‘কম ছবি বানাই, কিন্তু বানালে ভাল বানাই’

নিজের অফিসে বসে আনন্দ প্লাসের সঙ্গে আড্ডা দিলেন পরিচালক রাজকুমার হিরানিনিজের অফিসে বসে আনন্দ প্লাসের সঙ্গে আড্ডা দিলেন পরিচালক রাজকুমার হিরানি 

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০০:০০
Share:

রাজকুমার

প্র: আপনার কেরিয়ারের প্রথম বায়োপিক ‘সঞ্জু’। ছবিটা বানানোর বিশেষ কোনও কারণ?

Advertisement

উ: সঞ্জু যখন প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিল জেল থেকে, আমি ওর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সে দিন ও অনেক কিছু শেয়ার করেছিল। আট ঘণ্টা কাটিয়েছিলাম ওর বাড়িতে। পর দিন আবার ফোন করে ডেকেছিল আমাকে, সে দিনও অনেক ক্ষণ ছিলাম। ফিরে এসে মাথায় শুধু একটাই চিন্তা! সঞ্জুর সম্পর্কে আমরা যা জানি, তার সব মিডিয়াই আমাদের জানিয়েছে। কিন্তু গত দু’দিনে আমি যা জানলাম, সেগুলো তো কেউ জানে না! সঞ্জু মনপ্রাণ খুলে সব স্বীকার করেছিল আমার কাছে। এক জন পরিচালক হিসেবে যা আমার মনকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছিল, সেটা হল বাবা-ছেলের সম্পর্ক। বাড়িতে কী রকম পরিবেশ ছিল, বাবা এবং বোনেদের সঙ্গে কী কথাবার্তা হতো— সব কিছু সঞ্জু আমাকে বলেছিল। সেই সময়ে আমি আর চিত্রনাট্যকার অভিজাত জোশী ‘মুন্নাভাই’ লিখছিলাম। কিন্তু তখন ‘সঞ্জু’র গল্পটা বলার লোভ জেগেছিল আমার মনে। অভিজাতকে ডেকে তাই এই ছবিটার কাজ শুরু করলাম।

প্র: সঞ্জয়কে রাজি করানো কঠিন ছিল?

Advertisement

উ: না। আমি প্রথম দিনই সঞ্জুকে বলে দিয়েছিলাম, তোমার গল্পকে গ্লোরিফাই করার জন্য আমি এই ছবি বানাব না। যে সততার সঙ্গে তুমি আমাকে তোমার গল্প শুনিয়েছ, আমি ঠিক সে ভাবেই ছবিটা বানাব। ৩০৮ জন গার্লফ্রেন্ড বা নিজের কাছে বন্দুক রাখা বা মাদকাসক্তি নিয়ে ক’জন কথা বলতে পারে?

প্র: আপনি সুনীল দত্তের সঙ্গেও কাজ করেছেন ‘মুন্নাভাই’তে। সেই অভিজ্ঞতার কথা বলবেন?

উ: পুরোদস্তুর জেন্টলম্যান ছিলেন। সেটে আসার আগে পুরো স্ক্রিপ্টটা উর্দুতে চেয়েছিলেন। কারণ ওঁর জমানায় উর্দুতে স্ক্রিপ্ট পড়া হতো। সময়ের আগে পৌঁছতেন। এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করতেন, ‘তোমার হিরো (সঞ্জয় দত্ত) কখন আসবে’? সঞ্জু ওয়াজ় অলওয়েজ় লেট! কিন্তু দত্তসাব সব সময় উদগ্রীব হয়ে থাকতেন, কখন সঞ্জুর সঙ্গে সিন হবে। সঞ্জু আবার খুব ভয় পেতেন দত্তসাবকে। কিন্তু দু’জনের মধ্যে সীমাহীন ভালবাসা ছিল।

প্র: রণবীর কপূরকে সঞ্জয় দত্ত হিসেবে ভাবলেন কেন?

উ: প্রথম থেকে রণবীর আমার মনেই ছিল। ২১ বছরের সঞ্জু ‘রকি’তে ডেবিউ করেছিল। সেই চেহারা আর ‘সাওয়ারিয়া’র রণবীর কপূরের চেহারার অনেক মিল। আমরা রণবীরকে ৩-৪ মাস সময় দিয়েছিলাম। ও প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছিল। অনেক লুক টেস্ট হয়েছিল। কখনও পাশ, কখনও ফেল করেছে— কিন্তু হাল ছাড়েনি। সঞ্জয় দত্ত যেহেতু এক জন বিখ্যাত অভিনেতা, তাই চেহারায় একটু হলেও মিল থাকা জরুরি ছিল। ভেবে রেখেছিলাম, চেহারা না মিললে ছবিটা করব না।

প্র: ‘সঞ্জু’র পর অভিনেতা হিসেবে রণবীর সম্পর্কে আপনার ধারণা?

উ: রণবীর অসাধারণ! পরিচালকদের কাছে ওর মতো অভিনেতা থাকা মানে রক সলিড সাপোর্ট। আমরা সকলেই এই ছবিটার পিছনে ৩ বছর দিয়েছি। এক বারের জন্যও রণবীর অভিযোগ করেনি। সকাল ৭টায় কল টাইম থাকলে ভোর ৩টেয় এসে যেত। প্রস্থেটিক মেকআপ করতে ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগত বলে।

প্র: আপনার সঙ্গে গোটা ইন্ডাস্ট্রি কাজ করতে চায়। আপনি কার সঙ্গে কাজ করতে চান?

উ: শাহরুখ খান, সলমন খান, বরুন ধওয়ন সকলের সঙ্গেই। তবে আমার ছবি বানানোর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ চিত্রনাট্য। আমার স্ক্রিপ্ট নির্ণয় করে কাস্টিং, উল্টোটা নয়। কম ছবি বানাই কিন্তু বানালে ভাল বানাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন