দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় আর শাহরুখ খান এক ফ্রেমে। ছবি: সংগৃহীত।
আমি তখন পঞ্চম শ্রেণিতে। সদ্য মুক্তি পেয়েছে ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’। তামাম দেশবাসীর মতো আমার হৃদয়ে তখন থেকেই শাহরুখ খান! সেই থেকে ওঁকে চাওয়ার শুরু। ওঁরও বয়স বেড়েছে, আমারও। চাওয়া কিন্তু ফুরোয়নি!
শাহরুখ খান, নামেতেই যেন ‘প্রেম’! সেই নাম কানে শুনলে আমি যেন ‘রাধা’। ক্ষণে ক্ষণে শিহরন। অকারণ আনন্দে মেঘমুলুকে পৌঁছে যাচ্ছি। থেকে থেকে আনমনা! সে যে কী অবস্থা। ওই বয়স থেকে ওঁর প্রতি ‘প্রেম’ লালন করতে করতে এগিয়েছি।
কেউ কেউ ওঁর হাসির অনুরাগিণী। কেউ গালের টোল, গজদন্তের। কেউ আবার বুদ্ধিদীপ্ত রসিকতার। দু’পাশে দুই বাহু ছড়িয়ে ডাক পাঠানো। নারীদের প্রতি ওঁর বাড়তি সম্মান। আমার শাহরুখের সব ভাল লাগে। বিশ্বাস করুন, এ রকম ‘অন্ধ প্রেম’ আর কারও প্রতি নেই! ৬০-এর শাহরুখ তাই আমার কাছে আকর্ষণীয়। গালের চামড়ায় হয়তো অজস্র ভাঁজ। রং করেও পাকা চুল ঢাকতে পারেননি। আগের সেই জৌলুস হয়তো ম্লান। এ সব চোখেই পড়ে না! বালাই ষাট, একশো বছর বাঁচুন শাহরুখ। ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’-এর চাকরিতে যোগদান ওঁকে দেখব বলে।
আমি এ ভাবেই শাহরুখ খানের প্রেমে ‘কলঙ্কভাগী’।
এই বিষয়ে দুটো ঘটনা মনে পড়ল। সাল ২০১৯। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শাহরুখ আসবেন। নির্দিষ্ট সময়ে এলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাদর অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে গেলেন মূল ফটকের দিকে। নিয়ম, মুখ্যমন্ত্রী যখন কোথাও যান, তাঁর পিছন পিছন যেতে নেই। আমি সব ভুলে দৌড়েছি ‘দিদি’র পিছনে। ওঁর হেঁটে আসাটাও মিস্ করব না। পরে বকুনিও খেতে হয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষ। মুখ্যমন্ত্রী কথা বলে চলে গিয়েছেন। আমরা ছবি তুলব। আমার বোন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বামী পরিচালক-বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী শাহরুখের পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। ক্যামেরা তাক করে সমানে বলে চলেছেন, “দেবু, ওঁকে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলো।” আমি পাথর। কাকে জড়াব আমি? কান-মাথা কিচ্ছু কাজ করছে না। মুশকিল আসান হলেন কিং খান নিজেই। আলতো করে জড়িয়ে নিলেন আমাকে। বুকে টেনে নিলেন আলগোছে।
ওঁর হাত আমার কাঁধ জড়িয়েছে। ওঁর উষ্ণতা, গায়ের গন্ধ, আবেদনে যেন ডুবে যাচ্ছিলাম। ওই মুহূর্ত আজও আমার প্রত্যেক মুহূর্তের সঙ্গী।