‘দশপ্রহরণধারিণী’ ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
দেবী দুর্গা আসছেন। শহর ছেয়ে গিয়েছে মণ্ডপে। সাধারণের পাশাপাশি খ্যাতনামীরা তাঁদের মতো করে আবাহন জানাচ্ছেন দেবীকে। যেমন, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। প্রতি বছর তিনি এবং তাঁর ‘দীক্ষামঞ্জরী’র ছাত্র-ছাত্রীরা নৃত্যানুষ্ঠান উপহার দেন। সোমবার তাঁদের উপস্থাপনা ‘রূপং দেহি জয়ং দেহি’। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সাদা সিঁড়িতে এ দিন নাচ, গান, স্ত্রোত্রপাঠের আয়োজন।
রবিবার মহালয়ার দিন ডোনা একই উপস্থাপনা নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন। গত বছর তিনি দল নিয়ে উড়ে গিয়েছিলেন বিদেশে।
দুর্গারূপী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
কোথায় বাংলার এই সংস্কৃতি সব থেকে বেশি সমাদৃত? প্রশ্ন ছিল আনন্দবাজার ডট কম-এর। ডোনার কথায়, “সবাই বাংলার গান, স্ত্রোত্রপাঠ শুনতে ভালবাসেন। বিশেষ করে প্রবাসী বাঙালিরা। গত বছর যখন বিদেশে গিয়েছিলাম, ওঁরা খুব খুশি হয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, কলকাতার পুজোয় যোগ দিতে পারেন না। আমার এই অনুষ্ঠান তাঁদের ছেলেবেলার গন্ধ বয়ে এনেছিল।” তার পরেই ওড়িশি নৃত্যশিল্পীর দাবি, নিজের শহরে অনুষ্ঠানের আনন্দই আলাদা। “এখানে আমরা অনেকটা জায়গা পাই। যেমন, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের চত্বর। সাদা পাথরে রকমারি পোশাক আলাদা জৌলুস ছড়ায়। আমার প্রতিষ্ঠানের সকলে যোগ দিতে পারেন।”
বলতে বলতে স্মৃতিমেদুর ডোনা। হঠাৎ খুশির ছোঁয়া তাঁর কথায়, “জানেন, এ বছর আমার বাড়তি আনন্দ মেয়ে সানা। অনেক বছর পরে আমার ‘উমা’ বাড়ি ফিরছে।” সেই খুশির আভা বুঝি শহরের আকাশেও! আকাশছোঁয়া বহুতল তাকে ঢেকে ফেললেও টুকরো নীল আকাশ নৃত্যশিল্পীকে জানান দেয়, পুজো এসে গিয়েছে। “এ সময়ে আমার শহরের আকাশটাও যেন বদলে যায়! এরকম নীল আকাশ আর তাতে পেঁজা তুলোর মতো সাদা মেঘ অন্য কোথাও চোখে পড়ে না!”
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং ডা. আনন্দ গুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
সেই আমেজ গায়ে মেখে সন্ধ্যায় ডোনার অনুষ্ঠানে থাকছে আকাশবাণীর বিশেষ প্রভাতি অনুষ্ঠান ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’-র বেশ কিছু গান। গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের ছাত্রী ওড়িশি নৃত্যের ধারাকে মাথায় রেখেই নৃত্যপরিকল্পনা করেছেন। দুর্গার ভূমিকায় ডোনা স্বয়ং। ‘মহিষাসুর’ রঘুনাথ দাস। ভাষ্য ও স্তোত্রপাঠ, সঙ্গীত পরিচালনায় আমেরিকার ‘দক্ষিণায়ণ’-এর ডা: আনন্দ গুপ্ত। তাঁর কথায়, “আমি খুব আনন্দিত। চোদ্দো জনের গানের দলে থাকছেন ইংল্যান্ড এবং কলকাতার শিল্পীরা।”