Entertainment News

মুভি রিভিউ: কাতুকুতু দিয়ে হাসাল ‘ফুকরে রিটার্নস’

ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে, ক্রমে প্রাপ্তমনস্ক হয়ে ওঠা বলিউডি ছবির দর্শকদের এক কথায় ধাক্কাই লাগবে যেন এ ছবি দেখে। বসে থাকার একমাত্র টান শুধু চার বছর আগের ‘ফুকরে’ ছবির সেই ‘অম্বরসরিয়া’ গান।

Advertisement

সুচন্দ্রা ঘটক

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৬:২১
Share:

কেমন হল ফুকরে রিটার্নস?

ফুকরে রিটার্নস

Advertisement

পরিচালনা: মৃগদীপ সিংহ লাম্বা

অভিনয়: বরুণ শর্মা, পুলকিত সম্রাট, মনোজ সিংহ, রিচা চড্ডা, আলি ফজল, প্রিয়া আনন্দ

Advertisement

হাসি পাচ্ছে না!

তাতে কী, কাতুকুতু তো দেওয়াই যায়। তার জন্য না হয় বোধ-বুদ্ধির বিসর্জন দিতেই হল।

প্রাচীন গ্রিসে সামাজিক যে সব কথা সোজাসাপ্টা ট্র্যাজেডি দিয়েও বোঝানো যেত না, তার জন্য হাতিয়ার করা হতো কমেডিকে। অর্থাৎ, আরও ভয়ঙ্কর সত্য বলত সেই ধারাটি। আর নিজেদের মতি-গতির অনুকরণ মঞ্চে দেখে হাসিতে ফেটে পড়ত সমাজ। এ সমাজেও তেমন হাসির উপাদান কম নেই। কিন্তু চারপাশের উপরে বুঝি ভরসা বেড়ে গিয়েছে ‘ফুকরে রিটার্নস’-এর গল্পকার এবং নির্দেশকের। ফলে হাসির রসদ খুঁজতে আজগুবি পথ বাছলেন তাঁরা।

ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে, ক্রমে প্রাপ্তমনস্ক হয়ে ওঠা বলিউডি ছবির দর্শকদের এক কথায় ধাক্কাই লাগবে যেন এ ছবি দেখে। বসে থাকার একমাত্র টান শুধু চার বছর আগের ‘ফুকরে’ ছবির সেই ‘অম্বরসরিয়া’ গান। মাঝেমধ্যেই ব্র্যাকগ্রাউন্ডে বেজে যা মনে করায় এ ছবি তারই সিকুয়েল, যে ছবিটা মনে রাখা যায় সেই একটা গানের জন্যই।

শেষ পর্যন্ত সেই টানের জাদুও ভাঙে। কারণ, আর একটি অম্বরসরিয়াও যে হয় না। দ্বিতীয় বার ফিরে এসে ফুকরেরা যে সব গান শোনায়, তা ছবির হ্যাপি এন্ডিয়েং আসতে আসতে মিলিয়ে যায় সিনেমা হলের দেওয়াল, সিটের মাঝেই। শুধু রেখে যায় একগুচ্ছ দাবি। যার প্রথম হল, রিচা চড্ডার মতো এত দাপুটে অভিনেত্রীকে আরও একটু ব্যবহার করা হল না কেন? বাস্তব হিসেব-নিকেশ, বোধ-বুদ্ধি সব বাদ দিয়েও যদি সিনেমা হলে ঢুকতে হয়, তবে কি অন্তত দর্শন-সুখ উপভোগ করা যেত না?দিল্লির ডন ভোলি পঞ্জাবন না হয় আরও কয়েকটা বেশি সিনেই থাকতেন!দ্বিতীয়ত, ভোলি পঞ্জাবন ছাড়া আর দুই নায়িকার উপস্থিতি কি আদৌ প্রয়োজনীয় ছিল? গল্পটা কি একটু সহজ এবং প্রাণবন্ত হতো না ওই দুই চরিত্র বাদ পড়লে?

‘ফুকরে রিটার্নস’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।

থাকে আরও এক প্রশ্ন। ‘ডেল্লি বেলি’-র ঢঙে কিছু অতি ব্যবহৃত স্ল্যাং-ই কি এখন দর্শককে হাসানোর একমাত্র উপায় বলে মনে করছে বি-টাউন?‘ডেল্লি বেলি’তে যে সব গালিগালাজ জমিয়ে তুলেছিল ছবি, এ ক্ষেত্রে সে সব কথাই বড্ড কানে লাগে যেন। চোখ বন্ধ করে শুনলে মনে হতেই পারেই প্রাইমারি স্কুলে হঠাৎ দু’টো খারাপ কথা শিখে, জোর করে যত্রতত্র ব্যবহার করছে কেউ।

আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: এ বার থেকে ফিল্মেও আপনাকে দেখার অপেক্ষায় থাকব কপিল

তবে মন্দেরও অনেক ভাল আছে। তা মনে করিয়ে দেন চুচা রূপী বরুণ শর্মা। গোয়ার জায়গায় গোয়েয়া বলে কাতুকুতু দিয়ে হাসানোর মতো দৃশ্যেও তিনি স্মার্ট। এমন বাস্তবাদী সিনেমা-থিয়েটারের যুগে রুপোলি পর্দায় আজগুবি কিছু কথা বলে দর্শকের মন কাড়তে যথেষ্ট মনোবল লাগে। তা যে তাঁর আছে, সওয়া দু’ঘণ্টা ধরে বারাবার তা প্রমাণ করেন দিয়েছেন বরুণ। এক কথায় গোটা ছবিটা ধরে রাখেন তিনিই। তবে চার বছর আগের ‘ফুকরে’-তে যেই সারল্য ছিল, তা বুঝি জোর করে হাসাতে গিয়ে বর্জন করতে হয়েছে বরুণ শর্মা, পুলকিত সম্রাট,মনজোত সিংহ, আলি ফজল এবং বাকিদেরও। কোথাও যেন হাসির খোরাক কম পড়ার চিন্তা ছিল অভিনেতাদের মনেও।

আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: ‘চিত্রকর’ দেখতে বসে বই পড়ছি বা বক্তৃতা শুনছি মনে হল

কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না।আর যে দিকেই খামতি থাক না কেন, ‘ফুকরে রিটার্নস’-কে একটি স্বতন্ত্র ছবি হিসেবে মর্যাদা দিতে যথেষ্টই চেষ্টা ছিল নির্দেশক মৃগদীপ সিংহ লাম্বার তরফে। এই ছবির শুরুতেই তিনি সুকৌশলে বলে দেন আগের ছবির গল্প কত দূর গড়িয়েছিল। ফলে যাঁরা ‘ফুকরে’ দেখেননি, তাঁদেরও ‘ফুকরে রিটার্নস’-এর গল্প বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। তবে অভিনেতাদের আচরণে সেই জড়তা কেন? তাঁরাও কি বুঝছিলেন, এই গল্প অনেক আগে থেকেই ধরা পড়ে যায় সম্ভাব্য সব মোড়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন