পাভেল
প্র: ‘সোনার পাহাড়’ এত প্রশংসিত ছবি। কিন্তু টাইটেল কার্ড ছাড়া আর কোথাও আপনার নাম নেই কেন?
উ: ‘সোনার পাহাড়’ নিয়ে আপনাদের কাগজে প্রথম যে লেখাটা বেরিয়েছিল সেখানে ছিল, দেড় বছর অন্ধকার ঘরে বসে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন। পাভেল তখন কী করছিল? ‘বাবার নাম গান্ধীজি’র সাইনিং যখন হচ্ছিল, তখনই পরমদা আমাকে বলেছিল ওর জন্য একটা স্ক্রিপ্ট লিখে দিতে। ওর মায়ের লেখা কতকগুলো গল্প পড়তেও দিয়েছিল আমাকে। সেগুলো পড়ে আমার অন্তত মনে হয়নি যে, ওগুলো থেকে সিনেমা করা যায়। পরমদাকে বলেও ছিলাম। ও বলেছিল, একজন মা, তার একাকিত্ব, ছেলের সঙ্গে টানাপড়েন— এ রকম কিছু বানাতে চায়। পুরোটাই কনসেপ্ট লেভেলে। কিন্তু ‘সোনার পাহাড়’ নামটা, নমিতা মাসির চরিত্র, তনুজা-শ্রীজাতর অ্যাডভেঞ্চার, ‘দ্য কাইট রানার’-এর অনুষঙ্গ সবই তো আমার! সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রটা পরমদা পরে যোগ করেছিল। কিন্তু শূন্য থেকে শুরু করলে স্ক্রিপ্টটা আমিই লিখেছিলাম।
প্র: পরমব্রতর সঙ্গে এই নিয়ে সরাসরি কথা হয়েছে?
উ: লেখাটা বেরোনোর পরেই হয়েছিল। পরমদা আমাকে তখন বলেছিল, জার্মানি থেকে হোয়্যাটস অ্যাপ কলে কথা হয়েছে। তাই সাংবাদিক কী শুনতে কী শুনেছে! ওকে পাল্টা বলেছিলাম যে, আমার তো তোমাদের মতো অত নাম নেই। এই নামটা বেরোলে আমার একটু সুবিধে হতো। আমাকে ছবির সাংবাদিক বৈঠক বা শুটিং কোথাও ডাকা হয়নি। চাইলে যেতে পারতাম। কিন্তু আমার বালতি বালতি ইগো।
প্র: অন্যদের জন্য চিত্রনাট্য লেখা ছেড়ে দেবেন?
উ: প্রথমে রেগে গিয়ে তাই ভেবেছিলাম। তার পরে দু’জন মানুষের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত বদলেছি— এক জন হরনাথ চক্রবর্তী। আর এক জন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তবে এ বার থেকে নিজের টার্মসে লিখব। পারিশ্রমিকও বেঁধে দিয়েছি। এবং এখন থেকে কারও জন্য লিখলে পাভেল একাই ক্রেডিট নেবে। তার পরে পরিচালক যদি স্ক্রিপ্টে কিছু যোগ করেন বা পাল্টান, তা হলে অ্যা়ডিশনাল স্ক্রিনপ্লে বা অ্যাডিশনাল ডায়লগে তাঁর নাম যাবে।
প্র: জিতের জন্য চিত্রনাট্য লিখছেন। এত দিন যে ধরনের ছবি করে এসেছেন, এটাও কি সে রকমই ছবি?
উ: একদমই না। ছবিটা আমার জন্যও নতুন হবে, জিৎদার জন্যও।
প্র: আপনি তো গুপী-বাঘাও করতে চান...
উ: হ্যাঁ, আমার কাছে যে স্ক্রিপ্টটা লেখা ছিল, সেটা নিয়ে প্রথমে বুম্বাদার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) কাছে গিয়েছিলাম। ওঁর পছন্দও হয়েছিল। তার পরে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। এক দিন খবরে দেখলাম, বুম্বাদা গুপী-বাঘা নিয়ে ছবি প্রোডিউস করবেন এবং তার পরিচালক ঠিক নেই। আমার কারও উপরে রাগ নেই, কিন্তু কোনও না কোনও দিন আমিও গুপী-বাঘা করব।
প্র: ঋতুপর্ণার সঙ্গে মিউজ়িক্যাল বানাচ্ছেন শোনা যাচ্ছে?
উ: এখনই কিছু বলতে পারছি না। কিন্তু ছবির নাম ‘সেতার’।
প্র: সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও তো আপনার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। ওঁকে কি ব্যাকফুটে রেখেছেন?
উ: এ বাবা! এই মুহূর্তে জিৎদার ছবিটা করব। তার পরে ডিসেম্বর পর্যন্ত আর কিচ্ছু পারব না। সামনের বছরের শুরুতে একটা কাজ শুরু করার কথা আছে। তার পর হয়তো ঋতুদির ছবিটায় হাত দেব। এই কাজগুলো সেরে ফেলার পরে যদি সৃজিতদা সুযোগ দেয়, নিশ্চয়ই করব।
প্র: সামনের বছরের প্রথমে যে হিন্দি ছবির কাজ শুরু করছেন, সেটায় রাজকুমার রাও আছেন?
উ: না তো! ওটারও কিছু ফাইনাল হয়নি।