আর ‘ফেলুদা’ হওয়া হচ্ছে না বলে কি আবির চট্টোপাধ্যায়ের মনখারাপ?
মন খারাপ তো ডেফিনেটলি আছে। রাগ, আপশোস, অভিমান, দুঃখ সবই আছে।
রাগ কার ওপর?
পার্টিকুলার কোনও এক জনের ওপর নয়, গোটা পরিস্থিতির ওপর।
কোন পরিস্থিতি?
আমি মাস তিনেক আগে জানতে পেরেছি আর ফেলুদা করছি না। ফলে ইটস টু আর্লি টু কমেন্ট। তবে ওটা নিয়ে পড়ে থাকলে তো বাকি কাজগুলো করতে পারব না। কিন্তু, ফেলুদা হাত থেকে বেরিয়ে গেল মানে শুধুমাত্র প্রফিটেবল ফ্র্যাঞ্চাইজি বেরিয়ে গেল, এমন তো নয়। আরও অনেক কিছু হারানোর দুঃখ আছে। সেই মিক্সড ফিলিংসটা কাজ করছে।
আপনি কি ইন্ডাস্ট্রির পলিটিক্সের শিকার?
(কনফিডেন্টলি) না। এটা পলিটিক্স নয়।
বড্ড ডিপ্লোম্যাটিক উত্তর। সেফ খেলছেন?
(হাসি) একেবারেই না। বিষয়টা ডিপ্লোম্যাসির নয়। এটা আমি অন রেকর্ড বলছি, এটা পলিটিক্স করে হয়নি। এটা এখন হোক, তার পর ওই ঘুঁটিটা সাজাব। এ ভাবে বিষয়টা এগোয়নি। এটা আমি জানি। প্রত্যেক ইন্ডাস্ট্রির চলার একটা নিয়ম আছে। কোথাও গিয়ে এই নিয়মটা ব্যতিক্রম হল না। একই মানুষ কেন দুটো আইকনিক রোল করবে? এটা নিয়ে অনেকের দ্বিধা ছিল, অনেকের আবার ইচ্ছেও ছিল। আমি অভিনেতা হিসেবে স্বার্থপর ভাবে চাইব দুটোই করতে। কিন্তু দর্শক হিসেবে ভাবলে হয়তো সেটাতে সমস্যা আছে। ফলে কোথাও টেকনিক্যালি ব্যাপারটা আটকে গেল।
‘ঠাম্মার বয়ফ্রেন্ড’-এর শুটিংয়ে আবির।
ইন্ডাস্ট্রিতে পছন্দের ফেলুদা কে আপনার কাছে?
এটা নিয়ে আমার বেণুদার সঙ্গে কথা হয়েছে। মানুষ হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা তুলবে। কিন্তু, আসলে সেটা তো নয়। বেণুদা আমার পছন্দের অভিনেতা। আমার তো মনে হয়েছে তবু তো বেণুদা করেছেন। তবে, ফেলুদা হিসেবে নতুন প্রজন্মের কাউকে তেমন ভাবে দেখতে পাচ্ছি না।
তার মানে সব্যসাচী চক্রবর্তীকে ফেলুদা হিসেবে আপনার পছন্দ নয়?
গল্পে যেমন পড়েছি, তাতে তো বেণুদাকে আর ফেলুদা হিসেবে ভাল লাগে না। অন্তত বয়সের দিক থেকে। আর দর্শকদেরও দেখতে ভাল না লাগলে তখনই অলটারনেটিভের কথা ভাবা হবে। কিন্তু তেমন তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।
একমাত্র আপনিই এলিজেবল ফেলুদা?
(হাসতে হাসতে) আমারটা ছেড়ে দিন। আমি আর নিজেকে প্রোমোট করছি না। সৌমিত্র জেঠু নিজে আমাকে বলেছেন, ফেলুদা হিসবে আমাকে ওঁর ভাল লেগেছিল। এটা তো বিরাট সার্টিফিকেট। কিন্তু, এটা নিয়ে বেশি আলোচনা করে লাভ নেই।
সব্যসাচী চক্রবর্তীর নতুন ফেলুদা আপনি দেখতে যাবেন?
আমি তো ডেফিনেটলি দেখব। তবে অনুবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে নয়। আমার তো একটা অন্য অ্যাঙ্গল নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছে করে।
কী সেটা?
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কেন ফেলুদা মোবাইল ইউজ করছে না? ফেলুদাকে তো দর্শক হিসেবে আমি ২০১৬-র মতো করে দেখতে চাইব। সেটা নিয়ে বেশি আলোচনা হওয়া উচিত। র্যাদার দ্যান কে ফেলুদা করছে। তবে ভয়ও লাগে। চেঞ্জ করতে গিয়ে হয়তো এমন কিছু হল যে সেটা আবার খুব খারাপ, ফলে রিস্কও আছে।
‘ব্যোমকেশ’-এর মহরতে পরিচালক অরিন্দম শীলের সঙ্গে আবির। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।
পলিটিক্সের শিকার নন বললেন, পলিটিক্স আপনার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
আই অ্যাম আ পলিটিক্যাল পার্সন। রাজনীতি আমার জীবনে ভীষণ ইমপর্ট্যান্ট।
প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসছেন?
না বোধহয়। আমি রাজনৈতিক ভাবে সচেতন এ কথা ঠিক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে প্রত্যক্ষ রাজনীতি করব।
টলিউডে তো এখন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের দাদাদের তুষ্ট না করলে নাকি কাজ পাওয়া যায় না?
এটা ডিপেন্ড করে, আমাকে এখনও পর্যন্ত কোনও কিছু ফেস করতে হয়নি। আমার ওপর কোনও চাপ আসেনি। কিন্তু তার মানে যে চাপটা কারও ওপরেই নেই, এমনটা নয়। তবে এটা প্রত্যেকের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কেউ যদি তেমন ভাবে চান, তা হলে তাঁকেও কোনও সমস্যা ফেস করতে হবে না।
ব্যোমকেশের শুটিং কেমন চলছে?
দারুণ। অরিন্দমদা তো এ বার ঘোড়ায় তুলে দিয়েছে আমাকে। প্র্যাকটিসও করেছি। দেখা যাক শুটিংয়ে কী হয়। লুক ওয়াইজ প্রায় একই থাকছে ব্যোমকেশ।
‘ব্যোমকেশ পর্ব’-এর জন্য আগাম শুভেচ্ছা।
অনেক ধন্যবাদ।