রবিবার চলে গেলেন অভিনেতা চিন্ময় রায়। —ফাইল চিত্র।
কখনও ভাবেননি অভিনয় জগতে পা রাখবেন। ঘনিষ্ঠ মহলে এমনটাই বলেছিলেন চিন্ময় রায়। তবে ম্যাট্রিকে থার্ড ডিভিশনে পাশ করা সেই আপাতনিরীহ চেহারার মানুষটিই কখন যেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম সারির কমেডিয়ান হয়ে উঠলেন। রবিবার চলে গেলেন সেই অভিনেতা চিন্ময়। বয়স হয়েছিল ৭৯।
রবিবার রাত ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ সল্টলেকে নিজের ফ্ল্যাটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন চিন্ময়বাবু। বছরখানেক আগে নিজের ফ্ল্যাটের নীচ থেকে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সে সময়ই তাঁর মাথা, হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। তার পর থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে বার্ধক্যজনিত কারণেও ভুগছিলেন চিন্ময়বাবু। আগামিকাল তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
চিন্ময়বাবুর জন্ম বাংলাদেশের কুমিল্লায়। ১৯৪০ সালের ১৬ জানুয়ারি। রুপোলি পর্দায় কমেডিয়ান হিসেবে জনপ্রিয় হলেও অভিনয় জগতে চিন্ময়বাবুর শুরুটা হয়েছিল থিয়েটারের মঞ্চে। নান্দীকারের মতো গ্রুপ থিয়েটারের দলে। তবে এক সময় সে দলও ছেড়ে দেন তিনি। চিন্ময়বাবু পরে বলেছিলেন, “সেটাই ছিল আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।”
প্রশ্নোত্তরে চিন্ময় রায়ের সিনেমা ও জীবন
আরও পড়ুন: গল্পের বীজ বুনতে বুনতে এ ঘর থেকে ও ঘর
এর পর অভিনয় শুরু রুপোলি পর্দায়। প্রথম ছবি ‘গল্প হলেও সত্যি’। তপন সিংহের পরিচালনায় প্রথম ছবিতেই নজর কাড়লেন। এর পর আর থেমে থাকেননি। ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘চারমূর্তি’,‘মৌচাক ’,‘হাটে বাজারে’, ‘ঠগিণী’,‘ফুলেশ্বরী’, ‘সূবর্ণ গোলক’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’— একের পর ছবিতে তিনি মাতিয়েছেন বাঙালি দর্শককে।
আরও পড়ুন: আদালতের নির্দেশে ‘আশ্চর্য’ নন, ‘আশ্বস্ত’ পরিচালক
তথাকথিত সাদামাটা চেহারা সত্ত্বেও নিজের অভিনয় প্রতিভায় রুপোলি পর্দায় নায়কদের পাশে রীতিমতো নজর কেড়েছেন। নবদ্বীপ হালদার, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় বা তুলসী চক্রবর্তীর মতো কিংবদন্তি অভিনেতাদের পর বাংলা ছবিতে কমেডিয়ানের ভূমিকায় রবি ঘোষ বা অনুপকুমারের সঙ্গে পাল্লাও দিয়েছেন সমানে সমানে। তাঁর প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্রের এক অধ্যায়ের যেন সমাপ্তি ঘটল।
(মুভি ট্রেলারথেকে টাটকামুভি রিভিউ - রুপোলি পর্দার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদেরবিনোদনবিভাগ।)