সোহম
প্র: ‘পিয়া রে’, ‘গুগলি’, ‘বাঘ বন্দি খেলা’— তিনটে ছবিতেই আপনি আর শ্রাবন্তী। প্রযোজকও এক...
উ: ‘অমানুষ’, ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে’ এবং ‘শুধু তোমারই জন্য’র জন্য ইতিমধ্যে আমার আর শ্রাবন্তীর জুটি হিট। সেটাই হয়তো প্রযোজক সুরিন্দর ফিল্মস ভেবেছে।
প্র: ‘পিয়া রে’, ‘গুগলি’, ‘বাঘ...’— কোনওটাতেই ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্র নয়।
উ: ঠিকই। ‘পিয়া রে’ নিম্ন মধ্যবিত্ত দু’টি ছেলেমেয়ের প্রেমকাহিনি। ‘গুগলি’ নিয়ে বেশি এক্সাইটেড। এখানে আমি ও শ্রাবন্তী তোতলা। এই সমস্যা তাদের জীবনকে কী ভাবে প্রভাবিত করে, তা নিয়েই ছবি। দুটো ছবিরই পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। এ রকম বাংলা ছবি বোধ হয় আগে হয়নি।
প্র: ‘ব্ল্যাক’, ‘দেখ কেমন লাগে’, ‘জিও পাগলা’, ‘হনিমুন’, ‘আমার আপনজন’... আপনার পরপর ছবি সাফল্যের মুখ দেখেনি। শোনা যাচ্ছিল, এর জন্য নাকি আপনি ছবিও পাচ্ছিলেন না।
উ: পরপর দুটো হিট ছবি দেওয়ার পরেও কিন্তু আমার হাত ফাঁকা ছিল। তখন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। এখন আর এ সব ভাবতে চাই না। কার মনে কী আছে, জানতেও চাই না। তাতে মন খারাপ হয়, রাগও হয়। আবার ভোটের প্রচারের জন্যও নতুন ছবির কাজ হাতে নিইনি। ছবির ব্যর্থতা প্রসঙ্গে বলি, তার দায় অবশ্যই আমাদের। কিন্তু কিছু জায়গায় ধাঁধাঁ রয়ে গিয়েছে। ‘আমার আপনজন’-এর প্রিমিয়ারে দারুণ ফিডব্যাক পেলাম। কিন্তু ছবিটা চলল না। কাল একটা ধাবায় শুটিং করছিলাম। একটি ছেলে এসে বলল, ‘দাদা টিভিতে ‘জিও পাগলা’ দেখলাম। দারুণ ছবি।’ দর্শকের কখন কোনটা ভাল লাগে, বোঝা দুষ্কর। আসলে এক একটা সময়ে এক একটা ট্রেন্ড চলে। আর শুধু আমার ছবি নয়, বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রি কঠিন সময়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে। কলকাতায় দর্শক কমার্শিয়াল ছবির চেয়ে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি দেখতে ভালবাসেন। কিন্তু বাংলা ইন্ডাস্ট্রি বেঁচে আছে কমার্শিয়ালের উপর। দ্বিতীয় হুগলি সেতুটা পেরোলেই বোঝা যায়, ওখানে প্যারালালের বাজার নেই।
প্র: কিন্তু ব্রিজের ও পারেও তো আপনার ছবিগুলো চলল না। রিমেকের ভিড়ে দর্শক তিতিবিরক্ত!
উ: এটা ঠিক যে, এখন আর সেই যুগ নেই যে, দর্শককে যা দেবেন তাই দেখবেন। আর রিমেকের প্রসঙ্গে বলি, আমি মনে করি, একটা উপন্যাস বা ছোট গল্প থেকে সিনেমা করাটাও এক রকমের রিমেক করা। আসলে মাথায় রাখতে হবে রূপান্তর করব, কপি করব না। যেমন একটা দক্ষিণী ছবির বাংলা রিমেকে প্রাতরাশের টেবিলে যদি চরিত্ররা ইডলি খায়, তা হলে সেটা বাঙালি নেবে কেন?
প্র: কিন্তু নিজের রূপান্তরটা কী ভাবে করলেন। ইদানীং নাকি ভীষণ ফিটনেস ফ্রিক হয়ে পড়েছেন?
উ: হতেই হবে। অভিনেতাদের শরীরটাই তো সব। ‘জিও পাগলা’র সময়ে অতিরিক্ত প্রোটিন পাউডার খেয়ে আর ভুল ট্রেনারের হাতে পড়ে ফুলে গিয়েছিলাম। এখন বর্তমান ট্রেনারের হাতে পড়ে এক সপ্তাহে দু’কেজি কমিয়েছি (হাসি)!
প্র: রাজনীতির মাঠেও আপনার অনুপস্থিতি। মাঠ ছাড়লেন নাকি?
উ: না, না। আমি এখন রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ২১ জুলাইয়ের তোড়জোড় চলছে। আর দিদি ভোটে দাঁড়াতে বললে আবার দাঁড়াব।
প্র: কিছু দিন আগে আবার বাবা হয়েছেন। বাবার দায়িত্ব কতটা পালন করছেন? না কি স্ত্রীর অভিযোগ নিয়মিত শুনতে হচ্ছে?
উ: এই মুহূর্তে একদম সময় দিতে পারছি না দুই ছেলেকে। তনয়াই সব সামলাচ্ছে। মাঝে মাঝে রাগ করলেও ও খুব বুঝদার। এরই মধ্যে মধ্যে বড় ছেলে আয়াংশের জন্মদিনে সপরিবার কালীঘাটে গিয়েছিলাম পুজো দিতে। আয়াংশের তিন হল। ছোটটার নাম অধ্যাংশ। সেটি বেশি বিচ্ছু। অবশ্য তনয়ার অধিকাংশ অভিযোগ আয়াংশকে নিয়েই। ও নাকি কখনওই পড়তে চায় না। আমার কথা হল, পড়তে ইচ্ছে না হলে পড়া কেন বাপু? তখন খেললেই হয়। পড়তে যখন ইচ্ছে করবে তখন পড়বে। মুশকিলটা হচ্ছে, আয়াংশের কখনও পড়তে ইচ্ছে করছে না! একেবারে বাপকা বেটা (হাসি)!