয়েন্ট ‘রঙ্গিলা’। তার পর ‘রাজা হিন্দুস্তানি’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়...’, দিল্লিতে তাঁর সিগনেচার স্টোর লঞ্চ সবগুলোই এক-একটা মাইলফলক। মণীশের উপলব্ধি, ‘‘আলিয়া আর শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবীর জন্য ডিজাইন শুরু করার পর মনে হয়, একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। এত বছর ধরে কাজ করছি, এটাই একটা বড় পাওয়া।’’ ভারতের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ নিয়ে বললেন, ‘‘পোশাকে গ্লোবাল প্রভাব অনেকটা বেড়েছে। অনেক নতুন প্রতিভা কাজ করছে। প্রিন্ট, ফেদার, ট্যাসেল নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছে।’’ উঠতি ফ্যাশন ডিজাইনারদের কী বলবেন? ‘‘কাজে ফোকাস, নতুন কিছু করার চেষ্টা থাকুক। আর অবশ্যই লেগে থাকতে হবে। এটার কোনও বিকল্প নেই।’’ মণীশের কথায়— গ্রে, আইভরি, অয়েস্টার, পেল পিঙ্ক, স্কিন কালারগুলোই এই সিজনে চলছে।

পছন্দের নায়িকা

রাজের উইশলিস্টের শীর্ষে ম্যাডোনা। মণীশের অল-টাইম-ফেভারিট শ্রীদেবী। নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রীদের মধ্যে দু’জনেরই প্রথম পছন্দ আলিয়া ভট্ট।

রাজ-মণীশের ব্রাইডাল টিপস

রাজ আর মণীশ দু’জনেরই ব্রাইড আধুনিকা, এক্সপেরিমেন্টাল, বোল্ড। মণীশের কথায়, ‘‘এখনকার ব্রাইড একদিন হ্যান্ডলুম পরে, তো অন্য দিন গ্ল্যামারাস কিছু।’’ ভাবী কনেদের জন্য মণীশের টিপস, ‘‘যদি পোশাকটা খুব হেভি হয়, নেকপিসটা ছোট রাখা ভাল। আর টপটা সিম্পল হলে, নেকলেসটা হেভি হতে পারে। তবে পুরো আউটফিটে যে-কোনও একটা আইটেম স্ট্রং আর স্ট্রাইকিং হবে। বাকিটা সিম্পল।’’

রাজের পরামর্শ, ‘‘জুয়েলারি স্টাইল করে পরতে হবে। সব জুয়েলারি একসঙ্গে পরে নিলে হবে না। ইয়ারিং নেকলেসের সঙ্গে একদম ম্যাচিং না হলেই ভাল। তবে মানানসই হতে হবে। আর আমার নেকপিসগুলো যেহেতু আলাদা করা যায়, তাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেগুলো এক-একটা করে পরা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন