‘বেশ রাত তখন, দুটো শেয়াল আমাদের সামনে!’

তার সঙ্গে সেলফি তোলার হিড়িক পড়েছে। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে পোস্ত শেয়ার করল তার ভাল লাগার কিছু মুহূর্ততার সঙ্গে সেলফি তোলার হিড়িক পড়েছে। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে পোস্ত শেয়ার করল তার ভাল লাগার কিছু মুহূর্ত

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০০:৪৪
Share:

অর্ঘ্য

তার ভাল নামে আর তাকে কেউ ডাকছেই না! বাঙালি সিনে-প্রেমী থেকে শুরু করে স্কুলের বন্ধুরা— সকলের মুখে মুখে মুখে ঘুরছে একটাই নাম। পোস্ত আর পোস্ত।

Advertisement

শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় পরিচালিত ‘পোস্ত’র মুখ্য চরিত্রে অর্ঘ্য বসু রায়ের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে প্রথমেই উঠল এই ‘অভিযোগ’। না, ঠিক অভিযোগের সুরে কথাটা সে বলেনি। তবে এ কথা না মেনেও উপায় নেই, অর্ঘ্যর বড় পরিচয় এখন সে অতি আদরের পোস্ত। ইতিমধ্যেই পরিবারের সঙ্গে দু’বার ছবিটা দেখা হয়ে গিয়েছে পুঁচকে অভিনেতার। নিজেকে প্রথম বার বড় পরদায় দেখে কেমন লাগল? ঠিক বড়দের মতো করে পোস্ত থুরি অর্ঘ্যর উত্তর, ‘‘সেটা তো তোমরা দেখে বলবে।’’

পাঠভবনের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র অর্ঘ্য। বাবা-মা আর দাদুকে নিয়ে তার ছোট পরিবার। পড়াশোনার ফাঁকে সুইমিং আর ড্রয়িং শেখে। পছন্দের কার্টুন ‘মোটু পাতলু’। ছবির মধ্যে ফেভারিট অ্যাডভেঞ্চার টাইপ। যেমন, ‘চাঁদের পাহাড়’,‘দ্য জাঙ্গল বুক’। তবে অর্ঘ্যর মন-প্রাণ জুড়ে রয়েছে শুধু খেলা আর খেলা। ছবিতেও যেমন পোস্ত ছুটোছুটি করে খেলে বেড়ায়, অর্ঘ্যও ঠিক তেমনই। ছবিতে ওই খেলার দৃশ্যগুলি শ্যুট করতেই তার সবচেয়ে বেশি মজা হয়েছিল।

Advertisement

যিশু আর সৌমিত্রর সঙ্গে।

খেলার মধ্যে ক্রিকেটটা কিন্তু বেশ ভালই বোঝে অর্ঘ্য। আইপিএলও বেশ ফলো করছে। তবে ওর ভোট কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের দিকে নয়। অর্ঘ্য চায় এ বারের আইপিএল জিতুক রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট। আসলে ওই দলেই তো আছে ওর ফেভারিট মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ‘‘ধোনি খুব ভাল স্টাম্প আউট করে,’’ সুতীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ খুদে ফ্যানের।

শ্যুটিংয়ের সূত্রেই প্রথম বার শান্তিনিকেতনে যাওয়া অর্ঘ্যর। কোন জায়গাটা সবচেয়ে বেশি পছন্দ হল? একদম চটপট উত্তর, ‘‘সোনাঝুরির জঙ্গল।’’ সেই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হোটেলে যাওয়ার পথে তাদের গাড়ির সামনে এক বার এসে পড়েছিল দু’টো শেয়াল। অর্ঘ্যর কথায়, ‘‘আমরা গাড়ি করে যাচ্ছিলাম। বেশ রাত তখন। আর সামনে দু’টো শেয়াল। মা-ই আমাকে দেখিয়ে দিল।’’ ভয় পাওনি? ‘‘না না, একটুও না। এমনিতে হোটেল থেকে প্রায়ই শেয়ালের ডাক শোনা যেত। আর শেয়ালের খুব বুদ্ধি,’’ মিষ্টি হেসে জবাব দিল খুদে শিল্পী।

আরও পড়ুন:প্রকৃত অভিভাবক কে, জানে পোস্ত

শিবপ্রসাদের কথায়, ‘‘অর্ঘ্যর স্বতঃস্ফূর্ত মেজাজটাই আমার খুব ভাল লেগেছিল। শিশুশিল্পী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটা দেখা হয় যে, কে কত ভাল অনুকরণ করতে পারছে।’’ তবে অর্ঘ্য নাকি শ্যুটিংয়ের আগে জানতই না যে, পোস্ত-র চরিত্রে ওকে বাছা হয়ে গিয়েছে। প্রথম বার ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে ভয় করেনি? শিশুশিল্পীর তৎক্ষণাৎ জবাব, ‘‘না না, আমার তো সবটা মুখস্থই থাকত।’’

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত, লিলি চক্রবর্তী থেকে মিমি চক্রবর্তী ছবির সব কলাকুশলীর সঙ্গেই অর্ঘ্যর এই ক’দিনে দারুণ বন্ধুত্ব হয়েছে। কখনও-সখনও কি বকাঝকা খেতে হয়েছে? অর্ঘ্যর উত্তর, ‘‘আমাকে সকলে খুব আদর করত। বকাঝকার বালাই নেই।’’

‘পোস্ত’-র পুরো শ্যুটিংটাই হয়েছিল গত বছর শীতের ছুটিতে। তাই অর্ঘ্যর পড়াশোনায় তেমন ক্ষতি হয়নি। এখন আবার পড়েছে গরমের ছুটি। এ বার কোথাও ঘুরতে যাবে না? ‘‘দাদুর তো অনেক বয়স। দাদু অসুস্থও। তাই বাড়িতেই থাকব,’’ জবাব দিল বুঝদার অর্ঘ্য।

কে বলবে, এই একরত্তি এখনও দশের কোটাই পেরোয়নি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন