‘প্রয়োজন না থাকলে কেউ আমাকে ছবিতে নেবে না’

পরপর কাজ করছেন। তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া চর্চার জবাব দিলেন জয়া আহসানপরপর কাজ করছেন। তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া চর্চার জবাব দিলেন জয়া আহসান

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০১
Share:

জয়া আহসান।

প্র: আপনার নাগাল পাওয়া তো ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে!

Advertisement

উ: হিমশিম খাচ্ছি। বাংলাদেশে মেয়েদের ফুটবল টুর্নামেন্টের আমি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। পরের প্রযোজনা ‘ফুড়ুৎ’-এরও প্রি-প্রোডাকশন চলছে। জানি না কলকাতায় কতটা গরম (বাংলাদেশ থেকে ফোনে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন)। এখানে যা পরিস্থিতি, শুট করা খুব চাপের।

প্র: কলকাতায় তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুঁই...

Advertisement

উ: তা হলে একই অবস্থা। গরম না কমলে শুট করছি না (হাসি)!

প্র: এটা কি জানেন, আপনার কারণে কলকাতার অনেক শিল্পীর মাথা গরম হয়ে রয়েছে...

উ: এ বাবা! তা কেন?

প্র: আপনি এখানে পরপর ছবির কাজ পাচ্ছেন। এতে অনেক অভিনেত্রীরই সমস্যা হচ্ছে।

উ: দেখুন জয়া আহসানকে যেমন এই ইন্ডাস্ট্রির দরকার, তেমন অন্য অভিনেত্রীদেরকেও দরকার। কেউ কারও জায়গা কেড়ে নিতে পারে না। আবার কেউ কারও পরিপূরক নয়। আমি তো কোয়েল বা নুসরতকে দেখে অবাক হয়ে যাই। ওরা যে ভাবে পারফর্ম করে, আমি তো পারি না।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্র: টলিউডে আরবান ছবির অনেক অভিনেত্রীর মনে হয়, আপনার চরিত্রগুলো তাঁরাও করতে পারতেন।

উ: এমনও তো হতে পারে, আমাকে দেখার পরে কোনও পরিচালকের মনে হল, এর জন্য একটা চরিত্র ভাবা যেতে পারে। কৌশিকদা (গঙ্গোপাধ্যায়) ‘বিসর্জন’ ভেবেছেন। আমি হয়তো কাউকে ইন্সপায়ার করেছি। খুব বেশি কাজ তো করি না। আমার মতে, ইন্ডাস্ট্রিতে সকলেরই কাজের সুযোগ আছে।

প্র: সামনে ‘কণ্ঠ’ মুক্তি পাচ্ছে। স্পিচ থেরাপিস্টের চরিত্রের জন্য কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

উ: আমার করা বাকি ছবির চেয়ে ‘কণ্ঠ’ আলাদা। সম্পর্কের টানাপড়েনের গল্প তো অনেক করলাম। ‘কণ্ঠ’ ভীষণ ইন্সপায়ারিং একটা ছবি। ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পও বলে। স্পিচ থেরাপিস্টের চরিত্রের জন্য ওয়র্কশপ করেছি। তা ছাড়া শিবুদা (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতাদি (রায়) তো ছিলেনই।

প্র: আপনার জীবনে কোনও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প রয়েছে?

উ: আমার কেন, সকলের জীবনেই রয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে, সেখান থেকে আমাকে ঘুরে দাঁড়াতেই হতো। ক্রাইসিসে পড়ে আমরা লাইনচ্যুত হয়ে যাই। কেউ স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে, কেউ এলোমেলো সম্পর্ক তৈরি করে, কেউ আত্মহত্যা করে... এমন সময়ে একমাত্র কাজই পারে মানুষকে বাঁচাতে। আমিও সেই রাস্তাই নিয়েছিলাম। কাজকে আঁকড়ে ধরেছিলাম। ওটাই আমার প্রার্থনার জায়গা, বাঁচার রসদ।

প্র: আপনার বাংলার সঙ্গে কলকাতার বাংলার ডায়লেক্টে তফাত আছে। এটা কি কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে?

উ: প্রথমে করত। সেই জড়তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছি। এই শহরের সঙ্গে আত্মীয়তা তৈরি হয়েছে। এখানে এলে আপনাদের মতো করে কথা বলি। আবার বাংলাদেশে ওখানকার মতো।

প্র: এখানে যে ছবিগুলো করেছেন, তার মধ্যে কোনটা সবচেয়ে কাছের?

উ: ‘বিসর্জন’, ‘এক যে ছিল রাজা’, ‘কণ্ঠ’ আর আমার প্রথম ছবি ‘আবর্ত’। ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীর ‘ভালবাসার শহর’ও খুব পছন্দের।

প্র: শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করে ফেলেছেন। কী উপলব্ধি?

উ: তিন জনেই খুব সংবেদনশীল মানুষ। মাস আর ক্লাসকে কী করে মেলাতে হয় শিবুদা-নন্দিতাদি দেখিয়ে দিয়েছেন। কৌশিকদা খুব অর্গানাইজ়ড। আর সৃজিত তো কাজ পাগল। মাঝে মধ্যে ভাবি, উনি এত কাজ কী ভাবে করেন!

প্র: প্রথম সারির তিন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে ফেলেছেন। এর পরেও বলবেন আপনাকে কারও হিংসে হবে না!

উ: এই তিন জনের মধ্যে আরও একটা মিল রয়েছে। ছবির জন্য যাকে প্রয়োজন, এঁরা তাকেই নেবেন। এমনিতে আমি শত সাধলেও নেবেন না। যেমন সৃজিত, ছবিতে যাকে দরকার, তাকে নেওয়ার জন্য সব কিছু করতে পারেন। যেখানে নেওয়ার নয়, কিছুতেই নেবেন না। আমি পা ধরে সাধলেও নেবেন না! এটা তিন জনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

প্র: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনাকে নিয়ে অনেক চর্চা চলে। এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল?

উ: কেউ সামনাসামনি বলেনি। (একটু থেমে) আসলে এগুলো শুনলে আমার লজ্জা লাগে। নিজেকে হীন মনে হয়। কেউ সামনে বললে ঝাড় দিতাম। বলতাম, ‘কও কী?’ আর খুব ঝাড় দিতাম।

প্র: তখন নিজের ভাষাই বেরিয়ে আসত বলুন?

উ: একদম। নিজের ভাষায় আচ্ছা করে দু’কথা শুনিয়ে দিতাম (হাসি)!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন