Durga Puja 2025

সিদ্ধি নয় কিঞ্চিৎ সুরাপান, বন্ধুদের সঙ্গে ঢাক বাজাতাম, ভাসাননাচও নেচেছি! কিন্তু মেয়েদের দিকে তাকাতাম না

পুজোয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে ফিতে কাটতে গিয়েছি। দর্শক ওঁদেরই ঘিরে ধরত।

Advertisement

বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:১৫
Share:

বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের দুর্গাপুজো। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

শ্যামবাজারে থাকতাম। উত্তর কলকাতার ছেলে। বাড়ির কাছে দেশবন্ধু পার্কে বিশাল পুজো। একটু বড় হওয়ার পর থেকেই মণ্ডপে সারা দিন। ওই ক’টা দিন যেন ‘ছাড়া গরু’! হইহই করছি। বন্ধুদের সঙ্গে আশপাশের ঠাকুর দেখছি। সারা বছর যা যা নিষিদ্ধ যেমন ফুচকা, ঘুগনি, আচার, হজমি— খাচ্ছি। দিনগুলোই অন্য রকম ছিল।

Advertisement

আর ছিল নতুন জামা-জুতোর গন্ধ। বাবা নিয়ে যেতেন দোকানে। ছোটবেলায় মা-বাবার পছন্দের পোশাকে সেজে ওঠা। বড় হওয়ার পর নিজের মতো করে নিজেকে সাজানো। ধুতি পরেছি বড় হয়ে, পাজামা-পাঞ্জাবিও। আর অষ্টমীর অঞ্জলি। ওটা কোনও বছর বাদ দিইনি। এখনও, এত বয়স হয়ে গিয়েছে, তবু অষ্টমীর অঞ্জলি দেবই।

বাইরে রুক্ষ, অন্তরে রসিক মানুষ বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

এখন অবশ্য আমি উত্তর ছেড়ে দক্ষিণ কলকাতায় থাকি। পুরোটাই পেশার খাতিরে বাসাবদল। জানেন, আমার স্ত্রীও শ্যামবাজারের মেয়ে। পড়শি, আমাদের পাশের বাড়িতে থাকত। বলতে পারেন, ও আমার ছেলেবেলার প্রেম। সেই যে ওর সঙ্গে জুড়ে গেলাম, আজও সেই বন্ধন অটুট। অনেকেই জানতে চান, আমার পুজোর প্রেম হয়েছে কি না! বিশ্বাস করুন, হয়নি। চারটে দিন খুব হুল্লোড় করতাম। দশমীতে সিদ্ধি না খেলেও কিঞ্চিৎ সুরাপান চলত। ঢাক বাজানো, ভাসান-নাচ, বিসর্জনে যাওয়া— সব করেছি। কিন্তু কোনও মেয়ের দিকে খারাপ নজর দেওয়া তো দূরের কথা, ভাল করে তাকিয়েও দেখিনি। আমার আর কী ‘পুজো প্রেম’ হবে বলুন!

Advertisement

তবে হ্যাঁ, তখনও জমিয়ে খাওয়াদাওয়া করতাম, এখনও করি। উত্তর কলকাতার ছেলে হলেও মিষ্টি ভালবাসি না। আমার পছন্দ, বিরিয়ানি, মুরগির মাংস, চাপ— এ সব। ভাল দোকান থেকে পুজোয় এখনও এই খাবারগুলো আসে। চেটেপুটে খাই। আর পাড়ার দুর্গামন্দিরে বসে থাকি। নানা বয়সের মানুষের আনাগোনা। দেখতে দেখতে সময় কেটে যায়। একটা সময়ে পুজোয় একাধিক পুজোসংখ্যা আসত। অবসরে সে সব গোগ্রাসে পড়তাম।

অবসরে বই পড়তে ভালবাসেন বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

বহু দিন পরে দিনকয়েক আগে বাইরে বেরিয়েছিলাম। বৌয়ের জুতো কিনতে। হাসবেন না, এখনও ওটা নিজে কিনে না দিলে যেন শান্তি পাই না। আগে পুজোর পোশাকও নিজে নিয়ে গিয়ে কিনে দিতাম। এখন আর অতটা পারি না। আগের মতো ধুতি-পাঞ্জাবিও পরা হয় না। আর একটা বিষয় শারদীয়ার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল। পুজো উদ্বোধন, ফিতে কাটা। কখনও একা গিয়েছি। কখনও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে। একা গেলে ভিড় ঘিরে ফেলত। তারকা নই। ওই পর্দায় লোক পেটাতাম তো! লোকে তাই একটু-আধটু চিনত। সৌমিত্রদা বা শুভেন্দুদার সঙ্গে গেলে কথাই নেই! সবাই ওঁদের উপরেই হুম়ড়ি খেয়ে পড়ত।

তা-ও ভাগ্যিস, কোনও দিন উত্তমকুমারের সঙ্গে বেরোইনি। শুনেছি, উত্তমদা কোথাও ফিতে কাটতে গেলে, সেখান থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে ফেরাটাই নাকি বড় ব্যাপার ছিল!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement