পুজো শেষ, এ বার রোগা হোন

— পরামর্শ দিচ্ছেন ডায়েটিশিয়ান রেশমী রায়চৌধুরী।উৎসবের মরশুম থেকে আবার রোজকার জীবন। অফিস-স্কুল কলেজ সব খুলে গেছে। আর এরই মাঝে মনটা খচ খচ করছে! ছুটি শেষে ছোটা শুরু হল বলে নয়। ওজনটা বেড়ে গেছে বলে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৫৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

উৎসবের মরশুম থেকে আবার রোজকার জীবন। অফিস-স্কুল কলেজ সব খুলে গেছে। আর এরই মাঝে মনটা খচ খচ করছে! ছুটি শেষে ছোটা শুরু হল বলে নয়। ওজনটা বেড়ে গেছে বলে।

Advertisement

আসলে দুর্গাপুজো মানেই হই-হুল্লোড়। খাওয়া-দাওয়া। রাত জাগা। হাজারো অনিয়ম। ঠাকুর দেখা। আড্ডা।

এত কিছুর মাঝে ডায়েট চার্টের দফারফা। আসলে নিয়ম ভাঙাটাও কিন্তু নিয়মের মধ্যে পড়ে। কিন্তু দুর্গাপুজোর ক’টা দিন যেভাবে নিয়মের বাইরে গিয়ে রাত জেগেছেন, প্রাণে যা চেয়েছে তাই খেয়েছেন, ফুচকা থেকে বিরিয়ানি, রোল বাদ যায়নি কিছুই।

Advertisement

কিন্তু এ বার রাশ টানুন।

চলুন নিয়ম মতে। ফিরিয়ে আনুন আগের ওজন। শুধু মহিলারাই নন এখন তো পুরুষরাও ফিগার কনশাস। রোজকার খাবারে একটু পরিবর্তন আনুন, তা হলে ফল মিলবে। হুট করে ওজন না কমিয়ে একটু ধৈর্য ধরুন। দেখবেন ওজন আপসে বশে আসছে।

রোজ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যা খান, সেটাকেই নিয়মে বাঁধুন।

ওজন কমানোর প্রথম শর্ত হল খাবারে ব্যালান্স। ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার কোনওটাই স্কিপ করবেন না। অনেকেই ভাবেন ব্রেকফাস্ট বাদ দিলে বা কম খেলে রোগা হয়ে যাবেন। এই ধারণাটা একেবারে ভুল। প্রতিদিনের সুষম-সঠিক খাবারই আপনাকে রোগা করতে পারে। খাওয়া বাদ দেওয়াটা কোনও মতেই সমাধান নয়।

ওজন কমানোর টিপস

ব্রেকফাস্টে থাকুক দই। মুসলি। সঙ্গে যে কোনও ফল। আবার দই, মুসলি, ফল মিশিয়েও খেতে পারেন। তবে মুসলি পছন্দ না হলে দই দিয়ে অন্য কিছু খেতে পারেন।

লাঞ্চে থাকুক ভাত, ডাল, সব্জি, আর অতি অবশ্যই স্যালাড ও দই। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে সব্জি খান। ডাল না খেয়ে ডালের জল খেলে ভাল। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে আবার প্রোটিনের মাত্রাও ঠিক থাকে।

এখন মিক্স ডাল পাওয়া যায়। সেটাও খেতে পারেন। বেশ উপকারী।

রাতে ভাত বা রুটি যাই খান না কেন, খেয়াল রাখবেন মাপটাই আসল। পাতে থাকুক স্যালাড, এক বাটি সব্জি। আর মাছ বা চিকেন মাস্ট।

দিনে দু বার দই খাওয়াটা খুব জরুরি। সেটা যে ফর্মেই হোক না কেন। লস্যি খেলে খুব ভাল। অথবা ভাতের সঙ্গে দই খান।

রাত দশটার পরে ডিনার করার অভ্যেস থাকলে সেটাও বদলে ফেলতে হবে। রাত নটার মধ্যে ডিনার সারুন। ডিনার করে আধশোয়া অবস্থায় টিভি দেখার অভ্যেসটা এ বার পাল্টে ফেলুন। রাতের খাওয়া দাওয়ার পরে আরাম করে টিভি দেখার অভ্যেসেটাও বদল জরুরি। রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে একটু পায়চারি করুন। ডিনার সেরে ফেলার দেড় ঘণ্টা পরে ঘুমোতে যান।

বিজয়া উপলক্ষ্যে আত্মীয়জস্বজন, বন্ধুবান্ধবদের বাড়ি তো যেতেই হবে। তবে মিষ্টি যে আপনি খাচ্ছেন না জানিয়ে দিন আগে থেকেই। এতে আত্মীয়দের পীড়াপীড়ার চোটে বাধ্য হয়ে মিষ্টি খাওয়াটা এড়াতে পারবেন। শুধু মিষ্টি নয় চা-কফিতে চিনিটাও বন্ধ করুন। ঘি, মাখন খাবেন না। ডায়েট চার্টের বাইরে রাখুন আলু। ভাজাভুজি নো নো। মাছ ছাড়া আর কোনও কিছুই ডুবো তেলে ভাজা খাবেন না।

আরও দুটি জিনিস খুব ইম্পর্ট্যান্ট। শরীরে জলের পরিমাণ আর ঠিকঠাক ঘুমোনো। দিনে সাড়ে তিন থেকে চার লিটার জল খান। তবে একবারে এক লিটার জল খেয়ে ফেললেন আবার অনেকটা সময় জল না খেয়ে কাটালেন তা না হয়। ব্রেকফাস্টের আর লাঞ্চের মাঝে দেড় লিটার জল খান। দিনের বাকি সময়ে হিসেব করে বাকি জলটা খেয়ে ফেলুন।

ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমোনো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। খাবার হজমের সঙ্গে ঘুমোনোর একটা সম্পর্ক আছে।

খেয়াল রাখবেন আপনার প্রতিদিনের প্রতিটি খাবারে (ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার) কার্বোহাইড্রেড, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস যেন থাকে। হুট করে ক্যালোরি কমানোর চেষ্টা করবেন না। তাতে হিতে বিপরীত হবে।

এ ভাবে এক মাস চললেই দেখবেন পুজোয় পাওয়া বাড়তি ওজন ঝরিয়ে আবার স্লিম, ট্রিম হয়ে উঠেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন