শ্যুটিং: সাবেক ছিটমহলে চলছে সিনেমার দৃশ্যগ্রহণ। নিজস্ব চিত্র
তাঁদের রোজকার ঘরের ছবিই তোলা হচ্ছে ছায়াছবিতে। ক্যামেরার সামনে উঠে যাচ্ছে তাঁদের হাসি কান্না। সাজানো রয়েছে তাঁদেরই ঘর গেরস্থালি।
কড়া নজরে তাই সিনেমার শ্যুটিং দেখছেন সাবেক ছিটমহলের মানুষ। সেখানেই টলিউডের পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী তৈরি করছেন বাংলা সিনেমা ‘এপার-ওপার’। সোমবার হোলির দিন থেকেই দিনহাটার সাবেক ছিটমহল দক্ষিণ মশালডাঙায় ওই সিনেমার শ্যুটিং শুরু হয়েছে। দিন কয়েক আগেই হরনাথবাবু তাঁর সহকারি শ্যামল দত্তকে নিয়ে সাবেক ছিটমহল ঘুরে যান। সেই সময় তাঁর মুখ থেকেই সিনেমার কথা জানতে পারেন ছিটমহলের। তারপর দাবানলের মতো তা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দিন থেকে অপেক্ষায় দিন গুণছিলেন তাঁরা। শ্যামলবাবু জানান, নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী সোহানা সাবানা। নায়কের চরিত্রে টলিউডের সৌরভ চক্রবর্তী এবং সহ অভিনেতারা অবশ্য টালিগঞ্জের।
ছিটমহল সমস্যা বলতে ভেসে ওঠে দু’টি দেশের কথা। শ্যামলবাবু বলেন, “ছিটমহলের সঙ্গে দুই দেশের মানুষের আবেগ জড়িত। আমরা দেশভাগ থেকেই ছিটমহল সিনেমায় তুলে ধরছি। সে কারণে দুই দেশের শিল্পীদের নিয়েই সিনেমা তৈরি হচ্ছে। দুটি দেশেই সিনেমা মুক্তি পাবে।” ফিল্মটি বাস্তব সম্মত করতে জোর দেওয়া হয়েছে ভাষার উপরেও।
কিন্তু ছিটমহল নিয়ে হঠাৎ সিনেমার কথা ভাবতে গেলেন কেন? তাঁরা জানান, ছিটমহল নিয়ে সিনেমা করতে চেয়েছিলেন অনেক দিন ধরেই। পরে অভিজিৎ নন্দী মজুমদারের কাহিনি পড়ে তারা ফিল্মের ব্যাপারে মনস্থির করেন। এ দিন শ্যুটিং শুরু হতেই শয়ে শয়ে মানুষ ভিড় করেন সেখানে। আজ, বুধবার নায়ক-নায়িকা দু’জনেই যোগ দেবেন শ্যুটিংয়ে।
সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বলেন, “কী ভাবে বেঁচেছিলাম আমরা, তা মানুষ জানুক। সব সময়ই আমরা তা চাই। এ বার আমাদের নিয়ে সিনেমা তৈরি হচ্ছে, তাই খুব আনন্দ হচ্ছে। দু’দিন ধরেই শ্যুটিং দেখছি।” সাবেক ছিটমহল এলাকার বাসিন্দা তথা কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য তরণী বর্মন বলেন, “সিনেমা থেকে যদি সবাই আমাদের অবস্থাটা জানতে পারেন, তা হলে এলাকাটি উপকৃত হবে।’’