‘কুরুক্ষেত্রের’ কলাকুশলী এবং শিল্পীদের সঙ্গে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার স্টুডিয়োয় তৈরি। পরিচালক বাঙালি। নির্মাতাদের অধিকাংশই বাঙালি। নেটফ্লিক্সের প্রথম অ্যানিমেটেড পৌরাণিক সিরিজ় ‘কুরুক্ষেত্র’ ইতিমধ্যেই দর্শকের মন ছুঁয়েছে। ভারতে ‘স্ট্রিমিং’ হওয়া সিরিজ়ের তালিকায় শীর্ষে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পুত্র উজান গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা এবং পরিচালিত আঠারো পর্বের সিরিজ়। এমন সাফল্যে আনন্দিত কলকাতার ‘হাই-টেক অ্যানিমেশন।’
গত ১০ অক্টোবর ছিল ‘কুরুক্ষেত্রের’ প্রিমিয়ার। উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় তিন বছর ধরে কলকাতার প্রায় ২৫০ শিল্পী, অ্যানিমেটর, ডিজ়াইনার এবং টেকনিশিয়ানের নিরলস পরিশ্রমের ফসলের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। আসলে এই সিরিজ় কোনও গণ্ডির জন্য নয়। বিশ্বব্যাপী নেটফ্লিক্সের লক্ষ লক্ষ দর্শকের কথায় মাথায় রেখে গাঁথা হয়েছে যুদ্ধ, কর্তব্য, বিশ্বাসঘাতকতা এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের গল্প।
মোট আঠারোটি পর্বে মহাভারতের ১৮ জন বীরের দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করতে চেয়েছেন নির্মাতারা। কে কী ভাবে যুদ্ধকে বিচার করছেন, বুঝছেন— সেগুলো আলাদা আলাদা পর্বে দেখানো হয়েছে। গত সপ্তাহে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিরিজ় নিয়ে ভীষণ আশাবাদী ‘হাই-টেক অ্যানিমেশন স্টুডিয়ো’-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত রায়। তাঁর কথায়, ‘‘কুরুক্ষেত্র আর পাঁচটা অ্যানিমেটেড সিরিজ়ের মতো নয়। কলকাতার সৃজনশীল, প্রতিভার শক্তি এবং বিচ্ছুরণ, সর্বোপরি এখানকার স্টুডিয়ো থেকেও যে বিশ্বমানের গল্প বলার ক্ষমতা রাখি আমরা, সেটাই বোঝানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। এখনও পর্যন্ত যা ফিডব্যাক পেয়েছি, তাতে পুরো দলের জন্য আমি গর্বিত।’’
ফেসবুক পোস্টে পরিচালক কৌশিক ছেলের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘‘মাটিতে পা থাকুক, বেটু। শুধু মনে রেখো, গুলজ়ারজি কী লিখেছেন: ‘নীচে ভূমি, উপর নক্ষত্র। এটা কুরুক্ষেত্র, এটা কুরুক্ষেত্র!’ তোমার এবং হাই-টেক অ্যানিমেশনের সবার জন্য আমি গর্বিত!” উল্লেখ্য, সিরিজ়ের প্রাক্-কথন কবি, গীতিকার এবং পরিচালক গুলজ়ারের।
কলকাতায় অবস্থিত হাই-টেক অ্যানিমেশন পূর্ব ভারতের অন্যতম অ্যানিমেশন এবং ভিএফএক্স প্রোডাকশন হাউস। ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা এই স্টুডিয়োয় এখন প্রায় ৫০০ দক্ষ পেশাদার কাজ করেন। সংস্থাটি অ্যানিমেশনের প্রশিক্ষণও দেয়। রয়েছে প্লেসমেন্টের সুযোগ।