পরান বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়রা সিনেমার সম্পদ। তাঁদের অনেক উন্নত পরিসর প্রাপ্য। কিন্তু এ বার তাঁদের প্রতিভা ও পরিশ্রম অপাত্রে দান হয়ে গিয়েছে। কারণ এ তো সিনেমা হয়নি, হয়েছে বিজয়া সম্মিলনীতে পাড়ার মঞ্চে অনুষ্ঠিত নাটক!
এমন গল্প চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বরাবরই প্রিয়। মেসবাড়িকে কেন্দ্র করে হিট কমেডি বাংলা ছবিকে অনেক বার সমৃদ্ধ করেছে। তা ছাড়া পাওয়া গিয়েছিল একঝাঁক উৎসাহী তরুণ শিল্পীকে। সব চেষ্টা ফিকে করে দিয়েছে ছবির ক্যামেরা ও আলোর কাজের চেয়েও নিষ্প্রভ চিত্রনাট্য।
প্রথম দৃশ্যেই আসল চমক দেখিয়ে দিলে যাবতীয় নাটক ওখানেই শেষ হয়ে যায়। কাহিনিতে শব্দের জাগলিং বা রসিকতাগুলো বেশির ভাগই স্থূল রুচির। তাদের দর্শকের সঙ্গে পরিচয় করাতে তো কত নতুন কায়দা ব্যবহার করছেন পরিচালকরা। গোটা প্রথমার্ধ জুড়ে শামুকের গতিতে বোঝানো হল চরিত্ররা কে, কী করে, কেন করে, কী চায়। দর্শক তখনই ঢুলছিলেন। তার উপর সকলের জানা কথাগুলোকে চরিত্রদের মুখ দিয়ে বলিয়ে লেবু কচলে তেতো করে ফেলা হল।
কখগঘ
পরিচালনা: কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়
অভিনয়: পরান, কৌশিক,
অপরাজিতা, সমদর্শী
৩/১০
চা-বিক্রেতা মাধবদার (পরান বন্দ্যোপাধ্যায়) মেসবাড়িতে থাকে সিনেমায় নামতে চাওয়া পাঁচ-ছ’জন তরুণ। ছবির প্রযোজক পেতে তারা একটি অপহরণের ষড়যন্ত্র করে। তা নিয়েই এগোতে থাকে গল্প। লেখক-পরিচালকের ‘ননসেন্স কমেডি’র বোধ কিন্তু বেশ ভাল। শব্দের খেল, জীবনের গাম্ভীর্য এ সব নাটক মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে তিনি নির্মল হাস্যরসে মন দিলে মন জিতে নিতেন। বিস্কুট-অন্ত প্রাণ ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে অপহরণ দৃশ্য অসাধারণ! মহিলাকে গা ভর্তি গয়না-সহ স্বয়ং মা লক্ষ্মী সাজিয়ে ট্রাকে চড়িয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ দৃশ্য যত বার দেখব, তত বার হাসব। এমন করেই হাসতে চাই। গোটা ছবি জুড়েই এই হাসির রেশ ধরে রাখতে পারলে তা হয়তো উপভোগ্য হতো।