Jeetu Kamal

Jeetu Kamal: হুবহু সত্যজিৎ হতে দাঁতের পাটিতেও বদল এনেছে জিতু, সে এক রক্তারক্তি কাণ্ড: নবনীতা

ড্রিল মেশিন দিয়ে ঘষে ঘষে ফাঁক করা হয়েছে অভিনেতার দাঁত। একটু করে ড্রিল মেশিন চলেছে। মাড়ি কেটে রক্ত পড়েছে গলগলিয়ে। জিতু পাশের বেসিনে উঠে গিয়ে এক বার করে জমে থাকা রক্ত ফেলেছেন। আবার এসে বসেছেন নিজের আসনে। সব দেখে ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা অভিনেতার স্ত্রীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২২ ১৪:৩০
Share:

সত্যজিৎ হতে চেষ্টার ত্রুটি ছিল না জিতুর।

বাহ্যিক বদল তো ছিলই। সে সব রূপসজ্জা শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডুর হাতযশ। তাঁর প্রস্থেটিক রূপটানের গুণে গালে ব্রণর দাগ। গায়ের রঙ বদলে শ্যামলা। চিবুকে বড় আঁচিল। এ সবের পাশাপাশি অন্তরেও ধীরে ধীরে সত্যজিৎ রায় হয়ে উঠতে হয়েছে জিতু কমলকে। আনন্দবাজার অনলাইনকে জিতুর অভিনেত্রী স্ত্রী নবনীতা জানিয়েছেন, শুধু মাত্র চরিত্রের খাতিরে চিকিৎসকের সাহায্যে নিয়ে শারীরিক পরিবর্তনও ঘটিয়েছেন অভিনেতা। সত্যজিৎ এবং জিতুর দাতেঁর পাটি আলাদা। সেখানেও সাদৃশ্য এনেছেন তিনি।

কী ভাবে কী করেছিলেন জিতু? নবনীতার কথায়, ‘‘তখন জুলাই কি অগস্ট। জিতুই সত্যজিৎ হবেন, সদ্য ঠিক হয়েছে। দু’জনের চেহারায় কী করে মিল আনা যায়, সেই আলোচনাও চলছে। জিতু পরিচালকের ঝলক, সাক্ষাৎকার দেখছে। তখনই মনে হয়েছে, পরিচালকের সঙ্গে দাঁতের পাটিতে একটুও মিল নেই ওর! সত্যজিতের দাঁতে অনেকটাই ফাঁক। জিতুর দাঁতের পাটিতে তুলনায় বেশ কম ফাঁক। একই সঙ্গে একটু উঁচু নিচু।’’ এ কথা জিতুকেও বলেন কয়েক জন। অভিনেতা কাউকে কোনও উত্তর দেননি। বাড়িতেও কিচ্ছু জানাননি। চুপচাপ চলে গিয়েছিলেন দাঁতের চিকিৎসকের কাছে।

সেখান থেকে ভিডিয়ো তুলে পাঠিয়েছেন নবনীতাকে। অভিনেত্রী সেই ভিডিয়ো দেখতে দেখতে শিউরে উঠেছেন। তাঁর নিজের আক্কেল দাঁত তোলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই সময় তাঁকে মাড়িতে ইনজেকশন নিতে হয়েছিল। সেই রকম ইনজেকশন জিতুকে নিতে হয়েছে কয়েকটি। মাড়িতে এবং ঠোঁটে। তার পর ড্রিল মেশিন দিয়ে ঘষে ঘষে ফাঁক করা হয়েছে অভিনেতার দাঁত। একটু করে ড্রিল মেশিন চলেছে। মাড়ি কেটে রক্ত পড়েছে গলগলিয়ে। জিতু পাশের বেসিনে উঠে গিয়ে এক বার করে জমে থাকা রক্ত ফেলেছেন। আবার এসে বসেছেন নিজের আসনে। সব দেখে ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা অভিনেতার স্ত্রীর।

Advertisement

জিতুর দাঁত-কাহিনি শুনিয়েছেন স্ত্রী নবনীতা।

এ ভাবে বেশ কয়েক বার গিয়ে অবশেষে দাঁতের পাটির দিক থেকেও অবিকল সত্যজিৎ হয়ে উঠেছেন এই প্রজন্মের অভিনেতা। নবনীতার কথায়, ‘‘জিতু তখন আকাশ আট চ্যানেলে ‘হয়তো তোমারই জন্য’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছে। দাঁতে অস্ত্রোপচারের কারণে গালের এক পাশ ফোলা। কথাও বলতে পারছে না। বেশ কিছু দিন শ্যুটে যেতে পারেনি। অনীক দত্তের ছবির প্রশিক্ষণেও অংশ নিতে পারেনি।’’ তার পর বরফ সেঁক দিতে দিতে ধীরে ধীরে ফোলা, ব্যথা সব কমেছে। ড্রিলিং মেশিনের আওয়াজ, দাঁতের গুঁড়োর গন্ধ অনেক দিন সঙ্গী ছিল জিতুর।

দাঁতের পাটির পরিবর্তনের হাত ধরে আরও অনেক বদল এসেছে জিতুর জীবনে। পর্দার ‘অপরাজিত রায়’ শক্ত খাবার আর খেতে পারেন না। পাঁঠার মাংসের হাড় চিবোনোর সুখ তাঁর জীবনে অতীত! লেবু রস করে খেতে হয়। যাতে দাঁতের ফাঁকে কোনও ভাবে আঁশ না আটকে যায়। মুরগির মাংসও নরম করে রান্না হচ্ছে তাঁর জন্য। ডাঁসা পেয়ারায় কামড় বসানো এ জীবনে আর হবে না। খাওয়া দাওয়ায় এত কড়াকড়ি কেন? নবনীতা জানিয়েছেন, ড্রিল মেশিনের দাপটে মাড়ি কমজোরি। এ দিকে নীচ থেকে ক্যাপ বসানো হয়েছে দাঁতে। শক্ত খাবার খেলে সেই ক্যাপ মাড়িতে কেটে বসবে। রক্তপাত অবশ্যম্ভাবী। তাই এত বিধিনিষেধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন