‘আমি খুব ভাল স্বামী হতে পারতাম’

অভিনয়, প্রথম প্রেম এবং মুম্বইয়ে কাজ নিয়ে কথা বললেন অম্বরীশ ভট্টাচার্যঅভিনয়, প্রথম প্রেম এবং মুম্বইয়ে কাজ নিয়ে কথা বললেন অম্বরীশ ভট্টাচার্য

Advertisement

ঊর্মি নাথ

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১১
Share:

অম্বরীশ

এক সঙ্গে তিনটে সিরিয়াল—‘পুণ্যিপুকুর’, ‘গোয়েন্দা গিন্নি’ এবং ‘মহানায়ক’-এর পর, দেড় বছর মেগা থেকে অদৃশ্য অম্বরীশ ভট্টাচার্য। ‘‘টানা বারো বছর মেগা করেছি। একসঙ্গে তিনটে সিরিয়াল করার পরে নিজেকে প্রশ্ন করলাম, রোজ একঘেয়ে শুটিং, এক মেকআপ রুম, এক কো-আর্টিস্ট কি ভাল লাগছে? উত্তর পেলাম, ‘না’। দেড় বছর হয়ে গেল মেগার খিদেটা এখনও পায়নি,’’ কুকিতে কামড় দিয়ে বললেন তিনি। হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এই দেড় বছরে অম্বরীশ করেছেন, ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’, ‘ককপিট’, ‘ক্রিসক্রস’, ‘উমা’, ‘আহারে মন’... আরও ছবির কাজ পাইপলাইনে আছে। তিনি এখন প্রদীপ সরকারের হিন্দি বিজ্ঞাপনের পরিচিত মুখ। এটা কি বলিউডের পথ প্রসারিত করতে? ‘‘প্রদীপদার সঙ্গে ছবি করার ইচ্ছে আছে। উনি ‘সোনার কেল্লা’র স্বত্ব কিনেছেন। কিন্তু ফেলুদা খুঁজে পাচ্ছেন না। খুঁজে পেলেই...’’ প্রদীপবাবুর লালমোহন কি আপনি? ‘‘খোলসা করে বলেননি। বলেছেন এমন একটা চরিত্র দেবেন যেখানে হিন্দিটা ভাল না বললেও হবে,’’ মুচকি হাসলেন তিনি! বিজ্ঞাপনে অম্বরীশ স্ক্রিন শেয়ার করেছেন অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে। আগামী কাজ শাহরুখ খানের সঙ্গে। অথচ কলেজের গণ্ডি পেরোনোর পরও তাঁর অভিনেতা হওয়ার পরিকল্পনা ছিল না। অম্বরীশের গান শুনে কেতকী দত্ত তাঁর কাছে থিয়েটারের গান শিখতে বলেন। শিশিরকুমার ভাদুড়ীর এই ছাত্রীর কাছে গান শেখার প্রস্তাব লুফে নিয়েছিলেন অম্বরীশ। ‘‘কেতকীদির কাছে তাঁর অভিজ্ঞতার গল্প শুনতে শুনতে অভিনয়ের শখটা তৈরি হয়েছিল। তখন দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিই। থিয়েটার করতে করতেই ‘রাজা গজা’র সুযোগ আসে। গজার চরিত্রটাই আমাকে পথ খুলে দেয়।’’ ধারাবাহিকটা সফল হলেও অম্বরীশের প্রথম ছবি ‘রাজা গজা’ সুপার ফ্লপ। সুপার ফ্লপ প্রথম প্রেমটাও। ‘‘আমি খুব ভাল স্বামী হতে পারতাম। কারণ আমার কোনও বায়নাক্কা নেই। কিন্তু প্রেমটা না হয়ে ভালই হয়েছে। সে আমাকে লুঙ্গি ছাড়িয়ে পাজামা পরতে বাধ্য করেছিল। আমার পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য ছাড়তে হয়েছিল। যে দিন বিচ্ছেদ হয়, সে দিন পাজামা ফেলে আবার লুঙ্গিতে ফিরে যাই।’’

Advertisement

‘মহানায়ক’ সিরিয়ালটি মুখ থুবড়ে পড়লেও তরুণকুমারের চরিত্রটির জন্য প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর তুলনা টানা হয়েছিল। ‘‘তরুণকুমারের চরিত্রটা হয়তো ফোটাতে পেরেছি ওঁর দারুণ ভক্ত বলে। অভিনয়ে ওঁকে অনুসরণ করি। প্রথম আলাপে তরুণবাবু আমাকে ওঁর ছবি নিয়ে কুইজ় করেছিলেন। অনেক উত্তর দিতে পেরেছিলাম বলে শশা খাইয়েছিলেন,’’ বললেন অম্বরীশ।

ধারাবাহিকে কমিক চরিত্রে হাত পাকালেও ফিল্মে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র করেছেন তিনি। প্রতিম দাশগুপ্তর ‘ইঙ্ক’-এ ডার্ক শেডের চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। সুদেষ্ণা রায়ের ছবিতে গোয়েন্দার চরিত্র করছেন। বিভিন্ন ধরনের চরিত্র পেলেও অম্বরীশ কমেডিই করতে চান। পাভেলের গুপি বাঘায় আপনি গুপি না বাঘা? কফির কাপে চুমুক দিতে গিয়ে আটকালেন, ‘‘এখন কুলুপ খোলা যাবে না। যথা সময়ে জানাব।’’

Advertisement

সব প্রযোজকদের সঙ্গে কাজ করতে তিনি সমান স্বচ্ছন্দ। ‘‘একসঙ্গে ‘গোয়েন্দা গিন্নি’ ও ‘পুণ্যি পুকুর’ করার সময়ে অনেকেই বলেছিলেন, এসভিএফ আর ম্যাজিক মোমেন্টস-এর কাজ একসঙ্গে করতে পারবি না। আমার কিন্তু সমস্যা হয়নি।’’

সহকর্মীদের মাই ডিয়ার হলেও আজ পর্যন্ত কোনও কলিগকে বাড়িতে ডাকেননি তিনি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কিন্তু আত্মীয়তা নয়— অম্বরীশের গুপ্ত মন্ত্র এটাই।

ছবি: তন্ময় সেন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন