অশ্লীলতা, যৌনতা কিংবা ‘অতিরিক্ত’ হিংসাত্মক দৃশ্য দেখানোর জন্য বেশ কয়েকটি ছবিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সেন্সর বোর্ড। আবার সেই ছবিগুলিই দেশের বাইরে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছে।পরবর্তীতে কয়েকটি মুক্তি পেয়েছে।কয়েকটি মুক্তি পায়নি।কী সেই ছবিগুলি, জেনে নেওয়া যাক।
পাঁচ(পঞ্চ): অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ছবিটিতে ছিলেন কে কে মেনন।মাদকাসক্ত তরুণ প্রজন্ম, ভয়াবহ হিংসা, অশ্লীল ভাষাপ্রয়োগ, বিতর্কিত চিত্রনাট্য-এই সব যুক্তিতে নিষিদ্ধ হয় ছবিটি।২০০১ সালে সেন্সর বোর্ড অসংখ্য দৃশ্য ছেঁটে ফেলতে নির্দেশ দেয়।
পিঙ্ক মিরর (গুলাবি আয়না): শ্রীধর রঙ্গায়নের ছবিটিতে সমকামিতা দেখানোয় ২০০৩ সালে নিষিদ্ধ হয় ছবিটি। এখনও তা জারি রয়েছে। সান ফ্রান্সিসকো ও প্যারিস-সহ অজস্র জায়গায় চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় ছবিটি। জেতে পুরস্কারও।
আনফ্রিডম: লেসবিয়ান দুই নারীর সম্পর্ক, উভকামী একজন পুরুষের কাহিনী, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আশঙ্কা-সহ বিভিন্ন যুক্তিতে ২০১৫ সালে রাজ অমিত কুমার পরিচালিত ছবিটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সেন্সর বোর্ড।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে(২০০৪) : পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ। মুম্বই বোমা হামলার উপর নির্মিত এই ছবিটিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। তখন এই বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে মামলা চলছিল। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিষেধ জারি ছিল।
ব্যান্ডিট কুইন (১৯৯৪): শেখর কপূরের ছবিটি ফুলন দেবীর জীবন নিয়ে নির্মিত। ছবি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন ফুলন দেবীও। যৌনদৃশ্য, অশ্লীল ভাষার ব্যবহারের কারণে দিল্লি হাই কোর্ট প্রথমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। যদিও কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিল এটি।
ফায়ার (১৯৯৬): বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর আপত্তিতে মুক্তির পরে নিষিদ্ধ করা হয় ছবিটি। দুই নারীর মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক দেখানো হয়েছিল এতে। শাবানা আজমি ও নন্দিতা দাশকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। ১৯৯৯ সালে আইনি জটিলতা কাটিয়ে মুক্তি পায় ছবিটি
ইনসাল্লাহ ফুটবল: পরিচালক অশ্বিন কুমার। সেন্সর বোর্ডের চেয়ারপার্সন শর্মিলা ঠাকুর তৃতীয়বারের জন্য রিভিউ-তে পাঠিয়েছেন ছবিটি। কাশ্মীরে এক তরুণ ফুটবলারের বেড়ে ওঠা, সেনাবাহিনীর আচরণ-ইত্যাদি বিতর্কিত যুক্তিতে ছবিটি মুক্তি পায়নি দেশে। নগ্নতার দৃশ্য না থাকা সত্ত্বেও ছবিটিকে ‘অ্যাডাল্ট’ তকমা দেওয়া হয়েছে।ছবিটি নিয়ে মামলা অব্যাহত।
কামসূত্র-আ টেল অব লাভ(১৯৯৬): পরিচালক মীরা নায়ার। দেশের বাইরে পুরস্কৃত হলেও ছবিটি ভারতে মুক্তি পায়নি। অতিরিক্ত যৌন দৃশ্য ব্যবহারের কারণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সেন্সর বোর্ড।
সিনস(২০০৫): পরিচালক বিনোদ পাণ্ডে।ছবিটি কেরলের একজন যাজকের সঙ্গে এক মহিলার সম্পর্কের কাহিনী। ক্যাথলিক সম্প্রদায় ছবিটি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। অতিরিক্ত যৌনদৃশ্যের ব্যবহারের কারণে ছবিটি নিষিদ্ধ করে সেন্সর বোর্ড।
ইউআরএফ প্রফেসর(২০০০): পরিচালক পঙ্কজ আডবাণী। এই ছবি আপত্তিকর দৃশ্য ও অশ্লীল ভাষার ব্যবহারের কারণ দেখিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়। ডার্ক কমেডি ঘরানার এই ছবি দেশের বাইরে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছে।
ছত্রাক: ২০১১ সালে অতিরিক্ত যৌনদৃশ্যের ব্যবহার ও নগ্নতার কারণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় বিমুক্তি জয়সুন্দর পরিচালিত বাংলা ছবিটির উপর । বিতর্ক তৈরি হয় পাওলি দামের চরিত্রায়ন নিয়েও। কান, টরোন্টো ও পেসিফিক মেরিডিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয় ছবিটি।
আমু (২০০৫): পরিচালক সোনালি বোস। ১৯৮৪ সালের শিখবিরোধী দাঙ্গার ঘটনার উপরে নির্মিত এই ছবি। মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন কঙ্কনা সেন শর্মা। প্রথমে নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও পরে কিছু সংলাপ ও দৃশ্য বাদ দিয়ে ছবিটি ‘অ্যাডাল্ট’ তকমা-সহ মুক্তি পায়। ইতালির তিনটি উৎসবে পুরস্কৃত এই ছবি।