Sayantika Banerjee

Narada: দিদিকে না আটকে কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিশ্রমটা টিকা আনার কাজে লাগাতে পারত

আমি আইনকানুন নিয়ে কখনওই কোনও কথা বলিনি। আজও বলব না। কে ঠিক, কে ভুল, সেই নিয়ে বিতর্ক করার মতো মানসিক অবস্থাও নেই।

Advertisement

সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ২০:৪২
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার সকাল থেকে যা হল, তাকে ভাষায় কী ভাবে ব্যক্ত করব জানি না। বিনা নোটিসে একটি রাজনৈতিক দলের ৩ স্তম্ভকে গ্রেফতার করা হল। এই অতিমারির সময় যাঁরা দিনরাত এক করে কাজ করছিলেন, তাঁদের আটকে দেওয়া হল। এই মুহূর্তে এমন ঘটনাকে বর্ণনা করতে শুধু একটা শব্দই মাথায় আসছে। তা হল ‘অমানবিক’।

Advertisement

আমি আইনকানুন নিয়ে কখনওই কোনও কথা বলিনি। আজও বলব না। কে ঠিক, কে ভুল, সেই নিয়ে তর্ক করার মতো মানসিক অবস্থাও নেই।

আমি ভেঙে পড়েছি। চারদিকে মৃত্যুর হাহাকার দেখে। মানুষের বাঁচার প্রবল ইচ্ছা দেখেও ক্রমশ তাঁদের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখছি। আমার বাবাও কোভিডে আক্রান্ত। প্রত্যেক মুহূর্তে কেমন একটা ভয় বাসা বাঁধছে মনে। মানুষ যখন শ্বাস নেওয়ার জন্য লড়াই করছে, হাসপাতালে একটা শয্যার জন্য হা হুতাশ করছে, সেই অবস্থায় কেন্দ্রীয় দল নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে ব্যস্ত!

Advertisement

কোন মানসিকতা থেকে এগুলো করছে তারা?

টেলিভিশনে দেখলাম, আমাদের দলের সমর্থকরা ভিড় জমিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। সেই দৃশ্য দেখে আমি শিউরে উঠেছি। এমনটা তো প্রত্যাশিত ছিল না এই সময়। লকডাউনে প্রত্যেকটা মানুষ নিজের বাড়িতে সুরক্ষিত থাকবেন, সেটাই তো চেয়েছিলাম আমরা। নেটমাধ্যমে এবং আরও অন্যান্য ভাবে আমরা তাঁদের বিক্ষোভ থামিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার বার্তা দিয়েছি। কিন্তু অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় সরকারও তাদের বাহিনী নামিয়েছে। সেটাও কি তাদের উচিত হয়েছে? সেই উত্তর কে দেবে?

কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপকে অনেকেই প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন। অনেকেই বলছেন, বাংলায় নিজেদের সরকার গড়তে না পেরেই রাজ্য সরকারকে হেনস্থা করছে তারা। কিন্তু এ কথা যেন আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের বাইরে? আমাদের রাজ্যের প্রতি কি তাদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই? নিজেকে অনেক বার প্রশ্নগুলো করেও কোনও উত্তর খুঁজে পাইনি। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিরোধী দলের যা আচরণ দেখেছি, তা মেনে নিতে পারিনি। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে শত্রুতার জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পর তাদের এই পদক্ষেপে খুব একটা বেশি অবাক হচ্ছি না। তবে চরম এক হতাশা গ্রাস করছে আমাকে। রাজনীতিতে সদ্য পা রেখেছি। যাঁদের কাছ থেকে কাজ শিখব ভেবেছিলাম তাঁদের সঙ্গেই এ রকম করা হল।

অনেক ভাবনা ভিড় করে আসছে মনে। নেটমাধ্যমে এই ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষেও অনেক যুক্তি তর্ক দেখলাম। তবে একজন ষাটোর্ধ্ব মহিলাকে আটকাতে, তাঁকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করতে ওদের পরিশ্রম দেখে নারী হিসেবে গর্ব অনুভব করছি। এত পরিশ্রম যদি টিকা আনা এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজে লাগাত, তা হলে এত দিনে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন