নন্দিতা-নওয়াজ়ের যুগলবন্দি

ছবির প্রচারে শহরে পরিচালক-অভিনেতা জুটি। কলকাতাতেই হল তাঁদের ছবির প্রথম স্ক্রিনিং মান্টোর বাড়ির লোকের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন নন্দিতা, ‘‘ওঁর মেয়েদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তখন অবশ্য ওঁরা খুব ছোট ছিলেন। তবে এক জন বৌদি আছেন, তিনি আমাকে সাফিয়ার (মান্টোর স্ত্রী) গল্প করেন। কারণ সাফিয়ার গল্প তো কোথাও পাওয়া যায় না...’’

Advertisement

অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২৭
Share:

নওয়াজ়উদ্দিন-নন্দিতা।ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক

কলকাতায় মান্টো। নন্দিতা দাস এবং‌ নওয়াজ়উদ্দিন সিদ্দিকির ‘মান্টো’। সাদাত হাসান মান্টোর যে বায়োপিক নিয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পেয়েছিলেন পরিচালক নন্দিতা এব‌ং তাঁর অভিনেতা নওয়াজ়। কলকাতায় বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের আগে সাক্ষাৎকারে বসে সেই জয়ের প্রশান্তি দেখা গেল দু’জনেরই মুখের হাসিতে।

Advertisement

তবে কঠিন পর্ব ছিল। মান্টোর বিরাট জীবনের ঘটনাবলি কয়েক ঘণ্টার ছবিতে কতটা আর তুলে ধরা যায়? তাই চিত্রনাট্যে একটা টাইমলাইন বেঁধে নিয়েছিলেন পরিচালক। নন্দিতার কথায়, ‘‘১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত সময়টা মান্টোর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আর ওই সময়টায় মান্টো বম্বেতে ছিলেন। তার পর দেশভাগ হলে তাঁকে লাহৌরে চলে যেতে হয়। উনি কিন্তু জানতেন না যে, এ রকম কিছু একটা হবে। আর বম্বেকে ভালবাসতেন প্রাণ দিয়ে। লোকে যখন দেশভাগের আগে ওঁকে জিজ্ঞেস করত, উনি পাকিস্তান যাবেন কি না, উত্তরে বলতেন, বম্বে যদি পাকিস্তানে চলে যায়, তা হলে আমিও পিছন পিছন যেতে পারি!’’

কিন্তু ওইটুকু ক্যানভাসে দেশভাগ এবং মান্টোর জীবনে তার রেশ তুলে ধরা গেল? নন্দিতার কথায়, ‘‘ওইটুকু অংশ তুলে ধরাটা কঠিন ছিল। তবে আমি সেটা করতে পেরেছি কারণ, এডিটিং করতে আমার ভাল লাগে। বিশাল একটা কাহিনি থেকে কেটেছেঁটে মানুষকে প্রভাবিত করবে এ রকম ছোট একটা অংশ আমার ছবিতে রেখেছি। তার সঙ্গে ভাবতে হয়েছে, যাঁরা মান্টো সম্পর্কে কিছুই জানেন না, তাঁদের কাছে কেমন করে বিষয়টার উপস্থাপনা করা যাবে।’’

Advertisement

মান্টোর বাড়ির লোকের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন নন্দিতা, ‘‘ওঁর মেয়েদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তখন অবশ্য ওঁরা খুব ছোট ছিলেন। তবে এক জন বৌদি আছেন, তিনি আমাকে সাফিয়ার (মান্টোর স্ত্রী) গল্প করেন। কারণ সাফিয়ার গল্প তো কোথাও পাওয়া যায় না...’’

মান্টোর প্রভাব এড়াতে পারেননি নওয়াজ়ও। বললেন, ‘‘মান্টোর ব্যক্তিত্ব, চিন্তা এমনই যে, একটু কিছু ওঁর সম্পর্কে জানতে বা পড়তে পারলেই মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে বাধ্য। একটা সাহস পাওয়া যায় মান্টোর লেখায়। মানুষ মনে মনে অনেক কিছু ভাবতে পারে। কিন্তু ভাবনাকে অন্য মানুষদের সামনে প্রকাশ করতে পারার সাহসটা দরকারি। সেটা মান্টো জোগাতে পারেন। আমিও এখন স্পষ্ট ভাবে অনেক কথা বলতে পারি।’’ এই ফিরতি পাওনা কি ছবির পারিশ্রমিক হিসেবে এক টাকা নেওয়াকে ছাপিয়ে যেতে পেরেছে? উত্তরে সম্মতিসূচক হাসেন নওয়াজ়। যোগ দেন নন্দিতাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন