তাপস পাল ও তরুণ মজুমদার। ‘ই টিভি’র জন্য ‘দুর্গেশনন্দিনী’র শ্যুটিঙে।
তাহলে ‘গুরুদক্ষিণা’টা শেষ পর্যন্ত কাকে দিচ্ছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে? নাকি তরুণ মজুমদারকে?
প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে, তাপস পাল একটু থমকালেন! তার পর দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে জানালেন, “...আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার রাজনীতির ‘গুরু-মা’। উনি হাতে ধরে আমাকে শিখিয়েছেন। আবার তরুণ মজুমদার হলেন আমার অভিনয়ের ‘গডফাদার’। উনি না থাকলে, আমার সিনেমায় আসাই হত না... সুতরাং কী উত্তর দেব বলুন!”
দীর্ঘ চোদ্দো বছর পর। ফের লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরা-অ্যাকশনে তরুণ-তাপস। পরিচালক-অভিনেতার জুটিতে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দুর্গেশনন্দিনী’ শুরু হয়েছে ‘ই টিভি’তে। পয়লা বৈশাখ থেকে চলছে ধারাবাহিক ভাবে। আর তাতে অন্যতম প্রধান চরিত্র রাজা বীরেন্দ্র সিংহর ভূমিকায় তাপস পাল। পরিচালনা করছেন তরুণ মজুমদার!
আসন্ন লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে যেখানে সারা দেশ জুড়ে হইহই রইরই... একপক্ষ-বিপক্ষ-প্রতিপক্ষসেখানে তাপস-তরুণ নিঃশব্দে একসঙ্গে?
স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে এক সময়ের ‘ভালবাসা ভালবাসা’ কি আজও একই রকম আছে?
সম্পর্ক ভাল তো? কথাটা সবে জিজ্ঞেস করেছি কী করিনি, সঙ্গে সঙ্গে তরুণবাবু ফোনের ও প্রান্তে উত্তপ্ত দিনে বেশ তপ্ত! বললেন, “ঠিক কী জানতে চাইছেন বলুন তো? গল্প নিয়ে জানতে না চেয়ে, এই সব চটুল বিষয়...”
...আরে আরে, রাগ করছেন কেন? সেই ’৮০-তে ‘দাদার কীর্তি’...তারপর ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আগমন’, শেষে সে-ই ’৯০-তে ‘আপন আমার আপন’। তার পর এই চোদ্দো বছরের বিরতি...সেই তাপস আজ রাজনীতির কোন আঙিনায়! এখনও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন?
তরুণবাবু, “পা ছুঁয়ে প্রণাম করে, নাকি হাঁটু ছুঁয়ে.. সেই সব প্রশ্ন ওকেই করবেন...তবে ও তো আমার প্রতিপক্ষ নয়...আগেও যেমন ও সন্তানের মতো ছিল, আজও আছে।”
২০১২-র ডিসেম্বরে শ্যুটিং শেষ করে সম্পূর্ণ ধারাবাহিকটি ‘ই টিভি’কে জমা দিয়েছেন তরুণবাবু। এখন তার টুকিটাকি কাজ চলছে।
ও দিকে তাপস প্রচারের ময়দান থেকে ফোনে বললেন, “এই যে একটা গোলাপ ছুড়ে প্রেম নিবেদন... মিষ্টি প্রেম...আমাকে দর্শকের কাছে প্রেমিক হিসেবে চেনানো...এ তো তরুণবাবুরই অবদান।”
রাজনীতির রং তা হলে পেশায় কোনও রকম ছাপ ফেলেনি?
প্রশ্নের উত্তরে তরুণ মজুমদার যেমন হাসলেন, তেমনই তাপস বললেন, “এই যে প্রচারে গেলে আজও মহিলারা আমাকে দেখতে ছুটে আসেন...এ তো তরুণবাবুরই দান...তা ছাড়া ছেলে এক দল করে, বাবা অন্য দল...এ কি হয় না?”