ধৈর্যের পরীক্ষা নিলেন কপিল

তবে ছবির ভাল দিকগুলো আবিষ্কার করতে তিন ঘণ্টার ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হলে, তার চেয়ে খারাপ কিছু নেই। ছবির দৈর্ঘ্যকে আরও অসহনীয় করে তুলেছে কয়েকটি অনাবশ্যক গান। ছবির গতি মন্থর নয়।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share:

ছবির একটি দৃশ্য

ফিরঙ্গি

Advertisement

পরিচালনা: রাজীব ধিংরা

অভিনয়: কপিল শর্মা,
ঈশিতা দত্ত, এডওয়ার্ড সনেনব্লিক

Advertisement

৩/১০

জীবনে কয়েকটি বিষয়ের প্রলোভন জয় করা খুব কঠিন। তার মধ্যে অন্যতম বড় পরদায় নায়ক বা নায়িকা হওয়া। সেই সুপ্ত ইচ্ছের ভার না বাড়লে কি ‘ফিরঙ্গি’-র মতো ছবি প্রযোজনা করতেন কপিল শর্মা? কালজয়ী ছবি ‘লগান’-এর ধাঁচে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতের একটি কল্পরাজ্যের নায়ক হতেন? প্রশ্নগুলোর মধ্যেই উত্তর কিন্তু অন্তর্নিহিত।

এই ছবির খারাপ কী কী, তা বোঝা কঠিন নয়। তবে ছবির ভাল দিকগুলো আবিষ্কার করতে তিন ঘণ্টার ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হলে, তার চেয়ে খারাপ কিছু নেই। ছবির দৈর্ঘ্যকে আরও অসহনীয় করে তুলেছে কয়েকটি অনাবশ্যক গান। ছবির গতি মন্থর নয়। তবে ওয়েব সিরিজ আর শর্ট ফিল্মের যুগে আগাগোড়া অনুমানযোগ্য একটি ছবিকে তিন ঘণ্টা টানার মানে কী, বোধগম্য হল না।

পুলিশের চাকরির পরীক্ষায় ফেল করা মঙ্গা (কপিল) বন্ধুর বিয়েতে গিয়ে প্রেমে পড়ে সারগির (ঈশিতা)। বেআইনি মদের কারখানা বানানোর জন্য সারগির গ্রামের উপর নজর ইংরেজ অফিসার ড্যানিয়েলসের (এডওয়ার্ড সনেনব্লিক)। গ্রাম দখলের অভিপ্রায়ে নারীবিলাসী, দাম্ভিক রাজা ইন্দ্রবীর সিংহের সঙ্গে ড্যানিয়েলসের(কুমুদ মিশ্র)‌ ষড়যন্ত্রের শিকার হয় মঙ্গা। তবে নায়ক বলে কথা! জাল কেটে সে তো বেরোবেই। এবং বাকিদেরও ঘটনাচক্রে উদ্ধার করবে।

দেশভক্তি ও প্রেম দিয়ে বানানো এই সস্তা ককটেলের আকর্ষণ কপিল। আবার বিকর্ষণের কারণও বটে। অভিনয়ের কথা নাহয় বাদই দিলাম। তবে গোটা ছবি জুড়ে কপিলের এক রকম অভিব্যক্তি দেখতে দেখতে কখনও ঘুম পায়। কখনও বা জাগে বিরক্তি। কপিলের যোগ্য সঙ্গত করেছেন ঈশিতা। লজ্জায় ঘোমটার আড়ালে মুখ লুকোনো ছাড়া তাঁর বিশেষ কিছু করণীয় ছিল না। গ্রামবাসীদের চরিত্রে রাজেশ শর্মা, জামিল খান, অঞ্জন শ্রীবাস্তব মন্দ নয়। তবে চরিত্রগুলোয় কোনও নতুনত্ব নেই। পরিচালক ও গল্পকার রাজীব ধিংরার ‘ফিরঙ্গি’তে যদি কেউ নজর কাড়েন, তবে তিনি এডওয়ার্ড। তাঁর হিন্দি উচ্চারণ যদিও হাস্যকর। অন্য দিকে, রাজার মেয়ে শ্যামলী (মণিকা গিল) বিদেশিদের সঙ্গে হিন্দিতে আর ভারতীয়দের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলে!

ছবিটির বড় সমস্যা, এটি পিরিয়ড ড্রামা নয়। আবার কমেডি দেখেও হাসি পায় না। ইংরেজের গুলি থেকে মঙ্গাকে বাঁচাতে ছবির শেষে গাঁধীজির আগমন ঘটে। মঙ্গাকে তাঁর প্রশ্ন, ‘ইংরেজ হটাতে গ্রামবাসীরা কেউ হিংসার আশ্রয় নেয়নি তো?’ মঙ্গা বলে, ‘না, তবে চালাকির সাহায্য নিয়েছি।’ তিন ঘণ্টা সময় নষ্টের জন্য দর্শকের মনে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, তার অল্প-স্বল্প বহিঃপ্রকাশ কিন্তু হিংসাত্মক হলেও হতেও পারে। গাঁধীজি সেটা মেনে নেবেন তো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন