Kali Puja 2025

তুবড়ির আলো মেখে হেঁটে আসছেন সুচিত্রা! উত্তমকুমারের হাতে রংমশাল, সেকালের কালীপুজো কেমন ছিল?

রত্না ঘোষাল জানিয়েছেন, সে সময়ে সকালে শুটিং হত। বিকেল থেকে উদ্‌যাপনের আয়োজন তারকাদের বাড়িতে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:২২
Share:

সুচিত্রা সেন, উত্তমকুমারও কি দীপাবলি উদ্‌যাপন করতেন? ছবি: সংগৃহীত।

পথের দু’পাশে বসন তুবড়ি সাজানো। ঝিকমিকিয়ে আলো ছড়াচ্ছে তারা। মাঝখান দিয়ে হেঁটে আসছেন সুচিত্রা সেন! তাঁর চোখের পাতা আলোয় মাখামাখি। উপরের বারান্দায় উত্তমকুমার। তাঁর হাতে কি রংমশাল?

Advertisement

এই ছবিটি বাস্তবের নয়। ‘জীবন তৃষ্ণা’ ছবির শেষে উত্তম-সুচিত্রার মিলনদৃশ্য এভাবেই আতশবাজির আলোয় সাজিয়েছিলেন পরিচালক অসিত সেন। দীপাবলির এই উদ্‌যাপন কি কেবলই সেলুলয়েডের? বাস্তবে ষাট বা সত্তরের দশকের তারকারা আলোর উৎসবে অংশ নিতেন না?

সুচিত্রা সেনের কথা তিনি জানেন না। তবে উত্তমকুমার ভবানীপুরের বাড়িতে শুধুই আলোর বাজি পোড়াতেন, আনন্দবাজার ডট কম-কে এ কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল। “দাদা সবাইকে নিয়ে হইহই করতে ভালবাসতেন। ভবানীপুরে যৌথ পরিবার। রংমশাল, তারাবাতি, তুবড়ি— এ সব পোড়াতেন দলবল মিলে।” যদিও রত্না কোনও দিন আলোর উৎসবে অংশ নিতে পারেননি। তাঁর বাড়িতে পোষ্য সারমেয়ের ভিড়। “ওরা আওয়াজ সহ্য করতে পারে না। ওদের জন্য আমিও কোনও দিন উদ্‌যাপনে শামিল হতে পারিনি। আজও পারি না”, বক্তব্য বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর।

Advertisement

প্রায় একই পথের পথিক সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, লিলি চক্রবর্তী। তাঁদের সময়ের কথা উঠতেই কণ্ঠে স্মৃতির ভার। সাবিত্রী বললেন, “ফিকে মনে পড়ে, ছোটবেলায় ঢাকায় আমাদের বাড়িতে বিশাল করে কালীপুজো হত। খুব ধুমধাম করে। কলকাতায় আসার পর বন্ধ হয়ে গিয়েছে।” তিনি অবশ্য তারাবাতি পুড়িয়েই খুশি। এর বেশি বাজি পোড়াতেন না তিনি কোনও দিনই। উদ্‌যাপনে কোনও বাধা ছিল না। তখনকার মতো এখনও বাড়ি আলো দিয়ে সাজানো হয়। মা-বাবা, দিদিরা মিলে ভালমন্দ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করতেন। কোনও তারকা সহ-অভিনেতা বা অভিনেত্রী তাঁর বাড়িতে আসেননি।

উত্তমকুমারও না? ওঁর সঙ্গে কোথাও পুজো উদ্বোধনে যাননি? হেসে ফেলে জবাব দিয়েছেন, “না, এরকম কিছুই ঘটেনি। তবে একবার সকলে মিলে গিয়েছিলাম ফাটাকেষ্টর পুজোয়। তখন মঞ্চে ‘শ্যামলী’ নাটক করছি। এক বার আমাদের গোটা দলকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।”

প্রায় একই কথা শোনা গেল রত্নার মুখেও। তিনি জানালেন, অনেক সময় সকালের দিকে শুটিং হত। বেলা পড়লেই বাজির শব্দে কান পাতা দেয়। ফলে, শুটিং বন্ধ। সেই সময় অনেক তারকা বন্ধু সহ-অভিনেতার বাড়িতে পৌঁছে যেতেন। “আসলে, তখন আমাদের মধ্যে খুব মিলমিশ ছিল। খারাপ সময় তো বটেই, ভাল সময়েও আমরা একে অন্যের বাড়িতে যেতাম। উদ্‌যাপনে অংশ নিতাম।” বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর বিয়ে হয়েছে মাড়ওয়াড়ি পরিবারে। শ্বশুরবাড়ির রীতি মেনে ‘ছোটি দিওয়ালি’, ‘ধনতেরস’ সব পালিত হয়। “প্রত্যেক বছর আমার স্বামী গয়না কিনে দেন। এ বছর রুপোর লক্ষ্মী-গণেশ কিনেছি।”

লিলি চক্রবর্তীর ছেলেবেলা কেটেছে মধ্যপ্রদেশে। “বেশির ভাগ অবাঙালি। ফলে, কালীপুজোয় প্রচণ্ড আড়ম্বর। দেদার বাজি পুড়ত।” অভিনেত্রী কিন্তু কোনও দিন তারাবাজি ছাড়া আর কিচ্ছু পোড়াননি ! “বাজিতে বড্ড ভয়”, বক্তব্য তাঁর। তাই বাড়িতে থাকতেই ভালবাসেন তিনি। কিছুটা সময় মুম্বইয়েও কাটিয়েছেন। সেখানে কি এখনকার মতো ‘দিওয়ালি পার্টি’ হত? জবাবে লিলি বললেন, “একেবারেই না। প্রত্যেকের বাড়িতে লক্ষ্মী-গণেশ পুজো হত। বাজিও পোড়ানো হত। আমার নিমন্ত্রণ থাকত অবশ্য। আমি যদিও যোগ দিইনি কখনও।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement