ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক।
প্র: ছোট পর্দার খলনায়িকা হলেই কি বেশি পরিচিতি আসে?
উ: আসলে খলনায়িকার বিষয়টা আমার কাছে খুব আকর্ষক (হাসি)। নেগেটিভের মধ্যে যে পাওয়ার প্লে চলতে থাকে, সেটায় মজা লাগে। তার চেয়েও চ্যালেঞ্জিং, নানা রকমের লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্র আমি করতে পারি। আগে যা করেছি, ঘসেটির (বেগম) চরিত্র তার চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। আর বিভিন্ন চরিত্রে লুক নিয়ে যে এক্সপেরিমেন্ট হয়, সেটাও বেশ ইন্টারেস্টিং।
প্র: ইমেজ বদলানোর প্রয়োজন নেই?
উ: কোনও অভিযোগ নেই, আক্ষেপও নেই। সিনেমায় অন্য ধরনের চরিত্র করছি। সব মিলিয়ে আমার কাজ বৈচিত্রময়।
প্র: আপনার চেহারা নিয়ে এক সময়ে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু এই চেহারাই কি এখন বিভিন্ন চরিত্রের ইউএসপি?
উ: কোনও দিক থেকেই আমাকে দেখে বাঙালি মনে হয় না। বরং অনেক বেশি উত্তর-পূর্বের মানুষ বলে মনে হয়। টানা চোখ, লম্বা নাক কিছুই আমার নেই। ইন্ডাস্ট্রিতে যখন প্রথম এসেছিলাম, অনেকেই বলত, ‘তুই টেলিভিশনে কাজ করতে পারবি না।’ সে সব শুনে আমার আরও জেদ চেপে বসত। ফিচার্স আসলে ম্যাটার করে না। ম্যাটার করে ক্যারি করা। বিভিন্ন ধরনের মেকআপ ও কস্টিউম ট্রাই করতে আমি ভয় পাই না। নিজের মেকআপ নিজেই করি। তাতে আমাকে ভয়ঙ্কর দেখাক বা কুৎসিত, আমার কিছু যায় আসে না। চরিত্রের খাতিরে সবটাই করতে রাজি।
প্র: পরপর নেগেটিভ করতে করতে ব্যক্তি চান্দ্রেয়ীর মধ্যে কিছু বদল এসেছে?
উ: (জোরে হাসি) এই প্রশ্নটা আমার মা আর বন্ধুদের করা উচিত। ওরাই বলতে পারবে, আমার মধ্যে কোনও খলনায়িকাকে ওরা দেখতে পাচ্ছে কি না!
প্র: অনীক দত্ত ও ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীর ছবিও করলেন সম্প্রতি...
উ: ‘ভবিষ্যতের ভূত’-এ আমি রূপালি নামে একটি চরিত্র করেছি। ক্যাবারে ডান্সার, তার পাওয়া-না পাওয়া... এর বেশি এখন বলব না। আর ইন্দ্রনীলদার ‘মায়ার জঞ্জাল’-এ আমার অভিনীত চরিত্রটার নাম বিউটি, যৌনকর্মী। চরিত্রটার নিজের সঙ্গেও টানাপড়েন, নিরাপত্তাহীনতার দ্বন্দ্ব তুলে ধরা হয়েছে।
প্র: সময়ের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রি কতটা পাল্টেছে?
উ: কুড়ি বছর কাজ করছি। সময়ের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রি পাল্টেছে। আমিও বদলেছি। যেহেতু নিজের কাজটাকে ভালবাসি, তাই আমিও সময়ের সঙ্গে তাল রেখেই চলব।
প্র: ব্যক্তিগত সম্পর্কও কি সময়ের সঙ্গে পাল্টেছে?
উ: অনেক দিন ধরে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়েই উঠছে না। আমি মানুষটা এত বিক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছি, একা একা ঘুরতে চলে যাই, কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি আর আধ্যাত্মিক জগতেও সময় কাটিয়েছি... একটা সময়ে এত প্রেম করেছি যে এখন মনে হয়, আমার ডোজ় পুরো হয়ে গিয়েছে (জোরে হাসি)। ভাবনাচিন্তায় প্রেম আর আসেই না।
প্র: আপনার সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক রটনা শোনা যায়...
উ: লোকে তো কত কী বলে! আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব না।
প্র: বিয়ের ভাবনাচিন্তা?
উ: একটা মানুষের সঙ্গে সারা জীবন কাটাতে পারব কি না, সত্যিই জানি না। আমি খুব ইন্ডিভিজুয়ালিস্টিক। আমার সঙ্গে থাকা খুব কঠিন। প্রেমের সম্পর্কে ২৪ ঘণ্টা একসঙ্গে না থাকাই ভাল। তা হলে সম্পর্কটা দমবন্ধ হয়ে মরে যায়। এটা আমার একেবারে নিজস্ব মত।
প্র: মায়ের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ওঁর কোনও কথা অমান্য করেছেন?
উ: মায়ের একটা আক্ষেপ, মেয়ে নাচ করল না! আসলে নাচের প্রতি আমার কোনও প্রেম নেই। মা আমার এভরিথিং। আর দিদি থাকে লন্ডনে। ওর সঙ্গেও খুব বন্ধুত্ব।
প্র: কুড়ি বছর আগের চান্দ্রেয়ী আর এখনকার চান্দ্রেয়ীর মধ্যে তফাত আছে?
উ: এখনকার চান্দ্রেয়ীর মধ্যে পাগলামি একটু বেশি (হাসি)! তবে একা ঘুরতে গিয়ে নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করেছি।