Upcoming Bengali Film

বাম জমানার ‘মনীষা অন্তর্ধান’ নিয়ে ছবি অরিন্দম শীলের, এই প্রথম বড় পর্দায় অভিনয় কুণালের! সঙ্গে ব্রাত্য, অনন্যা

গত কয়েক মাসে তাঁর উপরে অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। সব ভুলে আবার ফ্লোরে ফিরছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। রাজনীতির গন্ধমাখা তাঁর নতুন ছবির নাম ‘কর্পূর’।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ ০৪:২৮
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বিতর্ক অতীত। চেনা ছন্দে ফিরছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। ইতিমধ্যে নতুন ছবির পরিকল্পনাও করে ফেলেছেন। জুলাই থেকেই শুরু করবেন আগামী ছবির শুটিং। সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি উপন্যাস লিখেছিলেন লেখিকা দীপান্বিতা রায়। নাম ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’। অরিন্দমের নতুন ছবির অবলম্বন সেই উপন্যাসই।

Advertisement

অরিন্দম জানিয়েছেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী নিয়ামক মনীষা মুখোপাধ্যায়ের জীবনের উপর ভিত্তি করে লেখা এই উপন্যাস। নব্বইয়ের দশকে শিক্ষাদুর্নীতির সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল মনীষার। সেই কাহিনিকে কেন্দ্র করেই চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক। ১৯৯৭ সালে মনীষার আচমকা ‘উবে’ যাওয়া ভাবিয়েছিল সকলকে। রাজ্য রাজনীতিতেও শোরগোল পড়েছিল ঘটনাটি নিয়ে। ২৮ বছর পর সেই ভাবনাকে আবার উস্কে দেবে অরিন্দমের আগামী ছবি ‘কর্পূর’। যে ছবির মুখ্যচরিত্রে রয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।

ঘটনাচক্রে, এই ছবিতে প্রথম বার বড় পর্দায় দেখা যাবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। সূত্রের খবর, কুণাল বাম জমানার অধুনাপ্রয়াত এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার ভূমিকায় অভিনয় করবেন। অসমর্থিত সূত্রের খবর, সেই নেতা অনিল বিশ্বাস। সেই অনুযায়ী তাঁর রূপটান ইত্যাদির প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। বাম জমানার অপর গুরুত্বপূর্ণ নেতা বিমান বসুর ভূমিকায় অভিনয় করার কথা টলিউডের এক পরিচিত অভিনেতার। ছবিতে দেখা যাবে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূলের কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। যা থেকে এই জল্পনার জন্ম হওয়ার অবকাশ থাকছে যে, বাম জমানার ওই ‘সাড়া-জাগানো’ ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবিতে রাজনীতির ‘ভূমিকা’ থাকবে। যদিও পরিচালক অরিন্দম তা মানতে রাজি নন। ছবিতে রাজনৈতিক ‘প্রেক্ষাপট’ থাকলেও বাস্তবের কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ছবির মিল নেই বলেই তাঁর দাবি।

Advertisement

ছবিটি চলতি বছরেই মুক্তি পাবে না কি পরের বছরে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই পরিচালকের দাবি। তবে একটি সূত্রের বক্তব্য, ডিসেম্বর মাসে ছবিটি মুক্তি পেতে পারে। সময়কাল দেখলে তত দিনে বাংলায় বিধানসভা ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে যাবে। তার মাস তিনেকের মধ্যেই রাজ্যে ভোটও এসে পড়বে। সেই সময়ে বাম জমানার ওই ‘রহস্যজনক’ ঘটনা নিয়ে এমন একটি ছবি মুক্তি পেলে নির্বাচনের উপর তার কোনও প্রভাব পড়ে কি না, তা নিয়েও কৌতূহল থাকবে বইকি।

ছবিতে এক পুলিশ আধিকারিকের চরিত্রে দেখা যাবে ব্রাত্যকে। সূত্রের খবর, মনীষার আচমকা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনার যিনি মূল তদন্ত করেছিলেন, সেই তদন্তকারী অফিসারের (পরিভাষায় ‘আইও’ বা ‘ইনভেস্টিগেটিং অফিসার) ভূমিকায় অভিনয় করবেন ব্রাত্য। এক সংবাদমাধ্যমের দাপুটে সম্পাদকের চরিত্রে দেখা যাবে শাসকদলের কাউন্সিলর অনন্যাকে (ঘটনাচক্রে, সেই সংবাদমাধ্যমের নাম ‘এডিপি’। পরিচালকের বক্তব্য, এটি তাঁর ‘এবিপি’ সংস্থার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য)। পরিচালক জানিয়েছেন, বড় পর্দায় প্রথম অভিনয় নিয়ে কুণাল দারুণ উত্তেজিত। নিয়মিত কর্মশালায় যোগ দিতে চাইছেন। চিত্রনাট্যের বিষয়েও তাঁর যথেষ্ট আগ্রহ। এক শিক্ষানবিশ সাংবাদিকের চরিত্রে দেখা যাবে লহমা ভট্টাচার্যকে। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন অর্পণ ঘোষাল। আর ঋতুপর্ণার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করবেন পরিচালক অরিন্দম স্বয়ং।

ছবিতে ১৯৯৭ এবং ২০১৯— দু’টি সময়কাল দেখানো হবে। পরিচালকের কথায়, “ছবিতে কেউ রাজনীতির গন্ধ খুঁজতে গেলে ভুল হবে। ঘটনাটা সত্যি। আমার ছবিতে সবটাই কাল্পনিক।” শাসক তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী-মন্ত্রীকে ছবিতে দেখতে পাওয়া গেলেও তার মধ্যে কোনও ‘অভিসন্ধি’ নেই বলেই পরিচালকের দাবি। তাঁর বক্তব্য, রং দেখে নয়, চরিত্রের প্রয়োজনে যাঁকে মানানসই বলে মনে হয়েছে, তিনি তাঁকেই ডেকেছেন। অরিন্দমের কথায়, “রাজনীতিক হিসাবে নয়, ব্রাত্যের লেখা এবং তাঁর অভিনয় আমায় সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে। শুধুমাত্র চরিত্রের স্বার্থেই ব্রাত্য, কুণাল এবং অনন্যাকে বেছে নিয়েছি।”

প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে পর্যন্ত একের পর এক ঝড় গিয়েছে পরিচালকের উপরে। তার ‘জবাব’ই কি এই ছবি? অরিন্দম জানাচ্ছেন, সেই উত্তর তিনি পরে দেবেন। আপাতত তাঁর লক্ষ্য ছবিটি তৈরি। জুলাই থেকে শুরু হবে শুটিং। ছবিটি প্রযোজনার দায়িত্বে ‘ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন এবং কাহাক স্টুডিয়োজ়’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement