New Bengali Film Update

ঋত্বিক বাংলা ছবির একমাত্র অভিনেতা নন, কিন্তু অপরিহার্য! ওঁকে ছাড়া ছবি ভাবি না: প্রদীপ্ত

“এত দৌড়েই বা আমরা কী করছি! সেই তো যুদ্ধ হচ্ছে। বেকারত্ব আছে। না খেতে পেয়ে মানুষ মরছে। তা হলে ইঁদুর দৌড়ের প্রয়োজন কী?”, প্রশ্ন তুললেন পরিচালক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ ২১:২৪
Share:

প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের ছবি মানেই ঋত্বিক চক্রবর্তী। ছবি: ফেসবুক।

আলসেমি বোধ হয় তাঁর রক্তে। ছবির নামই তার প্রমাণ। যেমন, ‘ল্যাদ’, ‘স্টাক’। সাম্প্রতিক সংযোজন ‘নধরের ভেলা’। প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য আবার এক প্রচণ্ড ধীরস্থির মানুষের গল্প শোনাবেন। কাজ না করে জীবন কাটানো মানুষটিকে প্রয়োজনের তাগিদে কাজ করতে হবে। চাকরি পাবে এক সার্কাস কোম্পানিতে। সে কি পারবে বাকিদের সঙ্গে পাল্লা দিতে? এটাই প্রদীপের আসন্ন ছবির গল্প। মুখ্য ভূমিকায় আবারও ঋত্বিক চক্রবর্তী। সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা সরকার, অপরাজিতা ঘোষদাস, অমিত সাহা প্রমুখ। বাস্তবের জুটি ঋত্বিক-অপরাজিতা এই ছবিতেও জুটি। হাড়হিম খলনায়ক হয়ে দেখা দেবেন দর্শকদের সামনে।

Advertisement

আপনি কি ইঁদুর দৌড়ের বিপক্ষে? ধীরেসুস্থে কাজ করার পক্ষপাতী? তাই বার বার আপনার ছবিতে অলস ধীর মানুষের কথা আসে। প্রদীপ্ত প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেছেন। “আমি পক্ষে-বিপক্ষে কোনওটাই নয়। কিন্তু আমারও প্রশ্ন আছে। ইঁদুর দৌড়ে শামিল হয়েই বা আমরা কী করছি? সেই তো যুদ্ধ হচ্ছে। বেকারত্ব আছে। না খেতে পেয়ে মানুষ মরছে। তা হলে ইঁদুর দৌড়ের প্রয়োজন কী?” তাঁর গল্পে তাই ধীরস্থির মানুষের সঙ্গে অনায়াসে জায়গা করে নেয় বিলুপ্তপ্রায় আর এক শিল্প, সার্কাস। থাকবে বাংলার হারিয়ে যাওয়া আরও অনেক সংস্কৃতির কথা। “ছবিতে ‘নধর’ চরিত্রে দেখা যাবে অমিতকে। তার জলযান বা ভেলা। খেয়াল করে দেখুন, এই জলযানটিও কিন্তু ধীরেসুস্থে চলে। স্টিমারের গতি নয় তার।”

বাংলা এক সময় এ রকমই ছিল। বাঙালি জীবনে কোনও তাড়া ছিল না... মনে করিয়ে দিতেই পরিচালকের কণ্ঠ স্মৃতিতে ভারী। তাঁর উপলব্ধি, সেই সময়টা মোটেই খারাপ ছিল না। সেই স্মৃতিই বারে বারে না়ড়া দেয়। তিনিও ঘুরেফিরে ‘স্লো ম্যান’-এর গল্প বলেন। ঠিক যে ভাবে তাঁর ছবিতে প্রথম দিন থেকে এখনও মুখ্য, কেন্দ্রীয়, নায়ক, খলনায়ক চরিত্র মানেই ঋত্বিক। কথা শেষের আগেই জোরে হাসি প্রদীপ্তর।

Advertisement

বাংলা ছবিতে আর কি এমন কোনও অভিনেতা নেই যাঁকে আপনার ছবিতে ভাবতে পারেন?

হাসি তখনও থামেনি। নিজেকে সামলে পরিচালক বললেন, “স্বাচ্ছন্দ্য বলেও একটা বিষয় আছে। প্রথম দিন থেকে আমরা এক সঙ্গে কাজ করে আসছি। একে বলে টিমওয়ার্ক। কাজ করতে করতে তৈরি হয়ে যায়। বুঝতে, বোঝাতে সুবিধা হয়। ঋত্বিকের মতো অপরাজিতা, অমিতও আমার সব ছবিতে থাকেন। এই ছবিতে আমি আর ঋত্বিক যৌথ সহপ্রযোজকও।” তার পরেই যেন কিঞ্চিৎ ধারালো তিনি। ‘নধরের ভেলা’য় ঋত্বিকের চরিত্র ভীষণই মনস্তাত্ত্বিক স্তরে বিন্যস্ত, জটিল। “এই চরিত্রে ওকে ছাড়া আর কাকে ভাবব! বাংলা ছবিতে অনেক ভাল অভিনেতা আছেন। কিন্তু ঋত্বিকের মতো অপরিহার্য নন তাঁরা।”

অর্থাৎ, প্রদীপ্ত তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে বেরোবেন না। ঋত্বিক ছাড়া আর কেউ তাঁর ছবির নায়কও হবেন না। নিজের ঘরানা ছে়ড়ে দু’একটি পুরোপুরি বাণিজ্যিক ঘরানার ছবি বানানো...? শুনে ফের হাসিতে ফেটে পড়েছেন। প্রদীপ্তর আশ্বাস, “না না, পরের কাজেই হয়তো দেখবেন ছবির বিষয় বদলে গেল। সেই সূত্র ধরে ঋত্বিক নন, ছবির নায়ক হলেন কোনও তারকা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement