বলিউডে মূল ধারার ছবির বাইরেও আরও এক ধরনের ছবি তৈরি হয়। লো বাজেট এবং উত্তেজক দৃশ্য। এগুলোই এই ছবির ইউএসপি। ‘খুনি হাভেলি’, ‘পিয়াসী পত্নী’, ‘পেয়ার কি তমান্না’-জাতীয় বি গ্রেড ছবিগুলির পিছনেও কিন্তু অনেক না জানা কথা রয়েছে। আশি কিংবা নব্বই এর দশকের বি-গ্রেড সি-গ্রেড ছবির থেকে এখনকার ছবির চরিত্রগত পার্থক্য অনেক।
ছবিগুলি থেকে মোট পাঁচ লক্ষ থেকে আট লক্ষ টাকার মত লাভ হয়। আজ যদি একটা ছবি দিল্লিতে মুক্তি পায়। তাহলে তিন মাস পর তা মুক্তি পাবে দক্ষিণ ভারতে। আরও ৬ মাস পর মুক্তি পাবে রাজস্থানে। এভাবেই চলে ছবিগুলি।
দু’ঘণ্টার একটি বি গ্রেড ছবি তৈরি করতে খরচ হয় আনুমানিক ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা।
দৈনিক ১০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা, এই হল ছবিগুলির অভিনেতা-অভিনেত্রীদের আয়।
কোনও কোনও অভিনেতা দিন প্রতি ১৫ হাজার টাকাও পান। ছবিগুলি শুটিং করা হয় দিন চারেকের মধ্যেই। প্রতি বছর বলিউডে ২০০টির কাছাকাছি বি বা সি গ্রেড ছবি তৈরি হয়।
এই ছবির সঙ্গে যুক্ত এক পরিচালক জানালেন, সেন্সর বোর্ড থাকায় এই ধরনের ছবি তৈরিতে মারাত্মক সমস্যা রয়েছে।
এই ধরনের ছবি প্রেক্ষাগৃহ অবধি পৌঁছে দেওয়াটা বড় চ্যালেঞ্জ। বলিউডের বেশ কিছু নামী তারকাও নাকি এই ধরনের ছবিতে কাজ করেছেন!
এই ধরনের ছবিতে নাকি জিতেন্দ্র, রাজ বব্বররাও একটা সময় অভিনয় করেছেন। অনেক বলিউড পরিচালকও নাকি প্রথম জীবনে এই ধরনের ছবিতে সহকারী পরিচালনার কাজ করেছেন।
একটা সময় ছিল যখন এই ছবিগুলি যে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেত। সেখানে ৪০ জন কর্মচারী থাকতেন।
বর্তমানে মুম্বইয়ে এ ধরনের ছবির জন্য নির্দিষ্ট প্রেক্ষাগৃহগুলিতে চার জন কর্মী খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
একটি প্রেক্ষাগৃহের মালিক জানালেন, সম্পত্তি কর, পুরসভার কর, বিনোদন কর সবই দিতে হয় তাঁদের। কিন্তু টাকা নেই একেবারেই।
ইন্টারনেটের যুগে এই ধরনের ছবি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে ভিড় আর তেমন হয় না।
এই ছবির এক পরিচালক বললেন, তাঁর ধারণা, আগামী দু’ বছরের মধ্যে সবকটি ‘সিঙ্গল স্ক্রিন’ প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাবে।
এইচডি ক্যামেরায় শুটিং করে এই ছবিগুলি ইউটিউবে আপলোড করে দেওয়া এর চেয়ে সহজ, বলছেন এক পরিচালক।
এই ছবিগুলি আপলোড করে দিলে মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে যাবে। তাঁরা শেয়ার করতেও পারবেন, দাবি নির্মাতাদের।
ইউটিউবে বি কিংবা সি গ্রেড ছবিগুলির ৩০০টি চ্যানেল রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মাসিক লভ্যাংশ দু’ থেকে তিন লক্ষের কাছাকাছি, জানালেন এক অভিনেত্রী। এই ধরনের ছবিতেই কাজ করবেন, স্পষ্ট জানান তিনি।
আগামী দু’বছরের মধ্যে এই ধরনের ছবির দর বাড়বে, দাবি করলেন আরেক অভিনেত্রীর। তিনি বলেন, লোকজন তাঁকে ‘সেক্সি’ বললে শুনতে বেশ ভালই লাগে।
এই ধরনের ছবিতে কাজ করে বলিউডের এক নম্বর নায়িকাও হয়েছেন কেউ কেউ, এমনটাই জানালেন এক অভিনেত্রী। তিনিও এই ধরনের ছবি থেকে বলিউডের মূল ধারার ছবিতে কাজ করতে চান।
বলিউডে এই ধরনের ছবিগুলি তৈরি করা হলেও দক্ষিণ ভারতীয় ছবির জগতের জন্য বেশিরভাগল ক্ষেত্রেই ডাবিং করাও হয়ে থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার উল্টোটাও হয়েছে।