বিনিতা চট্টোপাধ্যায় বদ্রীনাথ বিশালের ‘দুলহনিয়া’! ছবি: সংগৃহীত।
সালটা ২০১৬। স্টার জলসায় রমরমিয়ে চলছে ধারাবাহিক ‘মেম বউ’। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় বিনীতা চট্টোপাধ্যায়। বাঙালি পরিবারে বিদেশি বৌ। সোনালি পরচুলা পরে ভাঙা বাংলায় ‘ক্যারল ব্রাউন’ চরিত্রে মাতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার পর আর পর্দায় নেই!
কাট টু ২০২৫। ৯ বছরের লম্বা বিরতিতে দু’বার বিয়ে হয়ে গিয়েছে তাঁর! দুটো বিয়েই ধর্মস্থানে! বছর শেষে নভেম্বরে তৃতীয় বিয়ে বিনীতার। আনন্দবাজার ডট কমকে হাসতে হাসতে জানিয়েছেন, সেটিও ধর্মস্থানেই হবে। বিড়লা মন্দিরে।
বিশাল-বিনীতার গায়ে হলুদ। ছবি: সংগৃহীত।
এত বার বিয়ে কেন বিনীতার? ‘মেম বউ’ পর্দায় আর ফিরবেন না? প্রশ্ন ছিল তাঁর কাছে।
নিজের বিয়ে প্রসঙ্গে অভিনেত্রী রোমাঞ্চকর এক কাহিনি শুনিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ধারাবাহিকে সাফল্যের পরেও যে ধরনের চরিত্র পাচ্ছিলাম সেটা আমার পছন্দ হচ্ছিল না। আমি তখন সাংবাদিকতা করছিলাম। যে সংস্থার হয়ে কাজ শুরু করি সেখানেই ছিলেন মুখ্য আধিকারিক বদ্রীনাথ বিশাল। বিশালের আমাকে খুবই পছন্দ। সেটা ওর আচরণে বুঝতাম। হাজার হোক, আমি তো মেয়ে! আমি এত সহজে রাজি হই কী করে!” কয়েক বছর ‘অ্যাসিড টেস্ট’-এর পর বিনীতা আর বিশাল সহকর্মীদের নিয়ে ২০২২ সালে ঘুরতে গিয়েছিলেন কেদারনাথে। বিনীতার জন্মদিন ১৯ মে। ফেরার পথে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সকলে ছন্নছাড়া। এক দল কেদারনাথ থেকে বেরিয়ে যেতে পেরেছিলেন। আটকে গেলেন বিশাল-বিনীতা! কোনও মতে তাঁরা গৌরীকুণ্ডের নীচে সোনপ্রয়াগে পৌঁছলেন। বৃষ্টি সেই সময় থেমেছে।
মেয়ে-জামাইয়ের গায়েহলুদ দিচ্ছেন মেয়ের মা। ছবি: সংগৃহীত।
গাইডকে সঙ্গী করে সেখানকার এক স্থানীয় মন্দিরে পৌঁছন উভয়ে। গাইড জানান, এই মন্দিরে সারা আলি খান-সুশান্ত সিংহ রাজপুত ‘কেদারনাথ’ ছবির শুটিং করেছিলেন। তাঁরা যখন ওই মন্দিরকে পটভূমিকায় রেখে ব্লগ করতে ব্যস্ত তখনই মন্দিরের পুরোহিত জানান, ওই মন্দিরে নারায়ণ বা বিষ্ণু নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিবাহ দিয়েছিলেন হর-গৌরীর। সেই বিয়ের পবিত্র যজ্ঞের আগুন পুরাকাল থেকে আজও জ্বলছে।
সেখানে পুজোপাঠের পর হঠাৎ করে পুরোহিত জানান, বিশাল-বিনীতা ঈশ্বরের নির্দেশেই একত্রে এই পবিত্র স্থানে। তাঁরা কি বিয়ে করতে চান?
বৃন্দাবনে বিয়ের সাজে বিনীতা। ছবি: সংগৃহীত।
বিনীতা সঙ্গে সঙ্গে রাজি। বিশাল জানান, তাঁরও আপত্তি নেই। ওই মন্দিরে প্রথম তাঁদের ধর্মীয় বিবাহ। দ্বিতীয় বার বিনীতা বিশালকেই বিয়ে করলেন দিন কয়েক আগে, বৃন্দাবনের লোটাস টেম্পলে। দেবকীনন্দন ঠাকুরের বিখ্যাত রাধাকৃষ্ণের মন্দিরে। এ বারেও পুরোহিতের নির্দেশে এখানে তাঁদের কণ্ঠীবদল হয়। তার আগে গায়ে হলুদ হয় যমুনা তীরে কেশি ঘাটে। সকালে কণ্ঠীবদল, সন্ধ্যায় বৈদিক বিয়ে। বিনীতার কথায়, “আমরা যেন ঘোরের মধ্যে ছিলাম। দু’বার বিয়ের পরে উপলব্ধি করতে পারলাম, জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে— এই বক্তব্য কতখানি সত্যি।” তৃতীয় বিয়ের সকালে শাড়ি, বিকেলে রানিরঙা লেহঙ্গায় সাজবেন ‘মেম বউ’।
আর অভিনয়? এ বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ অভিনেত্রী। তবে খবর, নেটফ্লিক্সের একটি বড় বাজেটের হিন্দি সিরিজ়ে নায়িকা হয়ে ফিরছেন নাকি তিনি। বিপরীতে বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা।