টলিপাড়ার অন্য জুটিদের কী বক্তব্য? ছবি: সংগৃহীত।
গত এক সপ্তাহ ধরে জীতু কমল এবং দিতিপ্রিয়ার রায়কে নিয়ে বিপুল বিতর্ক হয়েছে স্টুডিয়োপাড়ার অন্দরে। যার জেরে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছিল। নায়ক-নায়িকার সম্পর্ক যদি ঠিক না থাকে তা হলে কি সেই কাহিনির ভবিষ্যৎ অন্ধকার? বাস্তবে পর্দার নায়ক-নায়িকার বন্ধুত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ? এ প্রসঙ্গে টলিপাড়ার এক কাস্টিং ডিরেক্টর বলছিলেন, “ক্যামেরার পিছনে সমীকরণের উপর সাময়িক ভাবে নির্ভর করলেও আদপে পেশাদারিত্বই সব। ফলে নায়ক-নায়িকার সখ্য বা তিক্ততা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠার কথা নয়।” এই প্রসঙ্গে কি সহমত বাংলা ধারাবাহিকের অন্য জুটিরা? পর্দায় সমীকরণ ফুটিয়ে তুলতে সহ-অভিনেতা, সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে শুধু পেশাদারিত্ব থাকলেই হবে, না কি বন্ধুত্ব থাকাটা জরুরি?
এই মুহূর্তে ছোট পর্দার স্বতন্ত্র এবং কমলিনীর সমীকরণ নিয়ে টেলিপাড়য় আলোচনা তুঙ্গে। সুদীপ মুখোপাধ্যায় এবং অপরাজিতা ঘোষের জুটি প্রথম বার পর্দায় দেখছেন দর্শক। ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে পরিণত প্রেমের কাহিনি ফুটে উঠছে পর্দায়। সমাজমাধ্যমের পাতায় তাঁরা যে একসঙ্গে নিজেদের খুব বেশি ছবি দেন তা নয়। তবে ‘কথা’ ধারাবাহিকের এভি এবং গোবরদেবীর ক্ষেত্রে গল্পটা একেবারে অন্য রকম। শুটিং সেটের বাইরেও অনেক সময় হাতে হাত রেখে তাঁদের দেখা যায়। যদিও নিজেদের ভাল বন্ধু বলে পরিচয় দিতেই তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
পর্দার স্বতন্ত্র এবং কমলিনী অবশ্য পেশাদারিত্বকেই গুরুত্ব দিতে রাজি। তাঁরা বললেন, “বাকিরা যেমন অফিস যায় কাজ করতে, আমরাও শুটিংয়ে আসি কাজ করতে। অফিসে যদি সহকর্মীর সঙ্গে বনিবনা না হয়, তা হলে কি কেউ চাকরি ছেড়ে দেবে? তা হলে এখানেই বা ব্যক্তিগত সমীকরণকে বেশি গুরুত্ব দেব কেন?” সুদীপ এবং অপরাজিতার মতে, পেশাদারিত্ব থাকলেই কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে এভি ওরফে সাহেব ভট্টাচার্য বললেন, “কোনও জুটিকে যখন দর্শক পছন্দ করেন, সেখানে অভিনেতাদের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ধারাবাহিকের দুই চরিত্র। তাদের সমীকরণ নিয়ে আগ্রহী থাকে দর্শক। এখনও কিন্তু সাহেব, সুস্মিতার থেকে বেশি আলোচিত কথা এবং এভি। আমার মনে হয় ব্যক্তিগত পরিসরে বন্ধুত্ব বা সখ্য থাকলে ক্যামেরার সামনে আর অভিনয় করতে হয় না, চরিত্র ফুটিয়ে তোলা আরও সহজ হয়ে ওঠে।” অর্থাৎ বন্ধুত্বের পক্ষেই ভোট গেল সাহেবের।
অনেক সময়েই নায়ক-নায়িকার বাস্তবের সমস্যার ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ধারাবাহিক। কখনও তা প্রকাশ্যে এসেছে, কখনও আবার আসেনি। তাই ব্যক্তিগত পরিসরে বন্ধুত্বকেই এগিয়ে রাখলেন ‘গৃহপ্রবেশ’ ধারাবাহিকের আদৃত। নায়িকা শুভলক্ষ্মী ওরফে ঊষসী রায়ের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুত্বই। অভিনেত্রী বললেন, “এই ফ্লোরে এলেই বোঝা যায় বাস্তবে আমাদের সবার মধ্যে বন্ধুত্ব কতটা গভীর। পরস্পরের প্রতি সম্মান খুব জরুরি। কাজের পরিবেশ ভাল না হলে সেখানে কি প্রতি দিন যেতে ইচ্ছা হবে? একসঙ্গে এতগুলো মাস কাটিয়ে বাঁধন আরও শক্ত হয়েছে আমাদের। সেটাই ফুটে উঠছে পর্দায়।” তাও এমন অনেক ধারাবাহিক তৈরি হয়েছে, যেখানে মুখ দুই চরিত্রের মধ্যে প্রবল বিবাদ সত্ত্বেও টিআরপি তালিকায় প্রথম স্থানে দেখা গিয়েছে। তাই বন্ধুত্ব, সমীকরণ, পেশাদারিত্ব পেরিয়ে ধারাবাহিকের গল্পকেই এগিয়ে রাখলেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।