আপনার ছবিতে বারবার ঘুরে আসছে গঙ্গার পাড়, ফুটি মসজিদ, কলকাতার চৌহদ্দির বাইরে মফস্সলি রাস্তাঘাট। টিভির জন্য তৈরি সাম্প্রতিক ছবি ‘গোয়েন দা’-তেও তাই...
প্রদীপ্ত: আসলে এখন কলকাতায় থাকলেও আমার বেড়ে ওঠার স্মৃতির পরতে-পরতে ওই সব নদী, মাঠঘাট, রাস্তা, রিকশা, মানুষ জড়িয়ে। তাই ছবির গল্প ভাবতে বসলে স্বাভাবিক ভাবেই ওগুলো চলে আসে। অন্য কিছু করতে গেলেই বরং নিজেকে জোর করতে হয়।
এতে একটা জায়গায় আটকে যাচ্ছেন বা বিষয়ে বৈচিত্র্যের অভাব হচ্ছে বলে মনে হয় না? সেই তো একটি ছেলে, তার বন্ধু আর তার প্রেম...
প্রদীপ্ত: কিছুটা হয়তো তা-ই। ‘পিঙ্কি আই লাভ ইউ’ থেকে ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’ কোথাও একটা মিল থেকে যাচ্ছে হয়তো। দর্শকেরা ভাল বলতে পারবেন। তবে এটা আটকে যাওয়া নয় বোধহয়। বরং নিজের কাছে ফিরে আসার স্বস্তি।
তেহট্ট আর বহরমপুরের বাইরে, ছোটবেলার স্মৃতির বাইরে বেরোনোর তাগিদ অনুভব করেন না?
প্রদীপ্ত: আমার সব ছবিই যে ওই দুই জায়গায় ফিরছে, তা কিন্তু নয়! ধরুন, প্রথম ছবি ‘বিশ্বাস নাও করতে পারেন’ বা তার পরে ‘কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল’ কলকাতায় তোলা।
গোয়েন দা
কিন্তু তাতেও মেজাজটা প্রায় একই। পায়ের তলায় মাটি না পাওয়া ছেলে, তার প্রেমিকা, তাদের ক্রাইসিস। এবং বারবার ঋত্বিক চক্রবর্তীকে মূল চরিত্রে ব্যবহার করা...
প্রদীপ্ত: (হাসি) আরে, ঋত্বিক আর আমি অনেক দিনের বন্ধু। সেই শুরুর দিনগুলো থেকে... তবে... (গম্ভীর হয়ে গিয়ে) আপনার কথাটা আমি উড়িয়ে দিচ্ছি না। নিজেকে ভাঙাটা যে দরকার সেটা আমারও মনে হয়। সেই জন্য একেবারে অন্য রকম কিছু করার চেষ্টা করছি। যেমন, গত বছর একটা ছোট ছবি করেছিলাম, ‘ঢেউ’ নামে, সেটা...
সে-ও তো সেই কলকাতার চৌহদ্দি ছাড়িয়ে নদীর ধারে প্রান্তিক মানুষেরই গল্প... এবং ফিরে আসা লোকগান...
প্রদীপ্ত: তা ঠিক। ওটা কোলাঘাটের কাছে এক জায়গায়... (একটু চুপ করে থেকে) আসলে কী মনে হয় জানেন, এটা আমার মজ্জাগত! ওই সব গান, সুর, নদী, মাটি...
এটা মনে হয় আপনার শক্তিই! বিশেষ করে তথাকথিত ‘ভাল’ বাংলা ছবি যখন মূলত শহুরে চৌহদ্দিতে বন্দি...
প্রদীপ্ত: উমম... হতে পারে... হয়তো তাই... আমার দুর্বলতাই আমার শক্তি! (হাসি)
এখন বুঝছি, স্বাদ পাল্টাতেই হয়তো একটু অন্য রকম গোয়েন্দা গল্প তৈরির চেষ্টা করেছেন। তা, আপনার ‘গোয়েন দা’ কি আবার ফিরবে?
প্রদীপ্ত: হ্যাঁ. নতুন গল্প লিখতে শুরুও করে দিয়েছি... তবে এ বার আর টিভিতে নয়।
পিঙ্কি আই লাভ ইউ