চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর জন্মদিনে শতাব্দী রায়। ছবি: সংগৃহীত।
শাহরুখ খান আর চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর জন্মদিন এক তারিখে! ভাবা যায়? ওঁকে আমরা দীপকদা বলে ডাকি। আমাদের সময়ের অন্যতম সুদর্শন নায়ক। লম্বা, ছিপছিপে শরীর। প্রচণ্ড স্পষ্টবক্তা। কে কী ভাবল, কোনও দিন পরোয়া করেননি। ওঁর নিজস্ব জগৎ রয়েছে। নিজের ভাবনা রয়েছে। সেই ভাবনা থেকে যেটা ভাল বুঝবেন, সেটাই বলবেন। দীপকদা সকলের কথায় সায় দিয়ে চলার মানুষ নন।
এই অভ্যাস ওঁর আগেও ছিল, এখনও রয়ে গিয়েছে। আমার সঙ্গে ওঁর কিন্তু ভাল বোঝাপড়া ছিল। একে সুদর্শন তায় শিক্ষিত! কথা বলতে ভাল লাগত। নানা বিষয়ে কথা বলে আরাম পেতাম। ওঁর একাধিক ছবির নায়িকা তো বটেই, দীপকদার পরিচালনাতেও একাধিক বার কাজ করেছি। আমার প্রযোজনাতেও দীপকদা অনেক কাজ করেছেন। এ রকম ঘটলে বিনোদন দুনিয়ায় কী হয়, জানেনই তো। নায়ক-নায়িকার ভাল বোঝাপড়া থাকলে তাঁদের নিয়ে গুঞ্জন ছড়ায়। আমাদের নিয়েও চর্চা হত, কানে আসত মাঝেমধ্যে। অনেকেই ভাবতেন, আমায় বেশি পছন্দ করেন চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। আমরা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করতাম।
আমাদের আড্ডায় মাঝেমধ্যে বৌদি রত্নাবলী চক্রবর্তীও উপস্থিত থাকতেন। তিনি কোনও কথা বলতেন না। কেবল চুপচাপ হাসতেন। দীপকদার সঙ্গে আমার প্রচণ্ড ঝগড়া তো বৌদিই মিটিয়ে দিয়েছিলেন।
আমি সদ্য প্রযোজনা সংস্থা খুলেছি। দীপকদা আমার ছবির নায়ক। কাজ করতে করতে হঠাৎ আমাদের ঝগড়া বেধে গেল। উনি প্রযোজক শতাব্দীর ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। আমি নায়ক দীপকদার কিছু জিনিস মেনে নিতে পারছি না। ঝগড়া শেষে এমন মারাত্মক আকার নিল যে, এক পা এগোলেও অশান্তি, পিছোলেও। এতে কাজের উপরে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছিল। সেটা বুঝতে পেরে দীপকদা ওঁর পারিশ্রমিক ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ঝগড়া মিটল না। আমাদের দীর্ঘ দিন কথা বন্ধ। একাধিক কাজও ছেড়ে দিয়েছি।
শেষে সমস্যা মেটাতে ময়দানে রত্নাবলী বৌদি আর বিনোদন দুনিয়ার আমার কিছু বন্ধু। ওঁরা সবাই মিলে বোঝালেন, আমরা যা করছি, ঠিক করছি না। ঠান্ডা মাথায় আলোচনার পর ঝগড়া মিটল। তার পর কত বার দেখা হয়েছে। আমরা আবার আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিয়েছি। কিন্তু ভুলেও ওই ‘খারাপ সময়’-এর কথা উচ্চারণ করি না।