Rukmini Maitra

দেবকে নিয়ে পজেসিভ? কী বললেন রুক্মিণী?

সম্পর্কে আবার স্পেস কী? তা হলে নাসায় গিয়ে থাক।আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় বললেন রুক্মিণী। সম্পর্কে আবার স্পেস কী? তা হলে নাসায় গিয়ে থাক।আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় বললেন রুক্মিণী।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১১:০৭
Share:

রুক্মিণী মৈত্র।

সুইগি থেকে অর্ডার করছেন তিনি। স্পাইসি বা ফ্রায়েড। সঙ্গে কোকও আছে। আর আছে লাড্ডু, তালক্ষীর। এরকম একটা জম্পেশ মেনু অর্ডার করে যিনি গল্প করতে বসলেন তাঁর লাবণ্য আর টোল পড়া হাসিতে মুগ্ধ ‘দেব’ আর ‘নর’গণ। রুক্মিণী মৈত্র আগামী ছবি ‘পাসওয়ার্ড’থেকে দেবের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অকপট আনন্দবাজার ডিজিটালের সামনে।

Advertisement

আপনি সত্যি এই খাবারগুলো খান?

Advertisement

আমার মেটাবলিক রেট জন্ম থেকেই হাই, তাই আমাকে ডায়েট করতে হয় না, জিম যেতে হয় না। তবে ‘পাসওয়ার্ড’-এর সময় কমলদা বলেছিল আরও রোগা হতে। মানে যাতে হাতের শিরা, জ লাইন দেখা যায়।

‘পাসওয়ার্ড’-এ তো বাইক চালিয়েছেন। সব স্টান্ট নিজে করেছেন...

আজ একটা কথা বলি। এটা সম্পূর্ণ আমার মত। ‘পাসওয়ার্ড’-এ আমি যে চরিত্র করেছি সেটা গত দশ বছরে কমার্শিয়াল ছবিতে কোনও হিরোইন করেছে বলে আমার অন্তত মনে হয় না। আমি সাইকেলই চালাতে পারতাম না তো বাইক। তখন ‘কিডন্যাপ’-এর শুটিং চলছে, তার মধ্যে আমাকে সাইকেল শিখতে হয়। তারপর স্কুটি। তারপর বাইক।আর স্টান্টগুলো আমি সব নিজেই করেছি। এটা যদি না করি তো ছবিতে কাজটা কী করলাম? শুধু নাচ-গান করে কী হবে? ছোটবেলায় বলতাম, অভিনয় করতে হলে আমি হিরো হব। হিরোইন নয়।

দু’বছরেই চার চারটে ছবি। আজ কি হিরো হতে ইচ্ছে করে?

'পাসওয়ার্ড'-এর চরিত্র নিশা চ্যাটার্জিভীষণ ভাবে ফিজিকালি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র। কোনও হিরোর থেকে কম নয়। আমার আগের চরিত্রগুলো থেকে একদম আলাদা। আর এখন বাংলা ছবিতে কনটেন্ট, চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে। তবে আবার বলছি, বাংলা ছবিতে এরকম হিরোইন চরিত্র আগে দেখা যায়নি।আসলে ছবিটাই আলাদা একেবারে আজকের জীবন নিয়ে। এই যে ‘পাসওয়ার্ড’-এর ট্যাগলাইন ‘ইউ আর বিয়িং ওয়াচড’, এটা খুব সত্যি।আমরা সবাই সাইবার ক্রাইমের শিকার। চোরকে চোখে দেখিনি বলে হয়তো বিশ্বাস করি না। কিন্তু এই চোর তো আমার মোবাইলেই আছে, ভাবুন তো! কী ভয়ঙ্কর! বাংলায় এত বড় মাপের সাইবার ক্রাইম থ্রিলার এই প্রথম। বাংলা ছবিকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যেতে চাই আমরা।

দেবের সঙ্গে রুক্মিণী

আমরা মানে আপনি আর দেব?

আরে!আমরা বলতে পুরো ‘পাসওয়ার্ড’টিম। পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। যিনি আমায় এই চরিত্রটা অফার করেছেন। আমার ওপর ভরসা করেছেন।

আরও পড়ুন-‘চুম্বনের দৃশ্যের রিহার্সাল’ দিতে বলেন পরিচালক! বিস্ফোরক জারিন খান

আপনার প্রতি ইন্ডাস্ট্রির ভরসা বাড়ছে।শুধু রুক্মিণীকে নিয়ে নারীকেন্দ্রিক ছবি হবে না?

দেখুন, নারীকেন্দ্রিক বলে কিছু হয় না। মানে আমি বলতে চাইছি ছবিতে সব চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ। একা পারফর্ম করলে তো সিনটা দাঁড়াতে পারে না। হ্যাঁ, স্ক্রিপ্ট পুরুষকেন্দ্রিক হয়। কিন্তু সে ভাবে দেখতে গেলে ‘কবীর’-এ গল্প বলা কিন্তু আমার জায়গা থেকেই। ‘ককপিট’-এ আমার আর কোয়েলের সমান গুরুত্ব ছিল। কোনও ছবি করার ক্ষেত্রে আমি ভাবি সেই ছবিতে যদি ফিমেল প্রটাগনিস্ট না-ই থাকে তাহলে ছবিতে কতটা ফারাক হবে?ফারাক না হলে ছবি করার মানে হয় না। ‘পাসওয়ার্ড’-এ আমি, পাওলি বা আদ্রিত, কাউকে বাদ দিয়ে ছবিটা দাঁড়াতে পারত না।

(সুইগির অর্ডার আর বাড়ির খাবার হাজির। দেবের অফিসের সবাইকে খাওয়াবেন তিনি)

আচ্ছা, দেবের প্রডাকশন ছাড়া বা দেব ছাড়া কি রুক্মিণী ছবি করবেন না?

হ্যাঁ, এই প্রশ্নটা দরকার ছিল কিছু বিষয় ক্লিয়ার করার জন্য। দেবের প্রডাকশন ছাড়াও রুক্মিণী কাজ করেছে। রানের প্রডাকশনে ‘কিডন্যাপ’। দেবকে সব ছবিতে রুক্মিণীকে নিতেই হবে এটাও ভুল। তার প্রমাণ ‘হইচই আনলিমিটেড’। দেব ‘সাঁঝবাতি’করছে। তাহলে? আমি ভাল চিত্রনাট্য পেলে অন্য প্রডাকশন, অন্য নায়কের সঙ্গে অবশ্যই কাজ করব।

জিতের প্রডাকশন হাউজ থেকে আপনাকে তো কাস্ট করা হয়েছিল। করেননি তো?

হ্যাঁ। জিতের প্রডাকশন থেকে দু’-দুবার কাজের সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ডেট নিয়ে সমস্যা হয়। জিত আর দেব এই নিয়ে কথাও বলে। আর জিৎ বুঝতেও পেরেছেন ডেটের সমস্যা ছিল আমার।ইন্ডাস্ট্রিতে আমাকে আর দেবকে বাদ দিয়েও কাজ করার কথা ভাবা হচ্ছে।আরে, সবে তো দু’বছর হল এসেছি। লোকে ভাবছে আমি যেন দশ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে আছি!সব কাজ কি এক বছরেই করতে হবে নাকি? সময় দিন, তবে এটাও ঠিক, দেব আমার কমফোর্ট জোন হয়ে গেছে।আমিও তো চাই অন্য কোনও নায়কের সঙ্গে কাজ করতে। আমাকেও তো ভাঙতে হবে। এই তো যেমন ‘পাসওয়ার্ড’,এখানে কিন্তু আমার পার্টনার নিয়ে অনেক টুইস্ট আছে।

রুক্মিণীর অন্য লুক

কীরকম?

‘পাসওয়ার্ড’-এ আমার তিনটে হিরো! (হাসি)না না, এই সিনেমায় আমি আর পাওলি হিরো।

আপনার হিরো বদল হলে দেব জেলাস হবে না?

দেব গত পনেরো বছর ধরে নানা নায়িকার সঙ্গে কাজ করেছে। ওর জেলাসির প্রশ্ন নেই।

আরও পড়ুন- পরিণীতার সাফল্যের পরেই ‘সুখবর’ দিলেন রাজ-শুভশ্রী

মানে আপনার জেলাস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি?

আমিও তো দশ বছর ধরে মডেলিং করছি। কত রোম্যান্টিক শুট করেছি। শুট করতে করতে এমন অবস্থা, ছেলে তো দূর অস্ত, আমাকে গাছের পাশে দাঁড় করালেও ফাটিয়ে রোম্যান্সের অভিনয় করে যাব। আমার পাশে ছেলে কি মেয়ে,এই জেন্ডারের বিষয়টাই আর কাজ করে না। এই ক্ষেত্রে দেবের থেকে আমি এগিয়ে। (হাসি)

দু’জনের কাজের ক্ষেত্র এক। রেষারেষি আছে?

আমার মনে হয় না। ছোট থেকে বাবা-মায়ের মিউচুয়াল রেসপেক্ট দেখে বড় হয়েছি। দেখেছি একে অন্যকে তুলে ধরতে। দেবের মধ্যেও সেই রেসপেক্টটা আছে।ওর মনটা খুব নরম। মাটিতে পা। রেসপেক্ট আছে আমাদের সম্পর্কে। খুব বোকামি হবে যদি দেবের মতো সুপারস্টারের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করি।আমি দশ পা এগোলে দেব কুড়ি পা এগিয়ে যাবে। আর আমার মধ্যে কোনও ইগো নেই। ইগোতেই সম্পর্ক নষ্ট হয়। আগে সম্পর্ক, তার পরে কাজ।

(রুক্মিণীর পাশে দেব।মন দিয়ে শুনছেন)

নাচের ছন্দে রুক্মিণী

কিন্তু আপনি নাকি খুব পজেসিভ দেবকে নিয়ে?

এটা নেগেটিভ না পজিটিভ অর্থে?

আপনি যে ভাবে বলবেন...

একটা ছেলে যখন মেয়ের খেয়াল রাখে, ফোন করে, সেটাকে বলা হয় কেয়ারিং। আর একই কাজ মেয়ে করলে বলা হয় পজেসিভ! কেন? এটা সমাজ তৈরি করেছে। একজন মানুষ, যে আমার খুব বন্ধু তাকে যদি আমি খেয়াল না করি,তার কথা না ভাবি তাহলে সম্পর্কের মানে কী? ওই যে বলে না, স্পেস! স্পেস! ভাই স্পেসের এত দরকার হলে নাসা-য় গিয়ে থাক। সম্পর্কে আবার স্পেস কী? একে অন্যের খেয়াল রাখাই তো উচিত। এটা কোনও নেগেটিভ ইমোশন নয়। ছেলে ড্রাইভারকেফোনকরে জানতে চাইলে বলবে কি কেয়ারিং ছেলে! সব দিকে নজর। আর মেয়ে একই কাজ করলে বলবে, বাবা, ও সারাক্ষণ নজর রাখছে! এটা কেন হবে?

বাড়ির তৈরি তালক্ষীর রুক্মিণী খাইয়ে দিলেন দেবকে। দেবের অফিসে হাজির কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। ‘পাসওয়ার্ড’-এর প্রমোশন নিয়ে আলোচনা শুরু। একটাই ‘পাসওয়ার্ড’-এ জুড়ে রইলেন দেব-রুক্মিণী!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন