‘পরের ছবিতে জোয়া একা অভিযানে যাবে’

প্রথম দুটো ছবির টাইটেলে নাম নেই জোয়ার। যার জন্য মজার ছলেই এমনটা বলেছেন ক্যাটরিনা কাইফ গলাবন্ধ ওই পোশাকে তিনি খুব একটা স্বচ্ছন্দ বোধ করছিলেন না। সাক্ষাৎকার শুরুর আগে সে কথা বলেও ফেললেন।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০৫
Share:

ক্যাটরিনা

মেহবুব স্টুডিয়োয় একটি বড় ঘর। খাঁ খাঁ করছে কয়েকটি চেয়ার। ঘরের মাঝখানে একটি টেব্‌ল। যার এক পাশে চেয়ারে বসেছিলেন ক্যাটরিনা কাইফ। ডিপ গ্রিন রঙের শর্ট ড্রেসে নায়িকাকে দেখে মনে হচ্ছিল, মরুভূমিতে একফালি মরূদ্যান। তবে গলাবন্ধ ওই পোশাকে তিনি খুব একটা স্বচ্ছন্দ বোধ করছিলেন না। সাক্ষাৎকার শুরুর আগে সে কথা বলেও ফেললেন। কলকাতার প্রতিবেদক শুনে এক গাল হেসেই বললেন, ‘‘মুম্বই এসে নিশ্চয়ই ভাল লাগছে!’’

Advertisement

প্র: ‘এক থা টাইগার’, ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’... টাইটেলে জোয়ার নাম নেই। খারাপ লেগেছে?

Advertisement

উ: না না, লাগেনি (হাসি)। আমি আলিকে বলেছি জোয়া ভি তো জিন্দা হ্যায়... আর সলমনের সঙ্গে এই নিয়ে বেশ খুনসুটি হয়েছে। ওকে বলেছি, পরের ছবিতে টাইগার ঘরে বসে রান্না করবে। আর জোয়া একা অভিযানে যাবে (হাসি)।

প্র: এই ছবিতে জোয়ার চরিত্র কতটা পরিণতি পেল?

উ: যখন আলি প্রথম আমাকে বলল, ‘এক থা টাইগার’-এর সিক্যুয়েল হবে, আঁতকে উঠেছিলাম। এই আইডিয়া আবার কোথা থেকে এল! কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম, এই ছবির সিক্যুয়েল হওয়ারই ছিল। প্রথম ছবিতে টাইগার-জোয়ার প্রেম দেখানো হয়েছে, তবে ছবির শেষ ছিল ওপেন-এন্ডেড। অভিযানে থাকাকালীন টাইগার-জোয়ার কেমিস্ট্রি কী ভাবে কাজ করছে, কী ভাবে তারা কর্তব্যের ডাকে সাড়া দেবে সেটাই এই ছবির বিষয়। ভালবাসা ও কর্তব্যের দ্বন্দ্ব এখানে নেই।

আরও পড়ুন: টাইগারের থাবা ঠেকাতে দাঁতনখ মহারাষ্ট্রে

প্র: আপনি তো আলির প্রথম ছবিরও নায়িকা...

উ: পরিচালকের আগে ও আমার খুব ভাল বন্ধু। এমন বন্ধু যার সঙ্গে আমার ভাব বিনিময়ের একটা অন্য ভাষা আছে। তা সাধারণ মানুষ বুঝবে না। পরিচালক হিসেবেও ও অনেকটা পরিণত হয়েছে। তবে কী জানেন, ও যা করে নিঃশব্দে। ওর কাজ নিয়ে ও বেশি ঢাকঢোল পেটায় না।

(সাক্ষাৎকারের মাঝেই অবশ্য বন্ধুর ডাক এল। উত্তর শেষ না করেই আলির সঙ্গে বেরিয়ে গেলেন। ফিরলেন প্রায় মিনিট পনেরো পর।)

প্র: এটা কি মানবেন, সলমনের সঙ্গেই অনস্ক্রিন আপনাকে সবচেয়ে ভাল দেখতে লাগে?

উ: যদি আপনি বলেন, আমি মেনে নেব (হাসি)। দর্শকের অনেকে বললে মেনে নেব। আসলে ছবির টার্গেট দর্শক আমি নই। তাই আমার মতামতের চেয়েও দর্শক কী ভাবছেন, সেটা জরুরি। আর আলি আমাকে ভালই চেনে। ‘সুলতান’-এর পর সলমনকেও। তাই আমাদের দু’জনকে কী ভাবে দেখালে সবচেয়ে ভাল লাগবে, সেই শৈল্পিক বোধ ওর আছে।

প্র: সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সলমন আপনার মেন্টর নন...

উ: ইন্ডাস্ট্রিতে আমার কোনও মেন্টর নেই। আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা সকলেই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমি যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সব আমার চয়েস। হতে পারে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে অন্য চয়েস নিতে পারতাম। সলমনের এটা ভাবতে ভাল লাগে যে, ও আমার মেন্টর। কিন্তু ও নয় (হাসি)। তবে আমি বলব, সলমন হচ্ছে এমন একজন মানুষ যার মতামত, কথা আমি সব সময় সিরিয়াসলি শুনি। সলমনের ক্ষেত্রে ট্রিক হল, ওর কোন কথা শুনতে হবে, সেটা জানা জরুরি। আমি জানি, ও আমার ব্যাপারে যা বলবে, ঠিকই বলবে। সলমনও জানে, আমি ওর ব্যাপারে সঠিক জিনিসটাই বলব। আমাদের এই বোঝাপড়াটা বেশ ভালই। সলমন ছাড়া আরও এক জন যাঁর কথা আমি মন দিয়ে শুনি, তিনি হলেন আদিত্য চোপড়া। উনি আমার প্লাস-মাইনাস দুটো দিকই ভাল করে বোঝেন। আর আমার কাজকে সম্মান দেন।

প্র: বেশির ভাগ ছবিতে আপনার বিপরীতে বড় অভিনেতারা থাকেন। এমন ছবি কি করবেন যেখানে আপনিই হিরো, হিরোইন নন?

উ: এই প্রশ্নটার উত্তর আমি ভেঙে ভেঙে বলব। প্রথমত, হিরো-হিরোইনের বিভাজন আমার কাছে নেই। আমি মহিলা, আর আমার বিপরীতে যে অভিনেতা রয়েছেন, তিনি পুরুষ। ব্যস, আমি এ ভাবেই বিষয়টাকে দেখি। প্রথমে আমি ছবির গল্প দেখি। এ বার সেই ছবিতে পাঁচ জন থাকুক, একজন বড় অভিনেতা থাকুক, আমার কাছে ম্যাটার করে না। আর একটা বিষয় কী জানেন, ছবি হল পরিচালকের মাধ্যম। তাই প্রথমে গল্প, তার পরই হচ্ছে পরিচালক। তিনি আমাকে কী ভাবে দেখাতে চাইছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। তার পর আসে আমার চরিত্র। আর প্রতিটা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এই বিষয়ে আলাদা। আমি নাচতে ভালবাসি। যখন আমি বৈভবী মারচেন্ট, বস্কোর সঙ্গে কাজ করছি, আমি নাচ সেলিব্রেট করছি। দর্শকের মন ভোলাতে বা তাদের সুপ্ত ইচ্ছে উস্কে দিতে নয়। কেউ কেউ হয়তো নাচ পছন্দই করেন না। বাকিরা মহিলাকেন্দ্রিক চরিত্র করছেন বলেই আমাকে করতে হবে, এটা আমি মানি না। আমি, আলিয়া, দীপিকা, সোনম... সকলের ব্যক্তিত্ব আলাদা, পছন্দ-অপছন্দ আলাদা। ইন্ডাস্ট্রির উচিত, আমাদের এই স্বকীয়তাকে সেলিব্রেট করা। কেন সকলে একে অপরের ক্লোন হতে যাব? আর আমি যে ধরনের চরিত্র করি, সেগুলোও যথেষ্ট পাওয়ারফুল।

প্র: আলিয়া ভট্ট কি আপনার নতুন বেস্ট ফ্রেন্ড?

উ: না, আলিয়ার অন্য বেস্ট ফ্রেন্ড আছে (হাসি)। আমাদের বন্ধু সার্কল কমন। জিমেও ওর সঙ্গে দেখা হয়। আমি বুঝি, আমাদের একসঙ্গে ছবি দেখে লোকে কথা বলে, আনন্দ পায়। আসলে আমাকে বুঝতে পারে এমন লোক কমই আছে। আলিয়া আর আমি পরস্পরকে ভাল বুঝি।

প্র: নিউ ইয়ারের কোনও নতুন প্ল্যান?

উ: আমি আর আলি যৌথ ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ২৩ ডিসেম্বর ঠিক করব, ‘অব হমারা নেক্সট প্ল্যান ক্যায়া হোগা?’ (হাসি)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন