সঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়
মাস্কট থেকে টালিগ়ঞ্জ। দীর্ঘ সফর। পশ্চিম এশিয়ায় বড় হলেও বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন না অভিনেত্রী সঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়। পথিকৃৎ বসুর পরিচালনায় ‘ফিদা’ ছবি দিয়ে ডেবিউ করছেন। বিপরীতে যশ দাশগুপ্ত।
‘‘আমার জন্ম মাস্কটে। স্কুলের পড়াশোনাও ওখানে। বাবার কাজের জন্য পশ্চিম এশিয়ার অনেক জায়গায় থেকেছি। ওখানকার ‘বঙ্গীয় সমাজ’-এ বাবা-মা ও আমি বরাবর সক্রিয় ছিলাম। দুর্গাপুজোয় অনুষ্ঠান করতাম। আর স্কুলে গরমের ছুটি পড়লেই কলকাতায় আসতাম। এখানে দাদু-দিদা আছেন,’’ বললেন নায়িকা। এক বছর হল পাকাপাকি ভাবে তিনি কলকাতায়। এখানকার কলেজে পড়াশোনা করছেন। ‘‘আমি মাস্কটেও মডেলিং করতাম। তবে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি বলতে যা বুঝি, ওখানে তা নেই। আমার ইচ্ছে ছিল, বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হওয়ার। তাই পরিবারের সঙ্গে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই।’’
কলকাতায় এসে বিজ্ঞাপনের শুট করেছেন। আর সেই সুবাদেই এসভিএফের কাস্টিং ডিরেক্টর পুনম ঝায়ের নজরে আসেন। ‘‘অনেক ওয়র্কশপ, অডিশনের পরেই ছবির কাজ শুরু হয়। সত্যি কথা বলতে, প্রথম দিন আমি ভালমতো হোমওয়র্ক করেই গিয়েছিলাম। তবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতেই আর কথা বেরোচ্ছিল না। এই ছবিটা করার পরে আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়েছে,’’ স্মিত হাসি নায়িকার মুখে।
ছবির লুক
ছবিতে সঞ্জনার চরিত্র খুশির দু’টি পরত। প্রথম দিকে সে প্রাণোচ্ছল, হাসিখুশি। পরের দিকে একটু শান্ত, পরিণত। ‘‘আমি লাভ স্টোরি দেখতে পছন্দ করি। আমার ডেবিউ ছবিও প্রেমের গল্প। এর চেয়ে ভাল কী হতে পারে!’’ তবে সঞ্জনা প্রথম নজরে প্রেমে পড়ায় বিশ্বাসী নন। তাঁর মতে, ‘‘কাউকে ভালবাসলে পুরোপুরি ভালবাসতে হয়। আর নিঃস্বার্থ ভাবে। মায়ের সঙ্গে আমার সেই রকম ঘনিষ্ঠতা।’’
আরও পড়ুন: আলিয়ার উপর রেগে আছেন ক্যাটরিনা!
শাহরুখ খানের জন্য ফিদা সঞ্জনা। তবে ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর জন্য কেউ ফিদা হয়েছেন? ‘‘থাকলে নিশ্চয়ই বলতাম। কেউ নেই তো!’’ হাসতে হাসতে বললেন নতুন অভিনেত্রী।
এখনও অবধি ইন্ডাস্ট্রির একটি পার্টিতেই গিয়েছেন সঞ্জনা। সে ভাবে কাউকে চেনেন না। তবে অঙ্কুশ ও ঐন্দ্রিলার মধ্যে দূরত্বের কারণ হিসেবে হঠাৎ তাঁর নাম উঠল কেন? ‘‘পুরো বিষয়টাই আমার খুব মজার লেগেছে।’’ সে দিন আসলে কী হয়েছিল? ‘‘আমার হোটেলে শুট ছিল। শটের জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। তখন অঙ্কুশ দেখা করতে আসে পথিকৃতের সঙ্গে। সৌজন্যের খাতিরে অঙ্কুশ আমাকে দেখে ‘হাই’ বলে। তার পর আমি শট দিতে চলে যাই। যশের সে দিন শুট ছিল না।’’ এই কানাঘুষোর পিছনে তাঁর কোনও পরিচিত আছেন বলে টুইট করেছেন অঙ্কুশ। তাতে নাম উঠেছে যশেরও। তবে সঞ্জনা বললেন, ‘‘অঙ্কুশ ও যশ খুব ভাল বন্ধু।’’ সত্যি-মিথ্যে যাই হোক, সঞ্জনার স্ট্র্যাটেজি, ‘‘আমি মিডিয়ার ছাত্রী। এক শিক্ষক বলেছিলেন, যে কোনও ধরনের প্রচারই ভাল প্রচার,’’ অল্প কথায় সারমর্ম বুঝিয়ে দিলেন।
সঞ্জনা খেতে ভালবাসেন। তাই, লেবানিজ় পদের পাশাপাশি চিংড়িও পছন্দের। অবসরে ঘুমোতে ভালবাসেন, নেটফ্লিক্স দেখেন আর সাঁতার কাটেন। কলকাতার ফুচকা যতটা পছন্দের, আবহাওয়া ততটাই অপছন্দের।
রিলিজ় নিয়ে সঞ্জনার টেনশন নেই। ‘‘তবে আশঙ্কা থাকেই,’’ বললেন তিনি।