Kolkata

Federation vs Producers: প্রযোজকদের অর্থ সাহায্য নিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, হুমকিবার্তা ফেডারেশনের

গত বছর নিতে পারলে এ বছরে নয় কেন? পাল্টা প্রশ্ন কলাকুশলীদের

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২১ ২১:১৪
Share:

সত্যিই এই ধরনের হুমকিবার্তা দিয়েছে ফেডারেশন? প্রতীকী ছবি

ধাপে ধাপে সুর চড়াচ্ছে ফেডারেশন। প্রথমে সংগঠনের নির্দেশ ছিল, ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ নিষিদ্ধ। খবর, শুক্রবার সমস্ত কলাকুশলীদের কাছে এ বার হুমকিবার্তা পাঠিয়েছে গিল্ড। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে এ বারেও সেই বিজ্ঞপ্তি এসে পৌঁছেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিনা পরিশ্রমে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রযোজকেরা পারিশ্রমিক পাঠালে সেই অর্থসাহায্য কলাকুশলীরা যেন গ্রহণ না করেন। যাঁরা নির্দেশ অমান্য করবেন তাঁদের প্রতি আগামী দিনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সংগঠন। এই বার্তায় প্রযোজক-ফেডারেশনের দলাদলি প্রকাশ্যে। আরও একবার এই বার্তাকে কেন্দ্র করে যুযুধান এই ২ শিবিরের পক্ষে-বিপক্ষে ভাগ হয়ে গেলেন টেলিপাড়ার কলাকুশলীরা।

Advertisement

সত্যিই কি এই ধরনের হুমকিবার্তা দিয়েছে ফেডারেশন? আনন্দবাজার ডিজিটালকে সংগঠনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সাফ জবাব, ‘‘আমরা যা বলার তা ১৫ পাতার বিবৃতিতে জানিয়েছি। আলাদা করে কোনও হুমকিবার্তা কাউকে দেওয়া হয়নি। সবটাই আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’’

ফেডারেশন সভাপতি পুরো ঘটনা অস্বীকার করলেও হুমকিবার্তার কথা মেনে নিয়েছেন টেলিপাড়ার একাধিক কলাকুশলী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলাকুশলীর দাবি, ‘‘আমরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই ধরনের বার্তা পেয়েছি। বলা হয়েছে, প্রযোজকেরা কাজ না করার পরেও মাইনে হিসেবে অনলাইনে টাকা পাঠালে সেই টাকা তুলে ফেডারেশনকে জমা দিতে হবে। কথা না মানলে শাস্তিমূলক পদাক্ষেপ করা হবে।’’ যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও অর্থসাহায্য তিনি পাননি, এ কথাও জানিয়েছেন। পেলে কী করবেন? সে কথা এখনও ভেবে দেখেননি ওই কলাকুশলী । একই সঙ্গে তিনি এ কথাও জানিয়েছেন, যে তাঁর কাছে ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ গ্রহণযোগ্য। কারণ, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এই পথ দেখিয়েছেন। কিন্তু কার্যত লকডাউনের সময় পান্থনিবাস, অতিথিনিবাস বা গুদাম ঘরে গিয়ে শ্যুটিং করা মেনে নিতে পারছেন না তিনিও। তাঁর কথায়, এতে রাজ্য সরকারকে অমান্য করা হচ্ছে। যদিও তাঁর দাবি, এখনও কোন কলাকুশলী নির্দেশ অমান্য করে বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করেননি।

Advertisement

কী বলছেন বাকি কলাকুশলীরা? তাঁরা কাদের পক্ষে? সাউন্ড রেকর্ডিস্ট সুব্রত মাইতি কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তাঁর প্রশ্ন, গত বছরেও কাজ না করেই মাসমাইনে বহাল রেখেছিলেন প্রযোজকেরা। কলাকুশলীরা সেই অর্থসাহায্য নিয়েছিলেন। এ বছর সেই সাহায্য নিলে দোষ কোথায়? তাঁর যুক্তি, গত বছর তবু নানা জন সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। এ বছর কাউকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না। সবার খারাপ অবস্থা। প্রযোজকেরা যদি এমন দিনে পাশে দাঁড়ান তা হলে তাঁদের সাহায্য নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী দিনে তাঁরাই কাজ এবং অর্থ ২টোই দেবেন। সু্ব্রত-র আরও যুক্তি আগে জীবন তার পর কাজ। অর্থের অভাবে না খেতে পেয়ে মরে গেলে কে, কার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন?

বাকি কলাকুশলীদের কথাতেও সুব্রত-র কথার সুর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্যামেরাম্যান স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্রযোজকেরাই তাঁদের সারা বছর কাজ দেন। ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ বন্ধ হয়ে গেলে ধারাবাহিকের গতি থেমে যাবে। দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেবে। তখন সবার উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ক্যামেরাম্যানের প্রশ্ন, তখন কী হবে? ফেডারেশন কি সবার দায়িত্ব নেবে? তাই বিপদের দিনে যাঁরা অর্থসাহায্য দিয়ে পাশে দাঁড়াতে চাইছেন সেই প্রযোজকদের পক্ষেই তিনি। আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত কার্যত লকডাউন রাজ্যে। ইতিমধ্যেই বহু ধারাবাহিকের ব্যাঙ্কিং শেষ। তার মধ্যেই ফেডারেশন-আর্টিস্ট ফোরাম-প্রযোজকদের এই কোন্দলে আদতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে টেলিপাড়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement