Sanjana Sanghi

২৩ বছরের আর পাঁচটা মেয়ের মতো আমার পরিস্থিতি নয়: সঞ্জনা সাংঘি

প্রথম ছবি রিলিজ়ের আগেই ঘটনাবহুল ছিল তাঁর জীবন। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি উপুড় করলেন সঞ্জনা সাংঘিপ্রথম ছবি রিলিজ়ের আগেই ঘটনাবহুল ছিল তাঁর জীবন

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

সঞ্জনা

প্র: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ কেমন ছিল?

Advertisement

উ: সুশান্তের বেশ কয়েক দিন আগে থেকে প্রেপওয়র্ক শুরু করেছিলাম আমি। সুশান্ত তখন অন্য ছবির শুটিং করছিল। ‘দিল বেচারা’র শুটিং শুরু হওয়ার এক মাস আগে মুকেশ ছাবরার অফিসে আমার আর সুশান্তের দেখা হয়েছিল। প্রথম দিন ভীষণ আড়ষ্ট ছিলাম। সেটে যখন দেখা হয়েছিল, তখন ভয় কম ছিল।

Advertisement

প্র: গত দেড় মাসে সুশান্তের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলির মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশি মনে পড়েছে?

উ: আমার সঙ্গে সুশান্তের অনেক মিল ছিল। দু’জনের দিল্লি কানেকশন, নাচ... শামক দাভরের কাছে সুশান্ত আর অ্যাশলে লোবোর কাছে আমি ডান্স শিখেছি। দু’জনেরই বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে ভাল লাগত। শুটিংয়ে ব্রেক পেলে আমাদের আসর বসত। সুশান্ত ওয়াজ় আ গিভার, কোনও সময়ে সাহায্য করতে পিছপা হত না। মনে আছে, জামশেদপুর শিডিউলে একটা দীর্ঘ ইমোশনাল দৃশ্য ছিল। আমি বেশ ভয়ে ছিলাম। সুশান্তের নজরে সেটা পড়েছিল। নিজের স্পটবয়কে দিয়ে আমার জন্য কফি পাঠিয়েছিল। এক বারও সেটে স্টার হিসেবে নিজেকে জাহির করত না। মুখে সব সময়ে হাসি লেগে থাকত।

প্র: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কী রকম ছিল?

উ: এই ছবির জন্য পরিচালক আমাকে বাংলা শিখতে বলেছিলেন। মনে আছে, সেটা স্বস্তিকার সঙ্গে আমার প্রথম রিডিং সেশন ছিল। মুকেশকে জিজ্ঞেস করেছিল স্বস্তিকা, ‘এই বাঙালি মেয়ে কোথা থেকে পেলে?’ সেটা শুনে ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। শাশ্বতদা এবং স্বস্তিকার চেয়ে ভাল অনস্ক্রিন মা-বাবা আর কাউকে পেতাম না। দু’জনেই খুব প্রতিভাবান শিল্পী।

প্র: দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে মাস কমিউনিকেশন-এ স্নাতক হয়েছেন। গোল্ড মেডেলিস্ট সঞ্জনার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসা নিয়ে পরিবারের আপত্তি ছিল?

উ: আসলে অভিনয়ে হাতেখড়ি খুব অল্প বয়সে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে আমি ইমতিয়াজ় আলির ‘রকস্টার’-এ ম্যানডির চরিত্রে কাজ করি। মুকেশ ছাবরাই ওই ছবিতে কাস্ট করেছিলেন। মা-বাবার আমার উপরে অগাধ আস্থা। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে সিনেমাকেও ভালবেসেছি।

প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে আসার আগে ‘নেপোটিজ়ম’, ‘আউটসাইডার’, ‘ইনসাইডার’... এই শব্দগুলোয় ভয় পেতেন?

উ: একদম নয়। মা-বাবা সব সময়ে শিখিয়েছেন, কঠিন পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। ‘রকস্টার’ ছবিতে অভিনয় করার পরে প্রায় একশোর উপর কমার্শিয়ালে কাজ করি। পড়াশোনা করতাম ঠিকই। কিন্তু নিজের প্যাশনকে ভুলে যাইনি।

প্র: আপনার মুম্বই ছাড়ার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে তো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল...

উ: এত তাড়াতাড়ি ইন্ডাস্ট্রিকে বাই বাই কেন করব? আমার এখন অনেক কাজ বাকি। মার্চ মাস থেকেই আমি দিল্লিতে ছিলাম। পুরো লকডাউন পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছি। মুম্বই পুলিশ আমাকে ডেকেছিল সুশান্তের মামলায় বয়ান দিতে। তার পরে আবার দিল্লি ফেরত আসি। লকডাউনে মুম্বইকে শুনশান দেখতে আমার ভাল লাগছিল না। এখন লোকজন খুব তাড়াতাড়ি জাজমেন্টাল হয়ে পড়ছেন।

প্র: সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে আপনাকেও অনেক কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। কী ভাবে সামলাচ্ছেন নিজেকে?

উ: তেইশ বছরের আর পাঁচটা মেয়ের মতো আমার পরিস্থিতি নয়। এই অভিজ্ঞতা আমাকে অনেক বেশি পরিণত করেছে। মানসিক ভাবে শক্ত থাকতে আমার পরিবারেরও সাহায্য পেয়েছি। মা-বাবা সব সময়ে শিখিয়েছেন, সৎ থাকতে। নিজের লক্ষ্যে যেন অবিচল থাকি আর লোকের কথায় যেন বেশি কান না দিই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন