সেটে মীর ও কপিল
রাত ন’টা।
মুম্বইয়ের ফিল্ম সিটির চোখ ঝলসানো সেট থেকে তখন বাইরের লোককে সরিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। যাঁরা বসে আছেন, তাঁদের ফোন ফ্লাইট মোডে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছে ডিরেক্টরিয়াল টিম।
এ সব দেখে, হলুদ পাগড়ি পরা নভজ্যোৎ সিংহ সিধু টাই সামলে নিজের চেয়ারে গিয়ে বসলেন।
লাইটস। ক্যামেরা। অ্যাকশন।
পরমুহূর্তেই শোয়ের থিম মিউজিক বাজাতে শুরু করল লাইভ ব্যান্ড। দর্শকদের তুমুল হাততালির মধ্যে ভারতের এক নম্বর কমেডি শো-য়ের হোস্ট কপিল শর্মা নাম ধরে ডাকলেন কলকাতার মীরকে।
চোখে চশমা, হাতে কম্পাস আর পিতলের টেলিস্কোপ। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের সেই চেনা কস্টিউমে শোতে ঢুকলেন টলিউডের মীর।
শুরু হল আড্ডা, হাসি-ঠাট্টা। টাইটানিকের পোজে নাচ, আর কত খুনসুটি। নিজের গলায় ‘দিল তো বচ্চা হ্যয় জি’ গানটাও অভিনেতা আলি আসগরের সঙ্গে গাইলেন ‘মীরাক্কেল’য়ের সঞ্চালক। দেখে মনে হচ্ছিল ওই মুহূর্তে যেন এক ধাক্কায় বাংলা ছবির প্রচারের ক্ষেত্রে একটা নতুন পৃথিবীতে পা দিল টলিউড।
কী করে?
জয় গঙ্গোপাধ্যায় প্রযোজিত ‘কলকাতায় কলম্বাস’ হয়ে উঠল প্রথম বাংলা ছবি যা জাতীয় স্তরের টিভি প্রোগ্রাম ‘দ্য কপিল শর্মা শো’য়ের সঙ্গে সফল ভাবে ‘ইন্টিগ্রেট’ করল।
বলিউডে অবশ্য আজকাল যে কোনও বড় ছবির ক্ষেত্রেই মুক্তির আগে সোনি চ্যানেলের ‘কপিল শর্মা শো’তে এসে, সেই ছবির তারকাদের দিয়ে প্রচার করানোটা এক ধরনের নিয়মে পরিণত হয়েছে।
এ বার টলিউডও সে পথে হাঁটল। আর সেই দৃশ্য চাক্ষুষ করার জন্য কলকাতা থেকে একমাত্র আনন্দplus-ই তখন হাজির ফিল্ম সিটিতে।
‘‘দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হল। কলকাতায় এই একই রকম ইন্টিগ্রেশন আমি ‘মীরাক্কেল’য়ে করি বাংলা ছবির ক্ষেত্রে। এখানে এটাও বলি, যে ভাবে কপিল শর্মার ইউনিট আমাদের ছবি নিয়ে ব্রিফিং নিল, যে পেশাদারি মেজাজে পুরো শো-টা ওরা কনডাক্ট করল — সেটা দেখে আমার দারুণ লেগেছে। আর আমি কিন্তু ওই ম়ঞ্চে ‘কলকাতায় কলম্বাস’য়ের লিড হিসেবে গিয়ে দাঁড়াইনি। আমি কপিলের সামনে আমাদের পুরো টালিগঞ্জের প্রতিনিধি ছিলাম,’’ বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বই এয়ারপোর্টে চা খেতে খেতে বলছিলেন মীর। যে-শোতে ঐশ্বর্যা, রণবীর, শাহরুখ, বিদ্যা বালনরা নিয়মিত আসেন, সেই শোতে বাংলা ছবি প্রোমোট করাটা শোয়ের সঞ্চালক কপিল শর্মার কাছেও বেশ অভিনব লেগেছে।
‘‘আমরা মুম্বইতে সব সময় শুনি কলকাতায় কী ভাল ভাল ছবি হচ্ছে। কিন্তু সেই ছবির ডিরেক্টর কী অভিনেতাদের সঙ্গে আমাদের দেখা হয় না। ‘কলকাতায় কলম্বাস’ যে এখানে এল, সেটা দেখে আমাদেরও খুব ভাল লেগেছে। আশা করব এর পর থেকে আরও অনেক বাংলা ছবি আমাদের শোয়ের সঙ্গে ‘ইন্টিগ্রেট’ করবে,’’শোয়ের শেষে বলছিলেন কপিল।
এখানে এটাও জানিয়ে রাখা যাক, ‘কলকাতায় কলম্বাস’ ছাড়াও সেই একই এপিসোডে তাঁদের ছবি ‘কহানি ২’য়ের প্রচার করলেন বিদ্যা বালন ও অর্জুন রামপাল। ৫০০ বছর আগে হঠাৎ করে আজকের ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা আবিষ্কার করে নিজেকে চিরস্মরণীয় আগেই করে ফেলেছিলেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস।
বাংলা ছবির প্রচারের ক্ষেত্রেও যে তিনি পথিকৃৎ হবেন, সেটা অবশ্য গোরেগাঁওয়ের ফিল্ম সিটিতে বুধবার রাতে না-থাকলে বোঝা যেত না।
আনাচে কানাচে
পেশায় ডাক্তার। নেশায় অভিনেতা ও ফোটোগ্রাফার। ইন্ডাস্ট্রি তাই ডা. কৌশিক ঘোষ-কে ডাকে ‘ডক’ বলে। তাঁর এক চিত্র প্রদর্শনীতে পাওলি-আবীর
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল