কী বললেন অভিনেত্রীরা? ছবি: সংগৃহীত।
দিনে ১৪ ঘণ্টা শুটিং। মাসে মাত্র একটা ছুটি। টেলিপাড়ার নায়ক-নায়িকারা এই নিয়মেই কাজ করে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। সপ্তাহের সাত দিনই যদি কোনও ধারাবাহিক সম্প্রচারিত হয়, তা হলে তো কোনও কথাই নেই। অনেক সময় নির্দিষ্ট সময়ের বেশিও কাজ করতে হয়। এমনি সময়ে না হয় ঠিক আছে। কিন্তু ঋতুস্রাবের দিনগুলোয় কী ভাবে নিজেদের ঠিক রাখেন ছোট পর্দার অভিনেত্রীরা?
ছুটি নেওয়ার মতো বিলাসিতা যে নেই তা অনেক সাক্ষাৎকারেই তাঁদের মুখে শোনা যায়। এতটাই চাপের মধ্যে তাঁদের কাজ করতে হয়। ঋতুস্রাবের ব্যথা নিয়ে ঠিক কী ভাবে কাজ করেন অভিনেত্রীরা? তবে বিষয়টিকে এত গুরুত্ব দিতে একেবারেই রাজি নন নায়িকারা। কাজের চাপে নাকি অনেক সময় ভুলেও যান যে তাঁরা মাসিক সেই শারীরিক চক্রের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। ঋতুস্রাবের কষ্টকে তাই এত গুরুত্বই দিতে চান না। কারণ, দিলে যে নিজের কাজের ক্ষতি হয়!
এই মুহূর্তে টিআরপি তালিকায় প্রথমেই রয়েছে অভিনেত্রী তৃণা সাহার ধারাবাহিক। ‘পরশুরাম আজকের নায়ক’ কাহিনির নায়িকা তিনি। ফলে বেশির ভাগ দৃশ্যেই তাঁকে দরকার। অভিনেত্রী বললেন, “পিরিয়়ডসের দিনগুলোয় পেটে কষ্ট হয়। কিন্তু আমরা সবাই দায়িত্বশীল প্রাপ্তবয়স্ক। পেট ব্যথা করছে বলে কাজ করব না তা বললে তো আর চলে না। আর আমার মনে হয়, পুরো বিষয়টাই মানসিক। তাই যত এই বিষয় নিয়ে ভাবব ততই কষ্ট হবে।” তৃণার সুরেই সুর মেলালেন পারিজাত চৌধুরী এবং মানসী সেনগুপ্ত। একজনকে দর্শক দেখছেন ‘মিত্তির বাড়ি’ ধারাবাহিকে। আর অন্যজন অভিনয় করছেন ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’ কাহিনিতে।
মানসী বললেন, “যা চাপ যায় আমাদের, কখন পিরিয়ডস হয় আর কখন চলে যায় সেটাই বোঝার সময় থাকে না। আর একটা সময় তো আমায় পেট ব্যথা কমানোর জন্য ইনজেকশনও নিতে হত। এখন সেই সমস্যা অনেকটাই কমেছে। কিন্তু কষ্ট হয়, তার মধ্যেই শট দিই।” তবে স্টুডিয়োপাড়ার সহকর্মীরা খুবই সহানুভূতিশীল। এ সব দিনে পারিজাতের কষ্ট হলে তাঁকে গরম জলের ব্যবস্থাও করে দেন তাঁরা।
অভিনেত্রী বললেন, “কাজের যা চাপ, নিজের ছুটি চাইতেই লজ্জা করে। আর সব জেনেশুনেই তো এই পেশাকে বেছে নিয়েছি আমরা। তাই কষ্ট তো সহ্য করতে হবে। কষ্ট হলে পরিচালককে বলি। একটু হয়তো বিশ্রাম নিয়ে নিই। বললে সেটে গরম জলও দেওয়া হয় একটু আরাম দেওয়ার জন্য আমায়। সবাই খুবই সাহায্য করে। সুতরাং অভিযোগের কোনও জায়গা নেই।” অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়েরও একই মত। এত বছর ধরে তিনি ছোট পর্দায় কাজ করছেন। এই মুহূর্তে তাঁকে দুটি ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে। এই সময় ছুটি নেওয়া তো সম্ভব নয়। সবটাই নিজের উপর নির্ভর করে। ঠিক আছি মনে করলেই সব করা সম্ভব।