অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
‘চিত্রকর’-এর তো প্রায় এক মাস বয়স হল, ফিডব্যাক কেমন?
অর্পিতা: খুব ভাল। যাঁরা দেখেছেন এখনও পর্যন্ত কেউ খারাপ বলেননি।
আর ব্যবসায়িক সাফল্য?
অর্পিতা: এটা প্রোডিউসার ভাল বলতে পারবেন। তবে এই ধরনের ছবির বিরাট ব্যবসায়িক সাফল্য, থিয়োরেটিক্যালি সম্ভব নয়। কারণ এর যে টার্গেট অডিয়েন্স তার সংখ্যাটা খুব কম। এ ধরনের ছবি রিলিজও খুব কম সংখ্যক হল-এ হয়। ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় এটা রাইট ডিসিশন।
কেন?
অর্পিতা: কারণ প্রচুর হলে রিলিজ করিয়ে লোকে দেখছে না, তেমন ফিডব্যাক পাওয়ার থেকে যে অডিয়েন্সের জন্য ছবি তাঁরা যে জায়গায় সবচেয়ে বেশি আসেন সেখানে রিলিজ করানোই ভাল।
আরও পড়ুন, বুম্বাদার সঙ্গে ডিসট্যান্স রিলেশনশিপের কারণ? মুখ খুললেন অর্পিতা
সব অডিয়েন্সকে এই ছবিটা ছুঁতে পারেনি বলছেন?
অর্পিতা: কোনও ছবিই সব ধরনের অডিয়েন্সের জন্য নয়। সবাইকে এন্টারটেন করতে পেরেছেন একমাত্র চার্লি চ্যাপলিন। সো নাথিং আনইউজুয়াল ওনলি ফর চিত্রকর। আসলে সম্মান এবং অর্থ, এই দুটোর বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান ইন্ডাস্ট্রিতে দেখতে পাই না। এই দ্বন্দ্বটা চলবেই। ‘চিত্রকর’ তো দেশ-বিদেশে বহু সম্মান এনে দিয়েছে।
পোস্ট ‘চিত্রকর’ তো আপনি কলকাতাতেই থাকছেন?
অর্পিতা: হুম। আপাতত কলকাতায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বিশেষ কোনও কারণ?
অর্পিতা: দুটো প্রজেক্ট ফাইনাল হয়েছে। এর থেকে বেশি এখনই বলব না কিন্তু।
আরও পড়ুন, টলিউডে অর্পিতার কামব্যাক, সৌজন্যে ‘চিত্রকর’
বাহ! এ তো দারুণ খবর। বাংলা ছবি তো?
অর্পিতা: হুম, হিন্দিতে সম্ভবত ওয়েব সিরিজে কাজ করব।
ছবির শুটিং কবে থেকে শুরু?
অর্পিতা: এখনই বলা মুশকিল। ছেলে আছে বলে এখন কোনও শুটিং রাখিনি। মিশুক এখানে থাকলে ফ্রি থাকার চেষ্টা করি। এখনও পর্যন্ত মেনটেন করতে পেরেছি।
উইন্টার ফ্যাশন, এনজয় করছেন নায়িকা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
কিন্তু দিল্লিতে আপনার নিজস্ব কোম্পানি, ব্যবসা…
অর্পিতা: লাস্ট সাড়ে চার বছর দিল্লিতে থেকেছি। তখন আমার ফিজিক্যাল প্রেজেন্স কোম্পানির জন্য দরকার ছিল। এর পরের ফেজে সেটার খুব একটা প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া দিল্লির ওয়েদার, কালচার, মানুষ— কিছুর সঙ্গেই মানিয়ে নিতে পারলাম না।
তাই?
অর্পিতা: দেখুন, এই সমস্যাগুলো প্রথম থেকেই ছিল। কিন্তু জায়গাটা ভাল লাগলে হয়তো কাজের প্রয়োজন না থাকলেও আরও কিছু দিন থেকে যাওয়াটা কনসিডার করতাম।
অভিনয়ের সেকেন্ড হাফে অন্য ধারার ছবিতেই আপনাকে দেখা যাচ্ছে। কমার্শিয়াল কি আর করবেন না?
অর্পিতা: কমার্শিয়াল ছবিতে কাজ না করাটা কনশাস ডিসিশন ছিল। তার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
আরও পড়ুন, পরীক্ষা দিলেন অর্পিতা, দেখে নিন তাঁর রেজাল্ট...
যেমন?
অর্পিতা: ২০১০ নাগাদ ‘একটি তারার খোঁজে’ দিয়ে যখন ফিরলাম, দেখলাম ইন্ডাস্ট্রির চেহারা অনেক বদলে গিয়েছে। বিজনেস প্যাটার্ন চেঞ্জ হয়েছে। কমার্শিয়াল ছবির ডেফিনিশন চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। আমি যখন কমার্শিয়াল করতাম, সেগুলো কোনও কপি ছিল না। ইন্ডিভিজুয়াল স্টোরি। হয়তো কারও থেকে ইনফ্লুয়েন্স হয়ে তৈরি বা রেফারেন্স নেওয়া হয়েছে। সে তো সব পরিচালকের ছবিতেই থাকে। পরে সেটা পাল্টে গেল। ফলে ওই ধরনের ছবিতে আমি কাজ করতে চাইনি। তা হলে আমি কী ধরনের ছবি করব, সেটা যে খুব স্পষ্ট ছিল, তা নয়। সে সময় কোনও এফর্ট ছাড়াই অফারটা এসেছিল। পরে কমার্শিয়াল ছবির অফার এলেও রাজি হইনি।
কমার্শিয়াল ছবিতে কাঙ্খিত সাকসেস এসেছিল?
অর্পিতা: অফকোর্স। আমি তো বললাম, কমার্শিয়াল বিজনেসটা তখন অন্য রকম ছিল। ফলে ইট ওয়াজ আ নাইস জার্নি ফর মি।
আরও পড়ুন, আপনার বিচারে টলিউডের সেরা নায়ক কে?
ইন্ডাস্ট্রি থেকে যতটা পাওনা ছিল, আদৌ সেটা পেয়েছেন?
অর্পিতা: দেখুন, আমি কতটা দিয়েছি, সেটার ওপর নির্ভর করে কতটা পেয়েছি। আমার দেওয়াটা খুব কম। আমি যখন প্রচুর কাজ করতে শুরু করি, তখনই ব্রেক নিয়েছিলাম। আর আমি কখনও নম্বরে বিশ্বাস করি না। কোয়ালিটি মেনটেন করতে গেলে নম্বর কমে যাবেই।
এখনও যে অভিনেত্রী হিসেবে আপনার পরিচয়ের বাইরে কখনও বা আগে প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী হিসেবে সম্বোধন করেন দর্শক, সেটা কেমন লাগে?
অর্পিতা: আলাদা করে ভালও লাগে না, খারাপও লাগে না।
‘চিত্রকর’-এর প্রচারে অর্পিতা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
অভিনেত্রী অর্পিতার পরিচয়ে পরিচিতি পেলে ভাল লাগত বলে মনে হয়?
অর্পিতা: এমন মনে হয়নি। কারণ যার পরিচয় দিয়ে কম্পেয়ারটা আসছে, তাকে বিট করার মতো বোকামি বোধহয় এ জন্মে করতে পারব না। কারণ, তার পথ চলাটা অনেকটা। সে শুরু করেছে অনেক আগে। আর তার যা অ্যাচিভমেন্ট…।
মিশুক তো কয়েক দিন পরেই ফিরে যাবে, মন খারাপ?
অর্পিতা: (সামান্য পজ) মিশুক জানুয়ারির ফার্স্ট উইকেই চলে যাচ্ছে। ওর ফিরে যাওয়াটা বা ওকে পৌঁছে দেওয়াটা আমাদের, মানে মা-ছেলে দু’জনের জন্যই ট্রমাটিক এক্সপিরিয়েন্স। সে কারণেই ও ফিরে যাওয়ার সময় বুম্বাদা ওকে দিয়ে আসে। আমি ওয়েট করে আছি কবে ওর গার্লফ্রেন্ড হবে, তা হলে হয়তো এটা কমবে।
বলিউড-টলিউড-টেলিউডের হিট খবর জানতে চান? সাপ্তাহিক বিনোদন সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
ওর কোন ক্লাস হল?
অর্পিতা: সেভেন।
মানে, সেভেনের পড়ুয়ার মা চাইছেন, ছেলের গার্লফ্রেন্ড হোক।
অর্পিতা: অফকোর্স। ওর ফিরে যাওয়ার একটা সেপারেট এক্সাইটমেন্ট আর রিজন থাকলে হয়তো এখনও যে চাইল্ডিশ বন্ডিং, সেটা কমবে। একটা মিসিং ফ্যাক্টর কোথাও হওয়া দরকার।