অন্বেষা: এ বার সোনার দুল, ওইটাই পরা হয় আলটিমেটলি।
দৌলতা: আমি প্রত্যেক বার রুপোর কয়েন, বাটি আর চামচ কিনি। শ্বশুরবাড়ির ট্র্যাডিশন! তবে অফিশিয়ালি ধনতেরস নয় কিন্তু!
সুমনকল্যাণ: মোদীজি তো বলেছেন এই ধনতেরসে গোল্ড বন্ড কিনতে।
ঐন্দ্রিলা: এই এলেন ব্যাঙ্কার দাদা, তুই কিনে দে রে!
হোয়্যাট্সঅ্যাপ চলছে টুকটাক। ফেসবুক ভরছে গয়নার দোকানের বিজ্ঞাপনে।
ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং টপিক— এ বারের ধনতেরস ফ্যাশন।
এসো মা লক্ষ্মী...
অবাঙালি ঘরের ধনলক্ষ্মীর পুজো তো কবেই ঢুকে পড়েছে বাঙালি গৃহস্থালিতে। ধনতেরস মানে গয়নার দোকানে লম্বা লাইন এবং সোনা-রুপো কিছু না কিছু একটা কিনেই ফেলা, এটা বেশ চেনা ছবি ক’বছর ধরেই। হালফিলের জেন ওয়াই-ই বা বাদ যায় কেন! হাতে সময় নেই? পরোয়াও নেই। অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত এ প্রজন্ম কবেই বা পরোয়া করেছে তাতে! সময় থাকলে গয়নার দোকানে দেখেশুনে বাছাই করার অপশন তো রইলই। দোকান ভর্তি অফারের পর অফার, অনলাইন কেনাকাটার সাইটগুলোতে লম্বাচওড়া ডিসকাউন্টের উস্কানি। বাই উঠলে কটক যাওয়ার দরকার নেই, হাতের ফোনটাই তো যথেষ্ট! অতএব, চলো গয়না কিনি। ব্যস!
শপিং কার্ড
কেনাকাটা আছে। হাতে আছে ফোন, ল্যাপটপ। শপিং কার্ডের জন্য খানিক আলোচনা? ফোন, হোয়্যাট্সঅ্যাপ, ফেসবুক সব আছেই বা কী করতে! হাতে গরম গয়নাগাঁটির সঙ্গেই উইশ লিস্টে ঢুকে পড়ছে গয়না কেনার বাৎসরিক প্ল্যান প্রোগ্রামও। ট্র্যাডিশনাল ডিজাইন পেরিয়ে চাহিদায় মাথা তুলছে ছিমছাম গয়না।
পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সৌমিতা যেমন ঠিক করেছেন, ‘‘এ বার এক্কেবারে স্লিক কিছু কিনব ভেবেছি। ভারী সোনার গয়না তো লকারে রাখার জন্যই, বাড়ির বিয়ে ছাড়া পরাই বা হয় কই! ছোট্ট একটা নাকছাবি কিনব এ বার, অফিসেও পরা যাবে। কত দিনের শখ!’’ স্কুলশিক্ষিকা রেশমি আবার এই ধনতেরসেই প্রথম কিস্তিটা দেবেন— গয়নার দোকানের বাৎসরিক প্ল্যানে ইনস্টলমেন্টে টাকা জমিয়ে একটা বড়সড় কিছু কিনে ফেলা যাবে!
বাড়িতে কস্মিনকালেও ধনতেরসের পাট ছিল না কৌশিকের। বিয়ের পর প্রথম বছরে কর্পোরেট গিন্নিকে কিনে দিচ্ছেন রুপোর ড্যাঙ্গলার। ‘‘পিয়ার প্রেশার! তবে নিজেকেও একটা রিস্টলেট গিফ্ট করব ভেবেছি। আমি কি বাদ পড়ব!’’ হাসতে হাসতেই বলেন মধ্য তিরিশের ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার।
ট্রেন্ডে চোখ
জুয়েলারি ডিজাইনার বসুন্ধরা মন্ত্রী বলেন, ‘‘এ বছর জেন ওয়াইয়ের ফ্যাশনে রয়েছে ছিমছাম কিছু গয়না— খাঁটি ভারতীয় সাজ হোক বা পশ্চিমী পোশাক, সবের সঙ্গেই যা চোখ বুজে পরে ফেলা যাবে। আংটি এবং ব্রেসলেট— দুয়েরই ভূমিকা পালন করা হ্যান্ড হারনেস, পুরনো বাঙালি গয়না হাতপদ্মের আধুনিক এই সংস্করণও রমরমিয়ে রয়েছে ট্রেন্ডে। নতুন প্রজন্মের মেয়েরা ঝুঁকছেন ইয়ার-কাফ ধাঁচের দুলের দিকেও।’’
এ শহরের এক নামী গয়না বিপণির তরফে অভীক জানালেন, কমবয়সি প্রজন্ম মূলত গয়নায় চান ট্র্যাডিশনালের সঙ্গে আধুনিক ডিজাইনের মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ। বেশির ভাগই খুঁজছেন হাল্কা ছিমছাম গয়না— দুল, হার, বালা, চুরি, আংটি, সবেতেই। ‘‘অফিস-বাড়ি সামলে চলা প্রজন্মের কথা মাথায় রেখেই আমরা এ বছর ধনতেরসে এনেছি ছিমছাম ব্রেসলেট, হাল্কা বালা, ছোট্ট লকেটের মতো গয়না। চাহিদায় রয়েছে বড় আকারের দুলও। তাই কানবালা বা ড্যাঙ্গলারও থাকছে কালেকশনে,’’ বলছেন তিনি।
লোডিং...
জেন ওয়াইয়ের লক্ষ্মীলাভ।