অবশেষে একই মঞ্চে শতাব্দী রায় এবং অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের রাজনীতিতে তাঁদের ‘দ্বন্দ্ব’ আলোচিত এবং দীর্ঘ দিনের। হয়তো বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে আপাতত তাতে ইতি টানলেন দু’জন। অনেক দিন পরে একই মঞ্চে দেখা গেল বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় এবং অনুব্রত মণ্ডলকে। শুধু তা-ই নয়, জনতার সামনে ‘প্রিয়’ সাংসদের ভূয়সী প্রশংসা করলেন কেষ্ট।
মঙ্গলবার নলহাটিতে ছিল তৃণমূল আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী। সেখানে এক মঞ্চে দেখা যায় বীরভূম জেলার কোর কমিটির আহ্বায়ক অনুব্রত এবং বীরভূমের সাংসদ শতাব্দীকে। বিজয়া সম্মিলনীর ভাষণে অনুব্রত স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে ‘বড়দের প্রণাম, ছোটদের ভালবাসা’ জানিয়ে প্রথমেই শতাব্দীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘বড় ভাল মেয়ে পেয়েছি আমরা।’’ কেষ্ট আরও বলেন, ‘‘আমাদের চার বারের এমপি শতাব্দী। বিধায়ক হননি কখনও। জানি না, এ বার বিধানসভায় দাঁড়াবেন কি না, মন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা আছে কি না তাঁর।” কেষ্টর ওই কথা শুনে মঞ্চে চেয়ারে বসা শতাব্দী সশব্দে হাসেন।
অনুব্রত বলতে থাকেন, “২০০৯ সাল থেকে চার বার সাংসদ হয়েছেন শতাব্দী। তখন ছিল মোরাম রাস্তা। এখন সব ঢালাই রাস্তা। আগের সাংসদকে দেখা যেত না। কিন্তু শতাব্দী বীরভূমের মাটিকে ভালবাসেন। ভালবাসেন বলেই গ্রামের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ান।” তাঁর সংযোজন, ‘‘সত্যিই খুব ভাল মেয়ে পেয়েছি আমরা। এখানে যিনি আগে এমপি ছিলেন, তাঁকে কোনও দিন এলাকায় দেখা যেত না। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে।’’
আসলে শতাব্দী এবং কেষ্টর সম্পর্ক বরাবরই ‘মধুর’। গত বছর জেলযাত্রা শেষে তৃণমূলের তরফে বীরভূমে অনুষ্ঠিত প্রায় সমস্ত বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত থেকেছেন কেষ্ট। কিন্তু তখন অনুপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের দুই আলোচিত ব্যক্তিত্ব— শতাব্দী এবং কাজল। গত বছর শতাব্দী কেষ্টর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘এখনও কোনও ডেট (তারিখ) ঠিক করিনি বা দেখা করার বিষয় নেই... দেখা হলে হবে।’’ অবশেষে দেখা হল। তবে এক বছর পর, সেই বিজয়া সম্মিলনীতে।